Advertisement
E-Paper

বকুল-জাকিরের সঙ্গীদেরও ধরার চেষ্টা

কালিয়াচকের নওদা যদুপুরের দুই ত্রাস ধৃত বকুল ও জাকির শেখকে জেরা করে এ বার তাঁদের ঘনিষ্ঠদের নামের তালিকা তৈরি করছে পুলিশ। আর সেই তালিকা ধরেই নওদা যদুপুরের ফেরারদের খোঁজ শুরু করে দিয়েছে মালদহ জেলা বিশেষ পুলিশ বাহিনী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৯

কালিয়াচকের নওদা যদুপুরের দুই ত্রাস ধৃত বকুল ও জাকির শেখকে জেরা করে এ বার তাঁদের ঘনিষ্ঠদের নামের তালিকা তৈরি করছে পুলিশ। আর সেই তালিকা ধরেই নওদা যদুপুরের ফেরারদের খোঁজ শুরু করে দিয়েছে মালদহ জেলা বিশেষ পুলিশ বাহিনী। গত রবিবার কলকাতার পূর্ব যাদবপুর এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে নওদা যদুপুরের কুখ্যাত দুষ্কৃতী, ২৮টি মামলায় অভিযুক্ত বকুল শেখকে। আর বকুলকে গ্রেফতারের দু’দিনের মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে মালদহ থানায় আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন ওই এলাকার অপর এক ত্রাস জাকির শেখ। বুধবার ধৃত জাকিরকে হেফাজতে চেয়ে জেলা আদালতে পেশ করে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, জাকির মালদহ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে খুন, বোমাবাজি, অপহরণ, অস্ত্র মজুত সহ ২৩টি ধারায় মামলা রয়েছে। আরও মামলা রয়েছে কি না, তা খোঁজ করা হচ্ছে। দু’জনকেই জেরা করে এলাকার আরও কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচক থানার নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিমনগরের বাসিন্দা জাকির শেখ। তিনি নওদা যদুপুরের তৃণমূলের গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য। জাকির পেশায় ছিলেন শ্রমিক সরবরাহকারী। প্রথম দিকে তিনি কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। রাজ্যের পালা বদলের পরে ২০১২ সালে তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। তারপর ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে কাশিমনগর গ্রাম থেকে জয়ী হন জাকির শেখ। জাকিরের তিন ছেলে এবং চার মেয়ে রয়েছে।

২০১৪ সালে তাঁর বড়ো ছেলে ইসমাইল শেখকে গুলি করে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল বকুল শেখ। এই নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিক বার বোমা গুলি নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। সেই সংঘর্ষে দুই গোষ্ঠীরই অনেকে মারা গিয়েছে। দুই গোষ্ঠীর সেই বিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল নওদা যদুপুর এলাকা। তাঁদের বিবাদে রোজকার হয়ে উঠেছিল খুন পাল্টা খুনের মতো ঘটনা। এমনকী, আক্রান্ত হয়েছে পুলিশও। এলাকার দুই গোষ্ঠীর রাশ টানতে তৎপর হয় পুলিশ। মালদহ সহ অন্য জেলা থেকে পুলিশ ফোর্স নিয়ে বিশেষ বাহিনী গড়ে তোলা হয়। বিশেষ বাহিনীই গ্রেফতার করে বকুল শেখকে। তিনি এখন পুলিশের হেফাজতে।

জাকিরকে ১৪ দিনের হেফাজতে চেয়ে আদালতে পেশ করে পুলিশ। তবে বিচারক জাকিরকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, জাকিরের বিরুদ্ধে সাতটি খুন, পুলিশের উপরে হামলা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, হুমকি দিয়ে তোলাবাজি, বোমাবাজি, অপহরণ, ছিনতাই, বেআইনি অস্ত্র মজুত, জাতীয় সড়ক অবরোধ সহ একাধিক মামলা রয়েছে। জাকিরের আইনজীবী সুদীপ্ত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আইনের প্রতি আস্থা রেখেই আমার মক্কেল পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। অথচ পুলিশ তাঁকে বিভিন্ন মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়েছে।’’ দলের পঞ্চায়েত সদস্য গ্রেফতারের ঘটনায় তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে। এখানে আমাদের বলার কিছু নেই।’’

ওই দুই ত্রাসের কাছে প্রচুর অস্ত্র মজুত রয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, বকুল ও জাকিরকে জেরা অস্ত্র ভাণ্ডারের হদিশ মিলবে। সেই সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠদেরও নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বকুল শেখের দলে ওয়ান্টেড রয়েছে তাঁরই ভাই আজমল শেখ, সার্জেন শেখ। এই সার্জেন ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রেফতার হয়। তবে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায়। তবে গত জুন মাসে কিশোর খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত রয়েছে সার্জেন। একই সঙ্গে জাকিরের ভাই সাকিব শেখ ও ইব্রাহিম শেখ ওয়ান্টেড রয়েছে। এখন এই ওয়ান্টেডদের খোঁজেই তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘প্রত্যেককেই গ্রেফতার করা হবে। আর বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টাও চলছে।’’

Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy