ভিড় সামলাতে হিমশিম খেল পুলিশও। ছবি: অমিত মোহান্ত।
বালুরঘাট শহরের প্রশাসনিক ভবন লাগোয়া থানা মোড়। তিন রাস্তার একটা আত্রেয়ী সেতু দিয়ে সোজা চকভৃগু অঞ্চল পেরিয়ে চলে গিয়েছে রেল স্টেশন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা থেকেই বাস মিনিবাস ম্যাক্সি ট্রেকার ভুটভুটি নিয়ে দলে দলে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা এসে ভিড় জমাতে শুরু করে বালুরঘাট শহরে। দুপুর ৩টের মধ্যে গোটা শহর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
তত ক্ষণে মুখোস পড়ে কুশমন্ডির মোখাশিল্পীদের ধামসা মাদলের সঙ্গে নাচ এবং বিভিন্ন লোকশিল্পীদের গানের তালে তৃণমূলের বিশাল মিছিল রাস্তা জুড়ে। বাসস্ট্যান্ড থেকে পুরসভা ভবন, ডানলপ মোড় থেকে চকভবানির গোটা অফিসপাড়ার রাস্তা জনসমুদ্র। আটকে পড়েন বহু মানুষ।
এ দিন সকাল থেকে নিজের দফতরে বসে ছিলেন জেলাশাসক সঞ্জয় বসু। ভিড়ে আটকে পড়বেন আশঙ্কা করে বাংলোতে না গিয়ে এ দিন অফিস ঘরেই দুপুরের খাবার সেরে নেন তিনি। ততক্ষণে উর্দি পড়ে অফিস থেকে রাস্তায় নেমে এসেছেন পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল সোয়া ৫টায় বালুরঘাট থেকে গৌড় এক্সপ্রেস ছাড়ার সময় সূচি। যাঁরা ট্রেন ধরতে যাবেন রাস্তা ওই একটিই। ইতিমধ্যে অ্যাম্বুল্যান্সও রাস্তার ভিড়ে আটকে পড়ে। প্রশাসন এবং দলীয় নেতৃত্বের তাই নিয়ে চাপা উত্তেজনা ছিল।
সব আশঙ্কাকে দূরে সরিয়ে অবশ্য সভায় আসা মানুষরাই যানজট সমস্যার সমাধান করে দেন।
এ দিন শহরের দিশারির বড় মাঠকেই পার্কিং এর জন্য বেছে নেয় তৃণমূল। বুথস্তর থেকে ব্লকস্তরের সভায় যোগ দিতে আসা লোকজন গাড়ি অটো ভুটভুটি থেকে নেমে বিপ্লব মিত্র, শঙ্কর চক্রবর্তী, অর্পিতা ঘোষের নেতৃত্বে মিছিল করে শহর পরিক্রমা শুরু করেন। মিছিল যত এগিয়েছে, পেছনের ভিড়ের সঙ্গে তাল রেখে সামনের জনতা ছড়িয়ে পড়েছে শহরের ছোট রাস্তা ও গলিতে। মিছিলের সমস্ত লোকের সভাস্থলে জায়গা হবে না ভেবে কয়েকটি জায়েন্ট স্ক্রিন বসানো হয়েছিল। অনেকের কথায়, ‘‘এত মানুষ একসঙ্গে আগে দেখিনি। থানা মোড়ে ঢুকতে পারবো না, জেনে সরে এসেছি।’’ তাতেই হাফ ছেড়েছে প্রশাসন।
সাংসদ অর্পিতা ঘোষ বক্তৃতা দিতে উঠে বলেই ফেলেন, ‘‘এত লোক দু’ঘন্টা ধরে আমাদের সঙ্গে হাঁটলেন। কলকাতাতে এমন দেখা যায়।’’
সমাবেশের শেষপর্বে বক্তৃতা দিতে উঠে বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘কেন্দ্রের মোদি সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত যে ভুল, তা দুর্ভোগে পড়া সাধারণ মানুষ এ দিনের সভায় দলে দলে যোগ দিয়ে প্রতিবাদ করে দেখিয়ে দিলেন।’’ বিপ্লববাবুর দাবি, এ জেলায় প্রয়োজনের তুলনায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মাত্র ১০ শতাংশ টাকা সরবরাহ করছে। জেলায় স্টেট ব্যাঙ্কের ৩৭টি এটিএম থেকে এখনও মানুষ প্রয়োজনীয় টাকা তুলতে পারছেন না। এ নিয়ে আগামীতেও বিক্ষোভ সমাবেশ হবে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy