জোরকদমে চলছে রাসমেলার কাজ। নিজস্ব চিত্র
কারও ভরসা পূর্বসূরীদের রেসিপি। কেউ আবার রায়গঞ্জ, মালদহ থেকে আনছেন কারিগর। কোনও ব্যবসায়ী ভরসা রাখছেন স্থানীয় কারিগরদের উপরেই। সবমিলিয়ে এ বার রাসমেলায় জমে উঠেছে জিলিপির লড়াই।
রাসমেলার উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন দু’শো বছরের প্রাচীন রাসমেলার অন্যতম আকর্ষণ জিলিপি। ফি বছর শুধু এর টানেই ভিড় করেন দর্শনার্থীরা। জিলিপি কিনতে পড়ে যায় লম্বা লাইন। এই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এ বার মেলার মাঠে জিলিপি ব্যবসায়ীদের জন্য আলাদা এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ।
জিলিপি তৈরির ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি অনেকটা এগিয়েছে। ক্রেতাদের মন কাড়তে সাধারণ জিলিপির স্বাদ, গুণগত মান বাড়ানোর ব্যাপারে যেমন জোর দেওয়া হচ্ছে, তেমনি নতুন রেসিপি নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। ৩ নভেম্বর রাসমেলা শুরু হবে। উদ্বোধনের দিন যত এগিয়ে আসছে ততটাই উন্মাদনা বাড়ছে বাসিন্দাদের মধ্যে। ওই তালিকায় রয়েছেন মন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনের পদস্থ কর্তারাও। ডায়াবেটিসের জন্য বছরের অন্য সময় জিলিপি খান না উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কিন্তু রাসমেলায় সেই কড়া নিয়মে কিছুটা ছাড় রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, “ছোটবেলায় মেলায় গিয়ে রোজ জিলিপি খেতাম। মেলায় অন্তত একদিন তো খাব।” জিলিপির সুখ্যাতি শুনে খাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহাও।
মেলায় ভেটাগুড়ি, পুন্ডিবাড়ি, বাবুরহাট, নীলকুঠি, দেওয়ানহাট-সহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা দোকান করবেন। ক্রেতাদের মন কাড়তে চেষ্টার খামতি রাখতে চান না কেউ। ভেটাগুড়ির জিলিপি বিক্রেতা অসিত নন্দীর পূর্বসূরীদের বাড়ি ছিল অধুনা বাংলাদেশের পাবনায়। সেখানেই তাঁর ঠাকুর্দা বিধুভূষণ নন্দীর ব্যবসা ছিল। পরে তিনি কোচবিহারে এসে রাসমেলায় জিলিপির দোকান করতেন। বংশপরম্পরায় সেই পেশার সঙ্গেই যুক্ত অসিতবাবুরা। এবারেও পাবনায় চালু করা তাঁর ঠাকুর্দার রেসিপিতেই জিলিপি তৈরি হবে বলে জানান তিনি।
বাবুরহাটের এক ব্যবসায়ী গণেশ মোদক রায়গঞ্জ থেকে কারিগর এনেছেন। মালদহের কয়েকজনের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন কিছু স্থানীয় ব্যবসায়ী। নতুন স্বাদের সুগার ফ্রি জিলিপিও থাকবে বলে জানান গণেশবাবু।
রসনা তৃপ্তিতে খরচা কেমন হবে? ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গত বছর ১০০ টাকা প্রতি কেজি দরে জিলিপি বিক্রি হয়েছে। এবার চিনি, চাল, ময়দার দাম দাম বেড়েছে। তার প্রভাব খানিকটা পড়বে। ১২০ টাকা কেজি দরে জিলিপি বিক্রির কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানান তাঁরা। অবশ্য সুগার ফ্রির দাম সাধারণ জিলিপির তুলনায় কিছুটা বেশিই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy