E-Paper

পাহাড়ে ‘রাজ্য’কে সরিয়ে জিটিএ-বোর্ড বসানোর প্রস্তুতি

রবিবার সকালে শিলিগুড়ির একটি সংস্থা থেকে তৈরি জিটিএ-র নামে লেখা নতুন সরকারি বোর্ডের একাংশ পাহাড়ে পৌঁছে গিয়েছে।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ০৮:৩৭

—ফাইল চিত্র।

দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে ‘রাজ্য সরকারের জমি’ লেখা সব বোর্ড খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। সেখানে বোর্ড ঝুলবে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্টেশন’-এর (জিটিএ)। রাজ্যের কোনও জেলায় এমন ভাবে সরকারি বোর্ড খুলে অন্য কোনও সংস্থার বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়ার নজির নেই। পাহাড়ে জিটিএ থাকার কারণেই তা করতে হচ্ছে, প্রশাসনিক সূত্রের খবর।

রবিবার সকালে শিলিগুড়ির একটি সংস্থা থেকে তৈরি জিটিএ-র নামে লেখা নতুন সরকারি বোর্ডের একাংশ পাহাড়ে পৌঁছে গিয়েছে। আজ, সোমবার থেকে দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক, কার্শিয়াঙের বিভিন্ন এলাকায় ঝুলবে জিটিএ-র বোর্ড। জিটিএ প্রধান অনীত থাপা এ নিয়ে বিশেষ কিছু বললেননি। তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, ‘‘পাহাড়ের জমি নিয়ে যা বলার, বলেছি। জিটিএ-র মতামত বা সমন্বয় ছাড়া জমি নিয়ে কোনও কিছু হবে না।’’ তবে জিটিএ-র এক অন্যতম সচিব জানান, পাহাড় জুড়ে রাজ্য সরকারের খাস জমি বলে সরকারি বোর্ড ঝুলেছে এতদিন, যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ তা আপাতত থেমেছে। জিটিএ আইন অনুসারে ভূমি সংস্কার দফতর হস্তান্তরিত বিষয়। তাই বোর্ড থাকলে তা জিটিএ-রই থাকবে।

দার্জিলিঙের জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল বা কালিম্পঙের জেলাশাসক বালসুব্রহ্মণ্যন টি জমি সংক্রান্ত বিতর্ক নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে রাজ্য প্রশাসনের উত্তরবঙ্গের এক শীর্ষস্তরের অফিসার জানান, নবান্নের নির্দেশে এক মাত্র পাহাড় থেকে বোর্ড খোলা হচ্ছে। সেখানে জমি বা ভূমির অধিকারের বিষয়টি ‘স্পর্শকাতর’। ১৯৮৬ সাল থেকে জমির অধিকার বা আলাদা রাজ্য নিয়ে বহুবার পাহাড় রক্তক্ষয়ী আন্দোলন দেখেছে। নতুন করে সমস্যা যাতে না হয়, সে জন্য রাজ্য সরকার জিটিএ-র সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যা মেটাচ্ছে।

পাহাড়ের নেতারাও মনে করছেন, দেড় বছর পর রাজ্যের বিধানসভা ভোটে। পাহাড়ে তিনটি পুরসভার ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে নতুন করে পাহাড়ে জমির অধিকার বা জমির মালিকানা নিয়ে সমস্যা তৈরি হলে তা আখেরে শাসক দলেরই ক্ষতি। মিরিক পুরসভায় জমির পাট্টার কথা বলে প্রথমবার তৃণমূল পাহাড়ে কোথাও ক্ষমতায় এসেছিল। সেখানে চা বাগানের বিরাট অংশের পাট্টা দেওয়ার কথা সরকার ঘোষণা করে দিয়েছে। সেই জায়গায় সরকারি জমি বলে পাহাড়ের গ্রাম বা বিভিন্ন এলাকার জমির দখল নিয়ে প্রশাসন বোর্ড ঝুলিয়ে দিলে পাহাড়বাসীর মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হবে। অনীত সেই জায়গা থেকে জেলাশাসকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তিনি সব জানান। শেষে, দু’পক্ষের বৈঠক রফাসূত্র মেলে। সেখানেই রাজ্যের বোর্ড সরিয়ে জিটিএ-র বোর্ড ঝোলানোর বিষয়টি ঠিক হয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Darjeeling GTA West Bengal Kalimpong

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy