ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি পান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তখন তিনি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতেই তাঁর এই পড়াশোনা বলে নিজেই জানিয়েছিলেন। তবে নিয়ম মেনে অন্যান্য গবেষণার কাজের মতো তিনি কোর্স ওয়ার্ক, নিয়মিত ক্লাস করেননি বলে অভিযোগ উঠেছিল সেই সময়। এ নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, প্রাক্তন বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। এ দিন পার্থকে ইডি গ্রেফতারের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহলে ফের পুরনো এই অভিযোগ সামনে উঠে এসেছে। তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে।
ওই গবেষণার কাজে তাঁর গাইড অর্থনীতির অধ্যাপক অনিল ভুঁইমালিকে পরবর্তীকালে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা হয়। পিএইচডি পেতে পড়াশোনার কাজে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায় পার্থকে সাহায্য করেছিলেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের দাবি। তিনি এখন দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। অনিল ভুঁইমালি এ দিন ফোন ধরেননি। সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় এসব নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্করের দাবি, দুটি বিষয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পিএইডি ডিগ্রি বিতর্কিত। অভিযোগ, তিনি কখনও কোর্সওয়ার্ক করেননি। তা না করেই নিয়মবহির্ভূত ভাবে গবেষণার কাজে নথিভুক্ত হয়েছেন। বিধায়ক বলেন, ‘‘গবেষণা করতে যে গাইডলাইন রয়েছে তার কোনটাই না মেনে অনিল ভুঁইমালির তত্ত্বাবধানে সেই কাজ হয়েছে। পরে তাঁকে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করে গুরুদক্ষিণা দেওয়া হয়। ওঁর গবেষণাপত্রের বেশিরভাগ অংশে কোথা থেকে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছেন, সে সব কিছু নিয়মমাফিক উল্লেখ করেননি। যা নিয়মবহির্ভূত বলে অভিযোগও ওঠে। ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় তা করেছেন। এসব তদন্ত করা উচিত।’’
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্থ’র গবেষণার বিষয় ছিল ‘ট্রান্সফরমেশন অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমি টু নলেজ ইকোনমি উইথ রেফারেন্স টু হিউম্যান রিসার্চ ম্যানেজমেন্ট।’ এ ভাবে ডিগ্রি নেওয়ার বিষয়টিকে মেনে নিতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদেরও অনেকে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যের নামও এসএসসি কাণ্ডে জড়িয়েছে। আদালতের নির্দেশি যে আর কে বাগের কমিটি তদন্ত করেছে তাদের করা অভিযুক্তদের তালিকায় উপাচার্যের নাম রয়েছে। শিলিগুড়ির বিধায়ক বলেন, ‘‘এসব কারণে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে মনে করি এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা গভীর সঙ্কটে।’’ প্রাক্তন বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘গবেষণা করতে ক্লাসে যতটা উপস্থিত হওয়ার নিয়ম তা পার্থ চট্টোপাধ্যায় মানেননি। এসব কিছুর তদন্ত হওয়া দরকার। যে তথ্য প্রমাণ রয়েছে এ দিন অপেক্ষা করার কিছু ছিল না। সরকারি প্রশ্রয়েই এসব হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy