উদ্ধার হওয়া সরকারি জমিতে টাঙানো বোর্ড খুলে তা নতুন করে দখলের চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় হঠাৎ করে সরকারি উদ্ধার করা জমির পাট্টার নথি দেখিয়ে মালিকানা দাবি করা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। মাটিগাড়া ভূমি সংস্কার দফতরে আবেদনও জমা পড়েছে। শাসক দল এবং দফতরের একাংশের যোগসাজসের অভিযোগ করছে বিজেপি।
সরকারি সূত্রের খবর, মহকুমার চম্পাসারির কড়াইবাড়িতে দ্বিতীয়বার সরকারি জমি দখল উচ্ছেদ হয়। সে সময় মালিকানার দাবিতে কেউই সেখানে যাননি। এখন জমির পাট্টার নথি দেখিয়ে ভূমি সংস্কার দফতরের দারস্থ হয়েছেন একাধিক আবেদনকারী। কয়েক মাসের মধ্যে তাঁদের কাছে কিভাবে পাট্টা এল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অভিযোগ, কেউ কেউ ২৫-৩০ বছরের পুরানো পাট্টার নথিও দেখাচ্ছেন।দার্জিলিং জেলার ভূমি সংস্কার আধিকারিক রাম তামাং এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘পাট্টাগুলি পরীক্ষা করা হবে। সরকারি জমি দখলের চেষ্টা হলে আইনিব্যবস্থা হবে।’’
সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের তরফে কড়াইবাড়িতে আট বিঘার বেশি সরকারি জমি উদ্ধার হয়েছিল। সেখানে জরিপ করে আবর্জনা প্রক্রিয়াকরণ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ভূমি সংস্কার দফতর তার নকশাও তৈরি করে দিয়েছে। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে মাপজোঁক করতে গেলে পাট্টার নথি দেখিয়ে জমি তাদের দাবি তুলছেন কয়েকজন। অভিযোগ, এদের একাংশের বিরুদ্ধেই দখলের অভিযোগ উঠেছিল।
স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ বলেন, "ভূমিহীনের নামে মাফিয়ারা বহিরাগতদের ঢোকাচ্ছে। ঘুরপথে পাট্টা তৈরি করে দিচ্ছে শাসক নেতাদের একাংশ। আমরা আন্দোলনে নামব।" তবে অভিযোগ নিয়ে দার্জিলিং জেলা (সমতল) তৃণমূলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারি পাট্টা, ঘর তৈরির প্রকল্প রয়েছে। সেখানে বেআইনি কিছু থাকলেপ্রশাসন দেখবে।’’
শুধু মাটিগাড়ার চম্পাসারি নয় পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের শিসাবাড়ি এবং নি্মাইজোতে সরকারি জমিতে হঠাৎ করে পাট্টার নথি নিয়ে হাজির হওয়ায় ঘটনা ঘটছে। নকশালবাড়ি, মণিরাম, হাতিঘিসা গ্রাম পঞ্চায়েতে পাট্টা নিয়ে বিতর্ক সামনে আসছে। খড়িবাড়িতেও শাসক মদতে আবাস যোজনার ঘরের সুবিধা দিতে জমির পাট্টা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)