Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

অনুপ্রবেশে ধৃত দু’জনের ছবি পাঠানো হল সিআইডিকে

রানাঘাট-কাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে সন্দেহে অনুপ্রবেশে ধৃত দুই বাংলাদেশি যুবকের ছবি সিআইডিকে পাঠাল পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে রায়গঞ্জের ভাতুন পঞ্চায়েতের নয়াটোলা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ মাজেদ ও মুকুল আলম। তাদের দুজনেরই বয়স ২৪।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৫
Share: Save:

রানাঘাট-কাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে সন্দেহে অনুপ্রবেশে ধৃত দুই বাংলাদেশি যুবকের ছবি সিআইডিকে পাঠাল পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে রায়গঞ্জের ভাতুন পঞ্চায়েতের নয়াটোলা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ মাজেদ ও মুকুল আলম। তাদের দুজনেরই বয়স ২৪।

মাজেদের বাড়ি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর খানার মিনাপুর এলাকায়। মুকুলের বাড়ি ওই থানারই জীবনপুর এলাকায়। এ দিন নয়াটোলা এলাকার বাসিন্দা মামুন রহমানের বাড়িতে দু’জন বাংলাদেশি আশ্রয় নিয়েছে বলে খবর পান রায়গঞ্জ থানার আইসি গৌতম চক্রবর্তী। এরপর ভাটোল পুলিশ ফাঁড়ির ওসি শ্যামল চন্দের নেতৃত্বে পুলিশ মামুনের বাড়ির অদূরে একটি ফাঁকা জায়গা থেকে মাজেদ ও মুকুলকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে মামুন ও তার পরিবারের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। রানাঘাটের গাংনাপুরে কনভেন্ট স্কুলের সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণ ও লুটপাটের ঘটনায় সিআইডির প্রকাশ করা সাত অভিযুক্তের দু’জনের ছবি ও স্কেচের সঙ্গে ধৃতদের মুখের মিল খুঁজে পান পুলিশ অফিসারেরা।

ধৃতরা রানাঘাট-কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে জেলা সিআইডির তরফে ধৃতদের ছবি তুলে ভবানীভবনে পাঠানো হয়। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত আসলেই রানাঘাট-কাণ্ডে ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে পুলিশ। পুলিশের দাবি, যে সাতজন অভিযুক্তের ছবি ও স্কেচ প্রকাশ করা হয়েছে, তার মধ্যে দু’নম্বরে থাকা এক অভিযুক্তের ছবির সঙ্গে মুকুল ও সাত নম্বরে থাকা এক অভিযুক্তের স্কেচের সঙ্গে মাজেদের মুখের মিল খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “সিআইডি ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছবি সংগ্রহ করেছে। আপাতত ধৃতদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনে মামলা দায়ের করে শনিবার রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সিআইডি যদি মনে ধৃতরা অন্য কোনও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, তাহলে তাঁরা সেইমতো ব্যবস্থা নেবে। ধৃতদের আশ্রয়কারী অভিযুক্ত যুবকের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।”

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে অবশ্য মাজেদ ও মুকুল দাবি করেছে, পঞ্জাবের লুধিয়ানায় দিনমজুরির কাজ করার জন্য প্রায় তিন মাস আগে তারা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলির ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের চোরাপথ দিয়ে এ দেশে ঢোকে, এরপর তারা বিহারের কিষানগঞ্জ স্টেশন থেকে একটি ট্রেনে চেপে লুধিয়ানায় যায়। সেখানে একটি ইটভাটায় তারা দিনমজুরির কাজ শুরু করে। ওই ইটভাটাতেই মামুনের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। কিছুদিন আগে লুধিয়ানায় একটানা বৃষ্টি হওয়ার জেরে ইটভাটাটি কিছুদিনের জন্য বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ। কর্মহীন হয়ে পড়ায় মাজেদ ও মামুন বাংলাদেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়। মামুনও বাড়ি ফেরার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন। সেইমতো গত মঙ্গলবার সকালে মাজেদ, মুকুল ও মামুন লুধিয়ানা থেকে গুয়াহাটিগামী ট্রেনে চেপে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ কিষানগঞ্জ স্টেশনে নামে। রাতে আশ্রয় দেওয়ার জন্য মামুন তাদের একটি ট্রাকে চাপিয়ে করণদিঘির নাগর এলাকায় নিয়ে আসেন। এরপর মামুন নাগর থেকে একটি ছোটগাড়িতে চাপিয়ে মাজেদ ও মুকুলকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। তবে ধৃতদের দাবি কতটা সত্যি তা নিয়ে সংশয়ে পুলিশ কর্তারা। কারণ, তারা পুলিশকে কোনও ট্রেনের টিকিট, লুধিয়ানার ওই ইটভাটার ঠিকানা ও ইটভাটার মালিকের ফোন নম্বর জানাতে পারেনি। ধৃতরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না বলেও পুলিশের কাছে দাবি করেছে। এ দিন রায়গঞ্জ থানার লকআপে দাঁড়িয়ে মাজেদ ও মুকুল দাবি করে, “আমরা রানাঘাট চিনি না। দিনমজুরির কাজ করতে এদেশে এসে ধরা পড়ে গেলাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE