Advertisement
E-Paper

বছরে একদিন পুজো পায় ‘সাহেব’ রোলার

প্রশাসনিক ভাবে জলপাইগুড়ি থেকে নিয়ন্ত্রিত হত অধুনা বাংলাদেশের রংপুর এলাকা। তখনই জলপাইগুড়িতে আনা হয়েছিল একটি স্টিম রোলারকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ১০:০০
প্রাচীন: বেদির উপর রাখা রয়েছে রোলারটি। নিজস্ব চিত্র

প্রাচীন: বেদির উপর রাখা রয়েছে রোলারটি। নিজস্ব চিত্র

তখন জলপাইগুড়ি অবিভক্ত বাংলার বিভাগীয় সদর। সেসময় প্রশাসনিক ভাবে জলপাইগুড়ি থেকে নিয়ন্ত্রিত হত অধুনা বাংলাদেশের রংপুর এলাকা। তখনই জলপাইগুড়িতে আনা হয়েছিল একটি স্টিম রোলারকে। দেখতে অবিকল রেল ইঞ্জিনের মতো দেখতে। বেলচা দিয়ে কয়লা দিতে হয়। হুইসেল ছেড়ে এগিয়ে রাস্তার পিচ সমান করে দিত ভারী চাকা দিয়ে। ইয়র্কশায়ারে তৈরি হয়েছিল এই স্টিম রোলার।

জলপাইগুড়ি এবং রংপুরের মাঝে এখন কাঁটাতারের বেড়া। টুকরো হতে হতে জলপাইগুড়ি এখন তিনটি জেলার বিভাগীয় সদর মাত্র, আয়তনেও কমেছে অনেকে। কিন্তু থেকে গিয়েছে সেই স্টিম রোলার। বেদি বাঁধিয়ে জলপাইগুড়ির জুবিলি পার্ক লাগোয়া পূর্ত দফতরের একটি অফিসে সাজিয়ে রাখা হয়েছে রোলারটিকে। প্রতি বছর বিশ্বকর্মা পুজোর দিন পুজো করা হয় এটিকে।

কর্মীরা ভালবেসে ডাকেন ‘স্টিম সাহেব’। পূর্ত দফতরের জলপাইগুড়ি সাব ডিভিশনের অফিস রয়েছে তিস্তা নদীর পাড়ে জুবিলি পার্কের পাশে। অফিসের সামনে একফালি উঠোনে একটি বেদি। তার ওপরে বসানো সবুজ রঙের মোটা চাকার একটি রোলার। যার সামনে একটি চিমনি। পূর্ত দফতরের ওই অফিসে রোলার চালক পদে কর্মরত রয়েছেন পরেশচন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, “একসময়ে অফিসের পিছনে পড়ে ছিল রোলারটি। এটি এই দফতরের প্রথম রোলার। পরে সেটিকে বেদি তৈরি করে মডেল করা হয়।”

ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের জন ফাউলার অ্যান্ড কোম্পানির তৈরি রোলারটি হেরিটেজ মডেল হিসেবে স্বীকৃত। পূর্ত দফতরের এক কর্মী গৌতম দীক্ষিতের কথায়, “এর কোনও নথি এখন দফতরে নেই। শুনেছি রেল ইঞ্জিনের মতো রোলারে দু’জন দাঁড়ানোর জায়গা ছিল। সেখানে দাঁড়িয়ে বেলচা করে কয়লা ঢালতে হতে। তবেই চলত রোলারটি।” ছিমছাম দেখতে রোলারটির গায়ে খোদাই করা রয়েছে কোম্পানির নাম। প্রতিটি রোলারের একটি করে রক্ষণাবেক্ষণ বই থাকে। স্বাধীনতার আগে আসা রোলারটির সেই বই হারিয়ে গিয়েছে বলে জানান কর্মীরা।

তবে প্রতি বছর বিশ্বকর্মা পুজোর দিন আলোর মালায় সাজানো হয় রোলারটিকে। রোলারের চিমনিতে ছোবড়া জ্বালানো হয়। সকলে দেখেন চিমনি দিয়ে ধোঁয়া উঠছে। অবিকল ইংরেজ আমলের মতো। আর বাকি দিন রোদ-ঝড় জল নিয়ে বেদিতে দাঁড়িয়ে থাকে স্টিম রোলার। দফতর সূত্রের খবর, হেরিটেজ মডেলটিকে একবার ইয়র্কশিয়ারের কোম্পানির ওয়ার্কশপ তথা মিউজিয়ামে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য দেশে ফেরা হয়নি সাহেব স্টিম রোলারের।

Jalpaiguri Steam Roller স্টিম রোলার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy