Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

আশ্রয় হোম বন্ধের দাবিতে পথ অবরোধ

নর্থ বেঙ্গল পিপলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার পরিচালিত আশ্রয় হোম থেকেও শিশুদের পাচার করা হতো বলে সন্দেহ করছে সিআইডি৷ এ দিন জলপাইগুড়ির দেবনগরের ওই হোমটিতে হানা দেন তদন্তকারী অফিসাররা৷ সেখানে থাকা আবাসিক ও কর্মীদের দীর্ঘ ক্ষণ জেরাও করেন তারা৷

জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চন্দনা চক্রবর্তীকে। মঙ্গলবার। ছবি:সন্দীপ পাল

জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চন্দনা চক্রবর্তীকে। মঙ্গলবার। ছবি:সন্দীপ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৯
Share: Save:

নর্থ বেঙ্গল পিপলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার পরিচালিত আশ্রয় হোম থেকেও শিশুদের পাচার করা হতো বলে সন্দেহ করছে সিআইডি৷ এ দিন জলপাইগুড়ির দেবনগরের ওই হোমটিতে হানা দেন তদন্তকারী অফিসাররা৷ সেখানে থাকা আবাসিক ও কর্মীদের দীর্ঘ ক্ষণ জেরাও করেন তারা৷ সেই সঙ্গেই তদনম্তে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকজন সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকও শিশুপাচার কাণ্ডে জড়িত।

এ দিন বিকেলে জলপাইগুড়ি মহিলা থানা থেকে অভিযুক্ত চন্দনা চক্রবর্তীকে শিলিগুড়িতে স্থানান্তরিত করা হয়৷ জলপাইগুড়ির দেবনগরের রথখোলা এলাকায় বেশ কয়েক বছর ধরে আশ্রয় হোমটি চালাচ্ছেন চন্দনা৷ মূলত মহিলাদের এই হোমটিতে অনেক সময় অনাথ অন্তঃসত্ত্বারাও থাকতেন। তাঁদের অনেকেরই অভিযোগ, সন্তান প্রসবের পর সেই শিশুদের পাচার করে দেওয়া হতো৷ স্থানীয় বাসিন্দা বিপুল সাহার অভিযোগ, গর্ভবতী মহিলাদের প্রসবের পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই মহিলাকে আর হোমে দেখা যেত না৷ আবার কোন কোন ক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে মহিলা ফিরলেও তাঁর সঙ্গে সন্তান থাকতো না৷

তিনি বলেন, ‘‘একবার তো এক মহিলাকে ‘আমার বাচ্চাকে ফিরিয়ে দাও’ বলে জোরে জোরে চিৎকার করে কাঁদতেও শুনেছিলাম৷ প্রতিবাদ করেছিলাম৷ কিন্তু ম্যাডাম বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে বলেন, পুলিশ দিয়ে আমাদের ঠাণ্ডা করে দেবে৷’’ তাঁরা বলেন, বছর দু’য়েক আগে হোমে জন্মাষ্টমীর একটি অনুষ্ঠানে পুলিশ-প্রশাসনের কয়েকজন আধিকারিককেও দেখেছিলাম৷ তাই ভয়ে তাঁরা চুপ করে ছিলেন৷

আশ্রয় হোমটি তুলে দেওয়ার দাবিতে এদিন রথখোলায় বেলা দশটা থেকে প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে পথ অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ এলাকার বাসিন্দা অঞ্জলি সরকার, বিমলা বিশ্বাসদের অভিযোগ, ‘‘আমরা নিশ্চিত এই হোম থেকেও প্রচুর শিশু পাচার করা হয়েছে৷’’

জেলাশাসক রচনা ভগত জানান, খুব শীঘ্রই হোমের আবাসিকদের অন্যত্র সরানো হবে৷ জানা গেছে, চন্দনা গ্রেফতারের পর ওই হোমে চরম সঙ্কট দেখা যায়৷

স্থানীয়রাই হোমের আবাসিকদের খাবারের ব্যবস্থা করছিলেন৷ তবে জেলা প্রশাসন থেকে এ দিনই ওই হোমে রেশন পাঠানো হয়েছে৷ আবাসিকদের মেডিক্যাল চেক আপও হয়৷ জেলাশাসক জানিয়েছে, ওই হোমের দেখ ভালের দায়িত্ব একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷

এ দিন চার নম্বর ঘুমটি এলাকায় চন্দনার সংস্থা নর্থবেঙ্গল পিপলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের অফিসেও ফের হানা দেন সিআইডির আধিকারিকরা৷ সেখানে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করে অফিসটি সিল করে দেওয়া হয়৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chandana Chakraborty Road Block
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE