‘নর্থবেঙ্গল বিজ়নেস মিট’-এর মঞ্চ থেকে সরাসরি না হলেও উত্তরবঙ্গের বণিক মহল, শিল্পপতি এবং ব্যবসায়ীদের শাসক দলের পাশে থাকার আহ্বান জানানো হল। সোমবার দুপুরে শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে ওই সম্মেলন হয়। তাতে উত্তরবঙ্গের আট জেলার ব্যবসায়িক সংগঠন, বণিক সভার এক হাজারের বেশি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই তাঁদের পাশে থাকার সরকারি বার্তার সঙ্গেই কৌশলে শাসকের পাশে চলার আহ্বানও জানানো হল বলে বণিক মহলের একাংশ মনে করছে।
সিআইআই-র উত্তরবঙ্গের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জয় টিব্রেওয়ালকে তৃণমূলের সমতল চেয়ারপার্সন করার প্রসঙ্গে বিষয়টি সামনে আসে। সঞ্জয়ও তাঁর বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। তার পরেই ওই বণিক সভারই আরও এক প্রাক্তন চেয়ারম্যান নরেশ আগরওয়াল সঞ্জয়কে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের থেকে এমন লোককে পদে বসানো বড় পদক্ষেপ। এই মেলবন্ধন জরুরি।’’
সম্মেলনের শেষের দিকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ শিল্পপতি তথা ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার কথা তুলে সমর্থনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। উদয়ন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা সবাই করছিলেন। আপনি এদের কত সাহায্য করেন, তা বলছিলেন। ঠিক পাল্টা যদি সাহায্যটা ওঁদের দিক থেকে আসে, তা হলে মনে হয় আরও ভাল হবে।’’ মন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে রাখতে পারলেই শিল্প এগোবে, উত্তরবঙ্গ এগোবে। এই জায়গায় খানিকটা ঘাটতি রয়েছে। সেটা উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের ভাবতে হবে।’’ সব শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘উদয়ন ভাল বলেছে। পজ়িটিভ বলেছে। আপনাদের সমর্থন আমাদের সব সময় দরকার। আপনারা আমাদের পরিবারের সদস্য।’’
মুখ্যমন্ত্রী, অন্য মন্ত্রীরা শিল্প, ব্যবসায়ীদের সমর্থন-সহ অন্য বিষয়ে কথা বললেও বাণিজ্য সম্মেলনে কিছুটা তালও কেটেছে। পর্যটন সংগঠন থেকে অন্য শিল্প সংগঠনের কোনও সদস্য কথা বলার সুযোগ পাননি। উত্তরের অন্যতম পর্যটন সংগঠন হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘কনভেনশন সেন্টারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। কিন্তু পর্যটন নিয়ে কথা বলার দেওয়া হল না’’ নর্থবেঙ্গল ইন্ডাট্রিজ় অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুরজিৎ পাল বলেন, ‘‘আমরাও বলার সুযোগ পাইনি। অনেক কিছু সামনে আসেনি। বাছাই করা কিছু লোক পছন্দমতো কথা বলে গিয়েছেন।’’
এই সম্মেলন নিয়ে বালুরঘাটে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, ‘‘বাংলার শিল্প নিয়ে কী আর বলি! শিলিগুড়ির প্রস্তাবিত কনভেনশন সেন্টার থেকে জগন্নাথ দেবের খিচুড়ি প্রসাদ বিলি হলেও আশ্চর্য হবো না।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)