সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের জেরে অনেক স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা কমেছে। জলপাইগুড়ি শহরের কয়েকটি স্কুলে গত প্রায় এক মাস ধরে ক্লাস নিচ্ছিলেন ‘জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র শিক্ষক শিক্ষণ’ (বিএড) কলেজের থার্ড সিমেস্টারের একশো পড়ুয়া। শনিবার ছিল শিক্ষক শিক্ষণের ছাত্রছাত্রীদের শেষ ক্লাস। আগামী সোমবার থেকে কী করে ক্লাস চালানো হবে, তা নিয়ে চিন্তায় সে সব স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
স্কুলগুলিতে পাঠ্য়ক্রম শেষ করা যাবে কি না, তা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। শনিবার চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এক বড় অংশ নিজেদের কর্মস্থলে যাননি। যতক্ষণ পর্যন্ত যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশ না করা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত স্কুলে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। যৌথ মঞ্চের পক্ষে সেলিনা আখতার বলেন, ‘‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের তালিকা প্রকাশ না করা পর্যন্ত আমরা স্কুলে যাচ্ছি না।’’
এমন পরিস্থিতিতে অনেক স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার যথেষ্টই কমছে। স্কুলে গেলেও সব ক্লাস না হওয়ায় উৎসাহ হারাচ্ছে তারা। শনিবার জলপাইগুড়ি মারোয়ারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে হাতেগোনা কয়েক জন ছাত্রী উপস্থিত হয়েছিল। একই ছবি ছিল জলপাইগুড়ির অন্য স্কুলগুলিতেও। মারোয়ারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে মাত্র চার জন ছাত্রী উপস্থিত ছিল। দশম শ্রেণিতে মাত্র ছয় জন ছাত্রী উপস্থিত ছিল। অষ্টম শ্রেণি ও অন্যান্য কয়েকটি শ্রেণিতে এ দিন শিক্ষক শিক্ষণ কলেজের ছাত্রীরা ক্লাস নিয়েছেন।
মারোয়ারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রিমা তিওয়ারি বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের তিন জন শিক্ষিকা চাকরিহারা হয়েছেন। ছাত্রীদের অনুপাতে শিক্ষিকার সংখ্যা যথেষ্টই কম রয়েছে। বিএড কলেজের চার জন ছাত্রী গত প্রায় এক মাস ধরে শিক্ষক শিক্ষণের নিয়ম মেনে ক্লাস করানোয় খানিকটা হলেও সুবিধা হচ্ছিল। চাকরিহারা শিক্ষিকারা স্কুলে আসছেন না। সোমবার থেকে কী ভাবে সব ক্লাস নেওয়া যাবে, ভেবে পাচ্ছি না।’’
জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র শিক্ষক শিক্ষণ কলেজের অধ্যক্ষ শুভেন্দুভূষণ মোদক জানান, কলেজের থার্ড সিমেস্টারের একশো জন ছাত্রছাত্রীকে জলপাইগুড়ি শহরের কয়েকটি স্কুলে ‘প্র্যাকটিস টিচিংয়ের’ জন্য পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে অরবিন্দ মাধ্যমিক, মারোয়ারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ফণীন্দ্রদেব ইনস্টিটিউট, সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুল, সোনালি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, জলপাইগুড়ি হাইস্কুল, সোনাউল্লা হাইস্কুল-সহ কয়েকটি স্কুল। হাতেকলমে এই প্রশিক্ষণ শিক্ষক শিক্ষণের পাঠ্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)