শিবশঙ্কর পাল।
নিজের জেলা কোচবিহারে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি গড়তে উদ্যোগী হয়েছেন শিবশঙ্কর পাল। ওই ব্যাপারে জমির খোঁজখবরও নিতে শুরু করেছেন তিনি। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ মাসেই কোচবিহারে এসে রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ক্রিকেট জগতে ম্যাকো নামে পরিচিত ম্যাকোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথবাবুও। তিনি বলেন, “বেশ কিছুদিন আগে আমাকে শুভেচ্ছা জানাতে শিবশঙ্কর ফোন করেছিলেন। উনি ঠিক কী করতে চাইছেন তা নিয়ে কোচবিহারে বা কলকাতায় দেখা করলে আলোচনা করব।” শিবশঙ্কর বলেন, “কোচবিহার আমার নিজের জেলা। ফলে ক্রিকেটের উন্নয়নে সেখানে অ্যাকাডেমি তৈরির স্বপ্ন আমার বহুদিনের। জমির বন্দোবস্ত হলে ওই ব্যাপারে এগোতে পারব। খুব শীঘ্রই কোচবিহারে গিয়ে পুরো বিষয়টি নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। আমার ওই পরিকল্পনার কথা ইতিমধ্যে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকেও জানিয়েছি।”
ক্রীড়ামহল সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারের তুফানগঞ্জে শিবশঙ্করের পালের বাড়ি। একসময় কোচবিহারের একাধিক ক্লাবের হয়েও জেলায় ক্রিকেট খেলেছেন। রঞ্জি ট্রফিতে খেলা থেকে ভারতীয় দলের সদস্য হিসাবে বিদেশ সফর সবকিছু ঘিরেই জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা ছিল। ম্যাকোও সময় সুযোগ পেলে কোচবিহারে ছুটে আসেন। পুরো রঞ্জি দল নিয়েই একবার তিনি কোচবিহার ঘুরে গিয়েছেন। পরে জেলা তথা উত্তরবঙ্গের ক্রিকেট প্রসারে উন্নয়নের ব্যাপারে ক্রীড়াপ্রেমীদের অনেকে ম্যাকোকে উদ্যোগী হতে আর্জিও জানান। জেলার ক্রিকেট প্রসারে তারপর থেকেই অ্যাকাডেমি তৈরির ভাবনা শুরু। কয়েক বছর আগেও একবার অ্যাকাডেমি তৈরির পরিকল্পনা নেন। যদিও পছন্দমতো জমির বন্দোবস্ত না হওয়ায় সেই যাত্রা কাজ এগোয়নি। এ বার অবশ্য আগেভাগে জমির বিষয়টি নিশ্চিত করে এগোতে চাইছেন তিনি। প্রাথমিকভাবে প্রাক্তন সতীর্থ ক্রিকেটার তথা রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। পরিকল্পনার রূপরেখা নিয়ে এ বার উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছেন তিনি। জেলার এক ক্রীড়া প্রশাসকের কথায়, ‘‘রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে ম্যাকোর দীর্ঘদিনের পরিচয়। লক্ষ্মীরতনবাবুও তাঁর ক্রিকেট সতীর্থ ছিলেন। প্রকল্প নিয়ে তাই আশা বেড়েছে।’’
প্রস্তুতি কতটা এগিয়েছে? ম্যাকো জানিয়েছেন, কোচবিহারে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি করার ব্যাপারে জাতীয় স্তরের ও আন্তর্জাতিক পরিচিতি রয়েছে এমন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা হয়েছে। সকলেই ওই ব্যাপারে উৎসাহী। এমনকী পালা করে ফি মাসে তাঁরা প্রশিক্ষণ দিতে কোচবিহারে আসতেও রাজি আছেন। ওই তালিকায় সৌরাশিস লাহিড়ি, উৎপল চট্টোপাধ্যায়, দীপ দাশগুপ্ত, মনোজ তিওয়ারি, রোহন গাওস্কর, দেবাং গাঁধীর মতো ক্রিকেটার রয়েছেন। এ ছাড়াও মহম্মদ কাইফ, ভিভিএস লক্ষণ, হেমাঙ্গ বাদানির মত একঝাঁক তারকা ক্রিকেটার রয়েছেন। জমির বিষয়টি চূড়ান্ত হলে তবে সকলের সঙ্গে নতুন করে কথা বলব।
ক্রীড়া মহল সূত্রের খবর, পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট অ্যাকাডেমি গড়তে অন্তত তিন একর জমি দরকার। সেখানে মাল্টিজিম থেকে মিনি সুইমিং পুলের মত পরিকাঠামো থাকা দরকার। ম্যাকো জানিয়েছেন, “ইতিমধ্যে স্পনসরদের একটি মহল ওই পরিকল্পনা নিয়ে তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছে। জমির ব্যবস্থা করা হলে সমস্যা হবেনা। জেলা তথা উত্তরের ক্রিকেট উন্নয়নই আমার লক্ষ্য।” দিনহাটা মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিভুরঞ্জন সাহা বলেন, “ওই অ্যাকাডেমি হলে কোচবিহার জেলা শুধু নয় উত্তরের বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্রিকেট প্রতিভার বিকাশের কাজে তা দারুণ সহায়ক হবে। ম্যাকো চাইলে আমাদের তরফে সমস্ত সহযোগিতা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy