ধূপগুড়িতে প্রচারে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।
পিচের প্রলেপ উঠে যাওয়া রাস্তা, উপচে পড়া নর্দমার জলে ভেজা ধূপগুড়িতে প্রচারে গিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভের দীর্ঘ তালিকা শুনলেন শিলিগুড়ির মেয়র তথা তৃণমূল নেতা গৌতম দেব। পথ চলতি বাসিন্দাদের কাছে ‘ক্ষমা’ চাইলেন। মিছিল দেখে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়া মোটরবাইক আরোহীকে দেখে জোড়হাত করে বললেন, “ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমা করে দেবেন। ভোটের পরে আবার আসব।”
বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে শুক্রবারও বাসিন্দাদের ক্ষোভ শুনতে হয়েছে গৌতম দেবকে। সংহতি মোড়ে এক দল এলাকাবাসী মেয়রের কাছে নালিশ করেছেন, দু’বছর আগে সরকারি বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তি পেলেও, তার পরে আর কোনও টাকা পাননি। মেয়র সে সমস্যার কথা ‘নোট’ করে নিয়েছেন।
ধূপগুড়িতে আগামী ১ সেপ্টেম্বর যৌথ-সভা হবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের। তৃণমূল-বিরোধী ভোট ফিরে পেতেই বাম-কংগ্রেসের এই সভা বলে খবর। মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি মডেলেই ধূপগুড়ি ছিনিয়ে আনার স্বপ্ন দেখছে বাম-কংগ্রেস শিবির। অন্য দিকে, আগামী ৩০ অগস্ট ধূপগুড়িতে আসতে চলেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জেলা বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, ধূপগুড়িতে আগামী ৩০ এবং ৩১ অগস্ট দু’দিন পর-পর রোড শো এবং জনসভা করবেন শুভেন্দু।
দল সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে ধূপগুড়ি শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সাধারণ বাসিন্দাদের ‘ক্ষোভ’ এখন তৃণমূলের মাথাব্যথার কারণ। ধূপগুড়ি পুর এলাকায় পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভের কারণে তৃণমূল পিছিয়ে পড়লে বিধানসভা উপনির্বাচনে জেতাও সমস্যা হয়ে যাবে। সে আশঙ্কা দূর করতেই অভিজ্ঞ নেতাদের মাঠে নামানো হয়েছে।
ধূপগুড়ির শহরের সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা মন্ত্রী গৌতম দেব নিজেও। তিনি বলেন, “ধূপগুড়িতে অনেক কাজ হয়েছে। নির্মাণ হয়েছে। তার ফলে, জমা জল বার হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সে কারণে জল আটকে যাওয়ার সমস্যা আছে। অনেকে সরকারি ঘর তৈরির কিস্তি পাননি। সে সমস্যাও রয়েছে। কোথাও বেহাল রাস্তার সমস্যা রয়েছে। তৃণমূলই ধূপগুড়ির উন্নয়ন করেছে, এত দিন বিজেপির বিধায়ক-সাংসদ ছিল কেউ কিছুই করেননি।”
নেতারা নানা দাবি করলেও অভিযোগ-ক্ষোভ পিছন ছাড়ছে না তৃণমূলের। এ দিন সংহতি নগরের বাসিন্দা গৌরী গুহ, সুনীল বসাক, জয়দেব সেনেরা বলেন, “সেই কবে আমরা ঘর তৈরি করার এক কিস্তির টাকা পেয়েছিলাম। তার পরে, টাকা পাইনি। সব টাকা কোথায় গেল? আজকে ভোট প্রচারে এসেছিলেন তৃণমূল নেতারা, তাঁদের কাছে উত্তর চেয়েছি।”
দল সূত্রের দাবি, এই ক্ষোভ প্রশমিত করতেই প্রচারে ‘ক্ষমাপ্রার্থী’ শিলিগুড়ির মেয়র। বাসিন্দাদের মন পেতে বাড়ির সদর দরজায় দাঁড়িয়ে পড়ুয়াদের ডেকে কথা বলছেন, পোষা ছাগলছানা কোলে তুলে নিয়েছেন। দোতলা বাড়ির বারান্দায় দাঁড়ানো বাসিন্দাদের দিকে জোড়হাত করে নীচ থেকে মাথা উঁচু করে গলা তুলে বলেছেন, “একটু দেখবেন আমাদের।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy