নিজস্ব তহবিল বৃদ্ধিতে জোর দিয়েছে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ। তার পরেও চলতি বছরের তুলনায় তাদের বাজেট বরাদ্দ বাড়ল না। বরং আগামী বাজেটে বরাদ্দ কমিয়েছে পরিষদের তৃণমূল বোর্ড। পরিষদ সূত্রে খবর, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে পরিষদের মোট বাজেট ছিল ১৩১ কোটি টাকার। ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে তা কমে হয়েছে ১৩০ কোটি। মঙ্গলবার তা পাশ হয়েছে। পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষের দাবি, গত অর্থবছরের বাজেটে আবাস যোজনার প্রায় ১২ কোটি টাকা ধরা ছিল। কিন্তু এ বারের বাজেটে সেই বরাদ্দ ধরা নেই।
মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতা অজয় ওরাওঁয়ের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে কি তৃণমূলের পরিষদের বাজেট কেন্দ্রীয় বরাদ্দের দিকেই তাকিয়ে?’’ সভাধিপতির দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার নানা ভাবে বঞ্চনা করছে। আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ, প্রাধনমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে। তার পরেও রাজ্য অর্থ কমিশন, রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের মাধ্যমে পরিষদের উন্নয়নের কাজ চলছে। নিজস্ব তহবিল বৃদ্ধিতে জোরদার পরিকল্পনাও নিয়েছেন তাঁরা।
অজয়ের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বরাদ্দ দিয়েই পরিষদের বাজেট তৈরি হয়েছে। সভাধিপতির কথায় এবং বাজেটে বরাদ্দ প্রকল্পগুলি থেকে তা স্পষ্ট। বাজেটে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন, স্বচ্ছ ভারত মিশনের বরাদ্দই অনেকটা রয়েছে। অজয়ের বক্তব্য, ‘‘মহকুমা এলাকার রাস্তা, নিকাশি থেকে জঞ্জাল সমস্যা বড় আকার নিয়েছে। পরিষদের তরফেও যে রোজগারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে, তার নামগন্ধও নেই বাজেটে। কেন্দ্রীয় বরাদ্দ দিয়েই বাজেট তৈরি হলে পরিষদ আর কী করল?’’
পরিষদের তরফে জানানো হয়েছে, গত অর্থবছরের তুলনায় এ বার তারা নিজস্ব তহবিল বৃদ্ধিতে বেশি আয় ধরেছেন। গত বার ১ কোটি টাকা আয় ধরা হলেও এ বার ৩ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সে জন্য চারটি নদীঘাট এলাকায় টোল ব্যবস্থা, ভবন ভাড়া, দোকান তৈরি করে ভাড়া, বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনের জন্য কর, পর্যটনের উন্নয়ন করে আয়ের পথ তৈরি করা হচ্ছে।
বিরোধী দলনেতার দাবি, চলতি অর্থবছরে নিজস্ব তহবিল বাবদ ১.২৪ লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। আয় হয়েছে অনেক কম। প্রতি বার নিজস্ব তহবিল বৃদ্ধির নানা দিক দেখানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। তবে এ দিন বিরোধী দলনেতা বাজেট পেশের বৈঠকে ছিলেন না। তাঁর দাবি, দলীয় এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। তিনি সেখানে গিয়েছিলেন।
অরুণের বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনার পরেও রাজ্য সরকার নানা ভাবে উন্নয়ন করে চলেছে। তাতেও বাধা সৃষ্টি করছে বিরোধীরা। নিজস্ব তহবিল তিন গুণ বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)