ঘরের বাইরেই বসেছেন কর্মীরা। তুলসিহাটায় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে।
বাসস্থান ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াতেই শীতঘুমে থাকা সাপ মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাটা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে ঢুকে পড়তে পারে বলে মনে করছেন দফতরের কর্মী সহ লাগোয়া স্কুলের শিক্ষকরা।
সোমবার দফতরে অবশ্য আর সাপ দেখা যায়নি। বলা ভাল, দেখতে পাওয়া যায়নি। কেননা, এ দিন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতরে যাননি। কর্মীরাও দফতরের সামনে মাঠে বসেই দফতরের কাজ সেরেছেন। একই ভাবে লাগোয়া স্কুলের পড়ুয়ারাও বাইরে বসেই ক্লাস করেছে। তবে পড়ুয়ার সংখ্যা যে এ দিন তিনভাগের একভাগ কমে গিয়েছে তা স্কুল সূত্রেই জানা গিয়েছে। তবে এদিন সীমানা পাঁচিলের চারপাশে থাকা সব গর্ত অবশ্য বন্ধ করে দিয়েছেন কর্মীরা। কেননা ওই দফতরের পিছনেই রয়েছে খেত। সেখানে সম্প্রতি চাষ করা হয়েছে। তাই বাসস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তারা বেরিয়ে এসে লাগোয়া অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের জানালা দিয়ে, পাঁচিলের ফুটো দিয়ে ঢুকে পড়েছে বলে কর্মীদের সন্দেহ। তবে সাপের হানা এড়াতে সাফসুতরো করা হলেও এদিনও অবশ্য বন দফতরের কোনও সাহায্য চাওয়া হয়নি। দফতরের জরুরি কাজে এদিন মালদহে যেতে হওয়ায় বন দফতরকে জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক।
তুলসিহাটা চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক মাসুদ করিম আনসারি বলেন, ‘‘সীমানা পাঁচিলে বেশ কিছু ফুটো ছিল। তা বন্ধ করা হয়েছে। এদিন মালদহে দফতরের জরুরি সভায় সারা দিন ব্যস্ত থাকায় বন দফতরকে জানানো হয়নি। মঙ্গলবার বন দফতরকে জানাব।’’
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাটা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে গত বুধবার থেকে সাপের উপদ্রব শুরু হয়। যাদের এখন শীত ঘুমে থাকার কথা তারা দফতরে ঘুরে বোড়ানোয় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর সহ একই সীমানা পাঁচিলের মধ্যে রয়েছে জোত বহরমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। ফলে শিক্ষকদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়ায়। সোমবারও সেই ভয়ের রেশ কাটেনি।
এ দিন, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে গিয়ে দেখা যায় কর্মীরা বাইরে চেয়ার পেতে কাজ করছেন। নথিপত্রের প্রয়োজন হলে খুব সাবধানে ভিতরে গিয়ে ফের ফিরে আসছেন। একই ভাবে পাশেই প্রাথমিক স্কুলের পঠন-পাঠন চলছে বাইরে বসেই। দোতলায় অবশ্য শ্রেণিকক্ষগুলির ভিতরেই ক্লাস হয়েছে। তবে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল খুব কম। ১৫০ পড়ুয়ার মধ্যে এদিন ৫৪ জন ছাত্রছাত্রী হাজির ছিল বলে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে।
গত বুধবার দুপুরে দফতরে বসে কথা বলার সময় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক মাসুদ সাহেবের চেয়ারে উঠে পড়ে একটি সাপ। ঘরের পিছনেই মাঠ। ওই মাঠে হালে লাঙল দিয়েছেন চাষিরা। ফলে বাসস্থান হারিয়ে জানলা দিয়ে সাপটি ঢুকে পড়েছিল বলে কর্মীদের সন্দেহ। তারপর কখনও বাথরুমে, কখনও বই বের করতে গিয়ে বেরিয়ে আসছিল সাপ। ওই দিনের পর থেকে মাসুদ সাহেবের ঘরের পিছনের জানলা আর খোলা হয়নি। বন্ধ করা হয়েছে দফতরের ভিতরের গর্ত সহ পাঁচিলে ও ঘরের ভিতরের ছোট গর্তগুলিও। কিন্তু তারপরেও বিপদ কতটা কেটেছে, তা বুঝতে পারছেন না দফতরের কর্মীরা।
অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরের কর্মী মহম্মদ মোসলেম, শ্যামল কুমার দাস বলেন, ‘‘সাপকে কে না ভয় পায়! ফলে ভয় একটা রয়েছেই! কিন্তু কী করব, কাজটাও তো করতে হবে।’’ একই কথা বলেন জোতবহরমপুর প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মানিক দাস।
চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী স্কুলের প্রাণীবিদ্যার শিক্ষক কমলকৃষ্ণ দাস বলেন, ‘‘হতে পারে ওরা নিজেদের বাসস্থান ফিরে পেয়েছে। আবার এদিন কুয়াশা ছিল। আবহাওয়াও ঠান্ডা ছিল। ঠান্ডায় ওরা অক্ষম হয়ে পড়ে। তাই দফতরে কোথাও ঘাপটি দিয়ে থাকায় এ দিন দেখা যায়নি এমনও হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy