E-Paper

চা বলয়ের রাশ ধরুক সঙ্ঘ, চর্চা বিজেপিতে

চা বলয় অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে এবারের লোকসভা নির্বাচনেও জয়ী হয়েছে বিজেপি। কিন্তু এই দুই কেন্দ্রেই জয়ের ব্যবধান কমেছে বিজেপির।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৪ ০৭:৩৪

—প্রতীকী ছবি।

দলীয় সংগঠনের উপরে আর ‘ভরসা’ নেই। বরং, বাগান শ্রমিকদের ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতে চা বলয়ের রাশ এখন থেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) হাতে থাকুক— এমনই চাইছেন খোদ বিজেপি নেতাদের একাংশও। কিন্তু চাইলেও সেই কাজ তত সহজ নয় বলেও মনে করছেন গেরুয়া শিবিরের ওই নেতাদের অনেকেই।

চা বলয় অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে এবারের লোকসভা নির্বাচনেও জয়ী হয়েছে বিজেপি। কিন্তু এই দুই কেন্দ্রেই জয়ের ব্যবধান কমেছে বিজেপির। দুই কেন্দ্রের চা বলয়েও গত বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই গেরুয়া শিবিরের ‘ভোট-ক্ষয়’ চলছেই। শুধু তাই নয়, এ বারের লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের মালবাজার এবং আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের নাগরাকাটা বিধানসভা এলাকায় বিজেপির থেকে এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের চা বলয় অধ্যুষিত আরও দু’টি বিধানসভা এলাকা মাদারিহাট বা কালচিনিতে তৃণমূলের থেকে বিজেপি এ বারের লোকসভা নির্বাচনে এগিয়ে থাকলেও, গত লোকসভা নির্বাচন বা বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় তাদের ব্যবধান অনেকটাই কমেছে।

সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে চা বলয়ে সংগঠন নিয়ে বিজেপির উপরে ‘ভরসা’ রাখতে পারছে না রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। জয়ের ব্যবধান কমায় আরএসএসের এই ভাবনা যে অপ্রাসঙ্গিক নয়, প্রকাশ্যে না হলেও ঘরোয়া আলোচনায়, সেই কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন বিজেপি নেতাদের একাংশও। তাঁদের বক্তব্য, চা বলয়ে বিজেপির সংগঠন এখনও দেখে চলছে দলের শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন বা বিটিডব্লিউইউ। যে সংগঠনের চেয়ারম্যান আবার আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সাংসদ জন বার্লা। যার বদলে এ বার আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে প্রার্থী করে বিজেপি। তার পরেই টিগ্গার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই সরব হন বার্লা। অভিযোগ, যার জেরে বিটিডব্লিউইউ-এর একটা অংশকে আর লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নামাতেই পারেনি বিজেপি। তার জেরে শুধুমাত্র আলিপুরদুয়ারই নয়, জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের চা বলয়েও বিজেপির ভোট-ক্ষয় হয়েছে বলেও চর্চা চলছে দলের অন্দরে।

এ নিয়ে একাধি কবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি বার্লা। আর দিল্লি থেকে টিগ্গা বলেন, “উনি (বার্লা) কী করেছেন বা কী করেননি, সেটা দেখার জন্য দল রয়েছে। আমি নতুন করে তা নিয়ে কিছু বলব না। তবে এটুকু বলতে পারি, চা বলয়ে আমাদের এগিয়ে থাকার ব্যবধান কেন কমেছে, সেটা আমরা অবশ্যই দেখব। এবং আগামী নির্বাচনে সেই ব্যবধান বৃদ্ধির চেষ্টা করব।” আর এই প্রসঙ্গ টেনেই বিজেপি নেতাদের একাংশও চা বলয়ের রাশ এখন থেকে আর দলের কোনও প্রভাবশালী নেতার বদলে একেবারে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের উপর থাকুক বলে ঘনিষ্ঠ মহলে বলতে শুরু করেছেন।

যদিও সেই বিজেপি নেতাদের একাংশই জানাচ্ছেন, বিষয়টি তত সহজ নয়। কারণ, চা বলয়ের রাজনীতির ক্ষেত্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দলীয় পতাকাও বড় ‘ফ্যাক্টর’। যে পতাকাকে সামনে রেখে নির্বাচনে কোনও দল লড়াই করে। বিজেপির অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মণ বলেন, “চা বলয়ের দলের ভোট কেন কমল, সে বিষয়ে দলে অবশ্যই পর্যালোচনা করা হবে। সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

RSS BJP North Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy