রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ দিয়েছেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় কোচবিহারের রাজনৈতিক মহল। জেলা সভাপতির নির্দেশের পর থেকেই তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসেছে। এ বার এই নিয়ে রবীন্দ্রনাথের ‘ঘনিষ্ঠেরা’ চিঠি দিতে চলেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁদের অভিযোগ, বেছে বেছে কোচবিহারের পুরনো কর্মীদের ‘কোণঠাসা’ করার চেষ্টা চলছে। নেপথ্যে রয়েছেন অভিজিৎ এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ।
রবীন্দ্রনাথকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। স্থানীয় তৃণমূলকর্মীদের একাংশের সূত্রে খবর, কোচবিহার জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস দু’টি গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে পড়েছে। এক দিকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, পার্থপ্রতিম রায়। অন্য দিকে, জেলা সভাপতি অভিজিৎ এবং উদয়ন। অভিযোগ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চলছে ‘ঠান্ডা লড়াই’। অভিজিৎ এবং মন্ত্রী উদয়নের বিরুদ্ধে দলের পুরনো নেতাকর্মীদের কোণঠাসা করার অভিযোগ তুলে দলনেত্রী মমতাকে শুক্রবার চিঠি পাঠাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ এবং পার্থপ্রতিমের ‘ঘনিষ্ঠেরা’। সেই গোষ্ঠীতে রয়েছেন, কোচবিহার দুই নম্বর ব্লকের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি পরিমল বর্মণ, কোচবিহার এক নম্বর ব্লকের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি খোকন মিয়াঁ, যুব তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি কমলেশ সরকার-সহ জেলার ব্লক অঞ্চল বুথ স্তরের বহু প্রাক্তন এবং বর্তমান দলের পদাধিকারী।
রবীন্দ্রনাথের ‘ঘনিষ্ঠ’দের সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘অপমানজনক ভাবে’ মন্ত্রী উদয়নের নির্দেশে জেলা সভাপতি অভিজিৎ পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে রবীন্দ্রনাথকে পদত্যাগ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডেই দল হেরেছে। জেলা সভাপতির নিজের ওয়ার্ডে হেরেছে তৃণমূল। টাউন ব্লক সভাপতি, যাঁকে পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে, তিনিও নিজের ওয়ার্ডে হেরেছেন। রবীন্দ্রনাথকেই কেন সরানো হচ্ছে, এটা বোধগম্য হচ্ছে না বলে দাবি করা হয়েছে চিঠিতে।
চিঠিতে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, গোটা জেলা জুড়ে পুরনো দলের সৈনিকদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। সব জায়গায় ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে, বিজেপি থেকে আসা দলের লোকেরা প্রাধান্য পাচ্ছেন। একাংশের অভিযোগ, রবীন্দ্রনাথ, পার্থপ্রতিম, বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ-সহ পুরনো নেতাদের সঙ্গে মিশলে পদ চলে যাবে বলে ভয় দেখানো হচ্ছে। পার্থপ্রতিম বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই চিঠি পাঠানো হবে।’’ এই অভিযোগপত্র নিয়ে উদয়নকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এই প্রসঙ্গে কথা বলার না সময় রয়েছে, না মানসিকতা রয়েছে।’’