Advertisement
০৯ মে ২০২৪

পাশের জেলায় বন্যার ভ্রূকুটি, বালুরঘাট শুকনো

বড়জোর দু-এক মিনিটের হালকা বৃষ্টি। তাও কোনও কোনও এলাকায়। বর্ষা এলেও এখনও এটুকুই জুটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের কপালে।

আষাঢ়েও জল নেই। ছবি: অমিত মোহান্ত।

আষাঢ়েও জল নেই। ছবি: অমিত মোহান্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৭:৫৭
Share: Save:

বড়জোর দু-এক মিনিটের হালকা বৃষ্টি। তাও কোনও কোনও এলাকায়। বর্ষা এলেও এখনও এটুকুই জুটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের কপালে।

টানা বৃষ্টিতে উত্তরের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি সহ বাকি কয়েকটি জেলায় বন্যার ভ্রুকুটি দেখা দিলেও দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে ভারী বৃষ্টি যেন উধাও হয়ে গিয়েছে। কখনও আকাশ কালো করে মেঘ জমার পরেই দমকা হাওয়ায় নিমেষে উধাও হয়ে যাচ্ছে তা। উঠছে প্রখর রোদ। চড়া তাপে গুমোট গরমে জেলার বাসিন্দাদের রীতিমত হাঁসফাঁস অবস্থা। এ জেলায় বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণে অবশিষ্ট গাছপালা মেঘ আকর্ষণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে বলে পরিবেশবিদদের দাবি।

বৃষ্টির অভাবে মাঠ ঘাট শুকিয়ে যেতে বসেছে। আমনের বীজতলা তৈরি করে চাষিরা আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। পাট জাগ (পচানো)দেওয়ার মতো নয়ানজুলি ও পুকুরে জলাভাবেও চিন্তার কালো মেঘ জমছে চাষি পরিবারে।

জেলা উপ কৃষি অধিকর্তা জ্যোতির্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে ভালো বৃষ্টি হলেও দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী বর্ষণের দেখা নেই।’’ এ বছর ১ লক্ষ ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চাষিরা বীজতলা তৈরির কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছেন। কিন্তু সমানভাবে সব জায়গায় বৃষ্টি না হওয়ায় তিনিও উদ্বিগ্ন। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এতে ধান রোয়ার কাজের সঙ্গে মার খেতে বসেছে গ্রীষ্মকালীন সব্জি চাষ। বর্ষায় ভারী বৃষ্টি না হলে তার প্রভাব আসন্ন রবি মরসুমে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেবে বলে কৃষি বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

এ দিকে এক টানা দাবদাহের জেরে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বালুরঘাট হাসপাতাল সূত্রের খবর, অতিরিক্ত গরমে সর্দিগর্মি থেকে শ্বাসকষ্ট, পেটের অসুখ নিয়ে রোজ হাসপাতালে আসছেন মানুষ। ভর্তিও হচ্ছেন। তাদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি। বালুরঘাটে তাপমাত্রা গত কয়েকদিন ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় অস্বস্তি ক্রমশ বেড়ে চলেছে।

গত বছরও জেলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল কম। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে জুন মাসটা ঘাটতি বৃষ্টি নিয়েই শুরু হয়েছে। গত বছর গোটা জুনে বৃষ্টি হয়েছিল ১৪২ মিলিমিটার। চলতি বছর এখনও পর্যন্ত জুন মাসে বৃষ্টির পরিমাণ ১২০ মিলিমিটার। তাও জেলার সর্বত্র ওই পরিমাণ বৃষ্টি হয়নি। চলতি বছরে জেলায় ১৭ হাজার হেক্টার জমিতে পাট চাষ হয়েছে। সামনের এক-দু সপ্তাহের মধ্যে জমি থেকে পাট কেটে জাগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। ভারী বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি ঘোরাল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রবল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

North cooch behar South cooch behar rain monsoon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE