একাধিক শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক একসঙ্গে দেওয়া হয়েছিল প্রসূতিদের। রোগী ভর্তির পর অপারেশন টেবিল পর্যন্ত একাধিক প্রোটোকল বা বিধি মানা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। বালুরঘাট হাসপাতালে ইঞ্জেকশন-কাণ্ডে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা করল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্যের মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে পাঠানো ওই রিপোর্টে এ সবেরই ইঙ্গিত রয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখতে ৩০ জুলাই ১৪ জন বিশেষজ্ঞের একটি দল আসছে বালুরঘাটে।
প্রসূতি ভর্তি হওয়ার পর থেকে অপারেশন পর্যন্ত একাধিক প্রোটোকল (বিধি) মানা হচ্ছে না বলেই প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। হাসপাতালের ওয়ার্ডের শয্যা থেকে রোগীকে লেবার রুমে না নিয়ে কখনও সরাসরি ওটিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কখনও সেখানে একই গ্লাভস, গাউন, চটি পরে একাধিক রোগীর অপারেশন দ্রুত করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি অসুস্থ হওয়া আট রোগীর ক্ষেত্রেও একই রকমের তাড়াহুড়ো লক্ষ্য করা গিয়েছে বলেই জেনেছেন তদন্তকারীরা। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিচ্ছন্নতা, ওষুধ প্রয়োগ এবং অপারেশন থিয়েটার— তিন রকম প্রোটোকল প্রসবের সময় ঠিক ভাবে মানার কথা। একাধিক প্রোটোকল লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে নজরে এসেছে।’’
ওষুধ প্রয়োগে কী অভিযোগ রিপোর্টে রয়েছে? স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানান, প্রসবের পরে মেরোপেনেম গোত্রের শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার সঙ্গেই অ্যামিকাসিন, মেট্রোটিনিডাজোল বা সিপ্রোফ্লক্সাসিনের মতো একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক একসঙ্গে প্রয়োগ করা হচ্ছে। তাতেই কি রোগীদের শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা হঠাৎ কমে যায়? তা অবশ্য বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্যদলের এসে যাচাই করার কথা। কিন্তু রাজ্যের অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ নীতি মানা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। গত ১৮ জুলাই রাতে প্রসূতিরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে স্টেরয়েড দিয়ে সামলানো হয়। কিন্তু ওই দিন সকালেই ওই ৮ রোগীর অনেকের শরীরে রাইগর (অস্বস্তি, খিঁচুনি, বমিভাব) শুরু হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে দেখা গিয়েছে, তবুও সন্ধে পর্যন্ত কিছু অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধ করা হয়নি। জেলার অন্যতম বালুরঘাট হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসায় এ সব নানা অসঙ্গতি, অভিযোগের নজরদারি নেই কেন? সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, ‘‘আমি এই প্রসঙ্গে কিছু বলব না।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস এ দিন বলেন, ‘‘কিছু অভিযোগ ছিল। আমরা প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট পাঠিয়েছি। তবে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায়নি। বিশেষজ্ঞ দল এসে বিষয়টি দেখবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)