Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Honey Trap

হানি-ট্র্যাপের ‘শিকার’ হয়ে চরবৃত্তিতে, দাবি এসটিএফের

বিহারের পূর্ব চম্পারণের ছেলে গুড্ডু অঙ্কে স্নাতক হতে স্থানীয় কলেজে ভর্তি হয়েছিল। তবে আর্থিক কারণে সে পড়া শেষ করতে পারেনি। এলাকায় অঙ্কের শিক্ষক হিসেবে কিছু দিন পড়ায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:১১
Share: Save:

সে কোনও সরকারি কর্মী বা আধিকারিক নয়। অথচ, তাকে না কি ‘হানি-ট্র্যাপের’ (মহিলা ঘটিত কাণ্ড) শিকার হয়ে চর হিসাবে কাজ করায় রাজি হতে হয়েছিল! জালে পড়ার কারণ পর্ন সাইটে ‘আসক্তি’। পাকিস্তানি সংস্থা আইএসআইয়ের চর অভিযোগে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ধৃত গুড্ডু কুমার এমনই জানিয়েছে তাঁদের, দাবি রাজ্য পুলিশের ‘স্পেশাল টাস্ক ফোর্স’ (এসটিএফ)-এর গোয়েন্দাদের।

বিহারের পূর্ব চম্পারণের ছেলে গুড্ডু অঙ্কে স্নাতক হতে স্থানীয় কলেজে ভর্তি হয়েছিল। তবে আর্থিক কারণে সে পড়া শেষ করতে পারেনি। এলাকায় অঙ্কের শিক্ষক হিসেবে কিছু দিন পড়ায়। কয়েক বছর আগে, সে চলে যায় নয়ডাতে। কয়েক বছর সেখানে সে লেবার কন্ট্রাক্টরের সুপারভাইজ়ার হিসেবে কাজ করে। কিন্তু লকডাউনের গোড়ার দিকে কাজ না থাকায়, ফেরে বিহারে।

তদন্তকারীদের দাবি, এর পরেই গোটা ঘটনা অন্য রকম মোড় নেয়। পর্ন সাইটে ‘আসক্তির’ সুবাদে কয়েকটি পর্ন ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’-এ জড়ায় হয় গুড্ডু। সেখানে মহিলা হিসাবে পরিচয় দেওয়া এক জনের সঙ্গে তার ‘ঘনিষ্ঠতা’ হয়। তার সঙ্গে ব্যক্তিগত নম্বর দেওয়া-নেওয়া হয়। পরে, সে ‘মহিলাই’ গুড্ডুর সঙ্গে আইএসআই-এর ‘হ্যান্ডলার’ ভিন‌্-রাজ্যের এক বাসিন্দার পরিচয় করিয়ে দেয়।

গোয়েন্দাদের দাবি, জেরায় তাঁরা গুড্ডুর কাছে জেনেছেন, তখন তার কোনও কাজ ছিল না। ওই ‘হ্যান্ডলার’ তাকে সেনা বাহিনীর তথ্য জোগাড়ের কাজ দেয়। রাজি না হলে, মহিলার সঙ্গে তার ‘ঘনিষ্ঠ’ আলাপচারিতা ফাঁস করে দেওয়ার ‘হুমকি’ দেওয়া হয়। প্যাঁচে পড়ে গুড্ডু সে কাজ নিয়ে শিলিগুড়িতে চলে আসে। তার কাজ ছিল শিলিগুড়ি লাগোয়া বিভিন্ন এলাকার সেনা ছাউনির বিভিন্ন খবর সংগ্রহ করে, তা পাঠানো। একই সঙ্গে সিকিমের দিকে সেনাবাহিনীর গতিবিধি রয়েছে সে সংক্রান্ত তথ্যও তাকে পাঠাতে বলা হয়েছিল।

গুড্ডুকে ছবি, ভিডিয়ো এবং তথ্য পাঠানোর জন্য যে টাকা দেওয়ার কথা ছিল, তা দেওয়া হয়নি বলে অনুমান এসটিএফের। তা ছাড়া, কত বার তেমন তথ্য ছবি কিংবা ভিডিয়ো গুড্ডু পাঠিয়েছে তা-ও স্পষ্ট নয় গোয়েন্দাদের কাছে। কারণ, গুড্ডুর মোবাইল থেকে অনেক তথ্য উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অনুমান। তবে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে বেশ কিছু নম্বর মিলেছে। যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতের মোবাইল থেকে উদ্ধার হওয়া দু’টি সিম-কার্ডও পরীক্ষা করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা জানান, গুড্ডুকে যে বা যারা কাজ দিত তারা নিজেদের দিল্লি, নয়ডার বাসিন্দা বলে দাবি করলেও প্রকৃত পক্ষে তারা কোথায় থাকে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। মনে করা হচ্ছে, উত্তর ভারতের কোথাও সে বা তারা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Honey Trap North Bengal Special Task Force
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE