Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Gorkhaland Territorial Administration

পাহাড়ে কি তবে ‘মহাজোট’, জল্পনা

দার্জিলিং পুরসভায় ক্ষমতাসীন অজয়ের দলের পাঁচ কাউন্সিলর অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দিয়েছেন। এর ফলে পুরসভা হামরো পার্টির হাতছাড়া হওয়ার মুখে।

লড়াইয়ের আহ্বান: রবিবার দুপুরে দার্জিলিং মোটর স্ট্যান্ডে হামরো পার্টির জনসভা। নিজস্ব চিত্র

লড়াইয়ের আহ্বান: রবিবার দুপুরে দার্জিলিং মোটর স্ট্যান্ডে হামরো পার্টির জনসভা। নিজস্ব চিত্র

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৪৪
Share: Save:

এ বার পাহাড়কে আলাদা রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডের মুখে। তবে সেই দাবি আদায়ে বিমল গুরুং, বিনয় তামাং এবং মন ঘিসিংকে একজোট করে লড়াই করার আহ্বান করলেন তিনি।

দার্জিলিং পুরসভায় ক্ষমতাসীন অজয়ের দলের পাঁচ কাউন্সিলর অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দিয়েছেন। এর ফলে পুরসভা হামরো পার্টির হাতছাড়া হওয়ার মুখে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার দুপুরে দার্জিলিং মোটর স্ট্যান্ডে জনসভা করেছে দল। সেখানে অজয়ের দলের বক্তাদের মূল লক্ষ্যই ছিল ‘দল ভাঙার খেলা’র অভিযোগে অনীতকে আক্রমণ। অনীত-বিরোধী সবাইকে একজোট হওয়ার ডাক দেন অজয়। এ দিন অজয় বলেন, ‘‘অনেকে রাজ্য সরকারের এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে। চারদিকে সীমান্ত-ঘেরা দার্জিলি‌ঙে সরকার মনে হয় শান্তি, গণতন্ত্র বা সম্প্রীতি চাইছে না। তাই অনীত থাপার দল ভাঙার খেলায় ছাড় দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘গোর্খাজাতির বিরুদ্ধে কাজ করা হচ্ছে। রাজ্যের থেকে আমাদের আলাদা হতে হবে। গণতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে শাসক-বিরোধী সবাই মিলে লড়াই করতে হবে। বিমল গুরুং, মন ঘিসিং, বিনয় তামাংদের একজোট করে লড়াই করতে হবে।’’

অজয়ের এই বক্তব্যের পর দার্জিলিঙে এখন প্রশ্নের ‘পাহাড়’। রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে কি ‘মহাজোট’ তৈরি হতে চলেছে পাহাড়ে? তা হলে কি ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পুনরাবৃত্তি দেখতে চলেছে পাহাড়? এ দিন সন্ধের পর থেকে রাজনৈতিক মহলের আলোচনায় এ সব প্রশ্নই উঠে আসছে। অনেকেই বলছেন, পাঁচ কাউন্সিলর দল ছাড়ার পর দার্জিলিং পুরসভায় সম্ভাব্য অনাস্থা ভোট ঘিরেই হয়তো ‘মহাজোট’ আত্মপ্রকাশ করবে। মহজোটের সম্ভাবনার চর্চা দার্জিলিংময়। সম্প্রতি আনন্দবাজারেও এই আশঙ্কার খবর প্রকাশিত হয়। ২০১৯ সালে লোকসভাতেও তৃণমূল, অনীতেরা এক দিকে, বাকিরা সবাই আর এক দিকে ছিলেন। শুধু লোকসভা নয়, দার্জিলিং বিধানসভার উপ নির্বাচনেও হেরেছিল শাসক গোষ্ঠী। অমর সিংহ রাই, বিনয় তামাংদের মতো পাহাড়ের নেতাদের প্রার্থী করেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি।

বিমল গুরুং এখন দেহরাদূনে আছেন। তাঁর দলের তরফে সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি কিছু বলেননি। একই ভাবে অজয়ের পুরনো দল জিএনএলএফ সভাপতি মন ঘিসিংও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তৃণমূল নেতা বিনয় তামাং বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি আমাদের অজয়, অনীত— দু’জনের থেকেই দূরত্ব বজায় রেখে চলা দরকার। বাকিটা এখনই কিছু বলছি না।’’আর যাঁকে নিয়ে অজয়ের ক্ষোভ-বিক্ষোভ, সেই জিটিএ-প্রধান অনীত থাপার বক্তব্য, ‘‘আমি নেতিবাচক কথা বলে আলাদা রাজ্যকে সামনে রেখে রাজনীতি করি না। পরে যা বলার বলব।’’

সম্প্রতি হামরো পার্টি ভাঙতেই অজয় অনীতের বিরুদ্ধে সরব হতে থাকেন। টাকা, পদ, ফ্ল্যাটের প্রলোভন দেখিয়ে দল ভাঙা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। অন্য দিকে, অজয়ের বিরুদ্ধে ঘরে বসে একা ‘রিমোট কন্ট্রোলে’ দল ও পুরসভা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

এ দিকে, এ দিন সন্ধের পর দার্জিলিং জুড়ে হামরো পার্টির এক নেতার নামে পোস্টার সাঁটা হয়। তিনি এ দিনের সভায় গোর্খাদের নামে কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ। প্রশাসনের তরফে পরিস্থিতির কথা ভেবে পাহাড়ে পুলিশি নজরদারি বাড়়ানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gorkhaland Territorial Administration GTA Alliance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE