পুরসভার আধিকারিক, মেয়র পারিষদের ঘরে চার অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির ঢোকা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘরে ঢুকে তারা কার্যত জোর করে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা নিয়ে হইচই পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি পুরসভার ঘটনা। বেলা সাড়ে ৩ টে নাগাদ ওই চার ব্যক্তি নতুন পুরভবনে চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন মেয়র পারিষদদের ঘরে জোর করে ঢোকেন বলে অভিযোগ। ওই ভবনের তিন তলায় মেয়র, কমিশনার, পুর সচিবদের ঘর রয়েছে। সেখানে অবাধে চারজনের ঘোরাফেরার পর পুরসভার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, মালদহের একটি মাদ্রাসা থেকে এসেছেন পরিচয় দিয়ে সাহায্যের জন্য টাকা চান। কাউকে বলেন ‘ছাত্রাবাসের পড়ুয়াদের একমাসের খাবারের টাকা দিন’। ব্যক্তিগত ভাবে আধিকারিক, মেয়র পারিষদের কাছ থেকে টাকা, সাহায্য দিতে চাপ দিতে থাকেন। পুর কমিশনারের ঘরে জোর করে ঢুকতে গেলে সহায়ক ধমক দেন। বাধা দিলে জোরজার করতে থাকেন। প্রায় ঘন্টাখানেক এভাবে বিভিন্ন ঘরে গিয়ে কয়েকজন মেয়র পারিষদ, আধিকারিকদের থেকে চারজন কয়েক হাজার টাকা তুলে বার হয়ে যান বলে অভিযোগ।
পুরসভার চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আচমকা চারজন ঘরে ঢুকে পড়েছিল। স্কুলের ছাত্রাবাসের জন্য একমাসের চাল দিতে বলে। পুরসভায় আবেদন করতে বলি। তারা তা করতে চায়নি।’’ তিনি জানান, ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে চাপ দেয়। এভাবে পুরসভায় যে কেউ ঢুকে পড়াটা ঠিক নয়। অতীতে বাম জমানায় ইউকেট নিয়ে তৎকালীন মেয়র বিকাশ ঘোষের উপর হামলার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল। তার পর মেয়রের ঘরের সামনে লোহার গেট বসে। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। পুরানো ভবন থেকে এখন মেয়র, পারিষদ, পুর কমিশনার সহ পুর আধিকারিকদের একাংশের দফতর নতুন ভবনে স্থানান্তর হয়েছে। অথচ সেখানে নিরাপত্তার ঢিলঢালা ভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নতুন পুরভবনে সিসিটিভি ক্যামেরাও নেই। ওই ব্যক্তিরা চলে যাওয়ার পর তাদের হসিদ পেতে তাই বিস্তর সমস্যা হয়। পরে পুর চত্ত্বরে ঢোকার রাস্তার ক্যামেরায় ছবি মেলে।
পুর কমিশনার শেরিং ওয়াই ভুটিয়া বলেন, ‘‘ওদের পরিচয় পরিষ্কার নয়। এভাবে সাহায্য করা যাবে না বলে তাদের চলে যেতে বলেছিলাম। দফতরের কর্মীরা তাদের ঢুকতে নিষেধ করেছিল। তার পরেও জোর করছিল।’’জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্তের ঘরে ওই ব্যক্তিরা গেলে তার সহায়ক ইন্টেরনেটে তাদের স্কুলের নাম খুঁজে পাননি। তখন চারজন অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে। স্কুলের অনুমোদন নবীকরণ হয়নি জানায়। জোরজার করতে থাকলে তাদের ১ হাজার টাকাও দেন মেয়র পারিষদের দফতরের লোকজন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)