Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Bharat Jodo Yatra

‘ভারত জোড়ো’র পাশে সিপিএম, অমর্ত্যে দ্বিমত

ভারত জোড়ো’র প্রশ্নে এক বিন্দুতে এলেও অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংক্রান্ত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দু’দলের প্রতিক্রিয়ায় তফাত ধরা পড়েছে।

মালদহে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

মালদহে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪৭
Share: Save:

প্রদেশ কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সাফল্য চেয়ে বার্তা দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর বক্তব্য, বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের মোকাবিলায়, গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় এবং মানুষের ঐক্য ও সম্প্রীতির জন্য যাঁরা পথে নামছেন, তাঁদের পাশে বামেরা আছে।

‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র অংশ হিসেবে বাংলায় সাগর থেকে পাহাড় পদযাত্রা করছে কংগ্রেস। কার্সিয়াঙে আগামী ২৩ জানুয়ারি ওই পদযাত্রার সমাপ্তি-পর্বে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম ও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু-সহ একাধিক বাম দলের নেতৃত্বকে চিঠি পাঠিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে আলোচনার পরে কার্সিয়াঙে আমন্ত্রণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষে নানা কর্মসূচির কারণে কিছু বাম শরিক দল কংগ্রেসের কর্মসূচিতে যাওয়ার ব্যাপারে অপারগতা জানিয়ে দিলেও আমন্ত্রণ স্বীকার করে কার্সিয়াঙে প্রতিনিধি পাঠানোর কথা অধীরবাবুকে জবাবি চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছেন পিডিএসের রাজ্য সম্পাদক অনুরাধা পূততুণ্ড। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ সংক্রান্ত প্রশ্নে সোমবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সেলিম বলেছেন, ‘‘আমরা চাই, বিজেপি ও তৃণমূলের রাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষ পথে নামুন। বিজেপি ও তৃণমূল-বিরোধী যাঁরাই রাস্তায় নামবেন, তাঁরা আপাতদৃ্ষ্টিতে আমাদের বিরোধী হলেও স্বাগত জানাব। আমরা এই কারণেই তাঁদের (কংগ্রেস) যাত্রার সাফল্য চাই। দার্জিলিং থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত গণতন্ত্র রক্ষা করতে, ঐক্য ও সম্প্রীতির জন্য যাঁরা মুখ ফুটে কথা বলবেন, তাঁদের পাশে আমরা আছি।’’ প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের এ দিন পদযাত্রা ছিল মালদহের বৈষ্ণবনগর থেকে সুজাপুর পর্যন্ত। নেতৃত্বে ছিলেন অধীরবাবুই। মানুষের সাড়া দেখে কংগ্রেস নেতারা উজ্জীবিত।

তবে ‘ভারত জোড়ো’র প্রশ্নে এক বিন্দুতে এলেও অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংক্রান্ত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দু’দলের প্রতিক্রিয়ায় তফাত ধরা পড়েছে। সেলিম এ দিন বলেছেন, ‘‘অমর্ত্য সেন তো বলেননি, তিনি মমতাকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান! বিজেপি-বিরোধী শক্তির ঐক্যের কথা বলেছেন তিনি। তাঁর নিজেরই সংশয় আছে বিজেপি-বিরোধী ক্ষোভ ও দলগুলিতে তৃণমূল নেত্রী এক জায়গায় আনতে পারবেন কি না। গোয়া বা মেঘালয়ে তৃণমূল কী করেছে, দেখাই গিয়েছে। অমর্ত্যবাবুর বক্তব্যে এক ধরনের শর্তের কথা আছে।’’ সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের সংযোজন, ‘‘বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করাই প্রধান লক্ষ্য। সেটা হলেই আমরা খুশি হব।’’

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু অবশ্য অমর্ত্যের বক্তব্যের পাল্টা বলেছেন, ‘‘আগে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন তৃণমূল নেত্রীকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চেয়েছিলেন। এখন অমর্ত্য সেন চাইছেন। তিনি বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদ, পণ্ডিত মানুষ। তিনি কিছু বললে অনেক বেশি আলোচনা হয়। নরেন্দ্র মোদী একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী হতে পারলে মমতা পারবেন না কেন? কিন্তু কংগ্রেসের এখনও সর্বভারতীয় স্তরে ২০% ভোট আছে। সেটা ছাড়া বিজেপিকে হারানো সম্ভব নয়।’’ শিক্ষক অমর্ত্য বাংলায় শিক্ষক-নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলুন, তা-ও চেয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। তৃণমূলের মুখপাত্র সুখেন্দু শেখর রায় অবশ্য পাল্টা বিঁধেছেন, ‘‘যদি এটা কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের মনোভাব হয়, তা হলে এই মন্তব্যেই বিজেপির বিরোধিতায় সুসংহত বিরোধী শিবির সম্পর্কে তাদের সদিচ্ছা স্পষ্ট। আর ২০% ভোটের হিসেব নির্বাচনী পাটিগণিতে অর্থহীন। দেশের ২৯টি রাজ্যে তা দিয়ে তারা বিরোধী দলের স্বীকৃতি পেতেও ব্যর্থ!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE