Advertisement
E-Paper

চা শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে কোনও প্রভাব পড়ল না দার্জিলিং এবং কালিম্পঙে, কার্শিয়াঙে পথ অবরোধের চেষ্টা

২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে সোমবার সকাল থেকে পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বন্‌ধ ডেকেছে চা শ্রমিকদের আটটি সংগঠন। দাবি পূরণ না হলে মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতিরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৪৩
কার্শিয়াঙে পথ অবরোধের চেষ্টা বন্‌ধ সমর্থনকারীদের।

কার্শিয়াঙে পথ অবরোধের চেষ্টা বন্‌ধ সমর্থনকারীদের। —নিজস্ব চিত্র।

চা শ্রমিক সংগঠনগুলি সোমবার সকাল থেকে পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বন্‌ধ ডেকেছে। ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে এই বন্‌ধ ডেকেছে চা শ্রমিকদের আটটি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। সোমবার সকাল থেকে বন্‌ধের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছেন চা শ্রমিকেরা। যদিও সোমবার দুপুর পর্যন্ত দার্জিলিং শহরে বন্‌ধের কোনও প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। দোকানপাট খোলাই রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। বন্‌ধ সমর্থনকারীরা জোর করে দোকান বন্ধ করানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের আটক করে নিয়ে যায়। কার্শিয়াং শহরেও পর্যটকদের গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করেন বন্‌ধ সমর্থনকারীরা। পুলিশ গিয়ে তাঁদেরও রাস্তা থেকে হটিয়ে দেয়। কালিম্পঙ জেলাতেও বন্‌ধের দৃশ্যত কোনও প্রভাব পড়েনি।

সমতলে রোহিনী টোল গেটের সামনে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তাঁরা। চলতে থাকে বোনাসের দাবিতে স্লোগান। অবরোধের জেরে একাধিক গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে রাস্তায়। কার্শিয়াঙে সোমবার সকালে পথ অবরোধ করার চেষ্টা করেন বন্‌ধের সমর্থকেরা। পথচলতি গাড়ি থামিয়ে দেন তাঁরা। চালকের সঙ্গে বচসা শুরু করেন। গাড়ি থেকে নামতে বাধ্য করা হয় যাত্রীদের। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধকারীদের সরানোর চেষ্টা করলে শুরু হয় উত্তেজনা। পুলিশের সঙ্গে দৃশ্যত ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বন্‌ধ সমর্থনকারীরা।

চা শ্রমিক সংগঠনগুলির বক্তব্য, রবিবার তাঁরা চা বাগানের মালিক পক্ষগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠকে সদর্থক কিছুই মেলেনি। তাঁরা মালিক পক্ষের কাছে অনুরোধ করেছিলেন, শ্রমিকদের যাতে অন্তত ২০ শতাংশ বোনাস দেওয়া হয়। কিন্তু সেই দাবিতে মালিক পক্ষ মান্যতা দেয়নি বলেই অভিযোগ শ্রমিক সংগঠনগুলির। পরে অবশ্য তাঁদের জানানো হয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। কিন্তু এই আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন শ্রমিকেরা। এই অবস্থায় রবিবারই চা শ্রমিকদের আটটি সংগঠন মিলিত ভাবে ১২ ঘণ্টার বন্‌ধ ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দাবি পূরণ না হলে মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতিরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

জিটিএ-র ক্ষমতাসীন ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (বিজিপিএম)-ও চা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বন্‌ধের বিষয়ে দলগত অবস্থান স্পষ্ট না করলেও বিজিপিএম নেতা শক্তিপ্রসাদ শর্মা জানিয়েছেন, তাঁরা শ্রমিকদের সঙ্গেই রয়েছেন। যদিও সোমবার সকাল থেকে চা শ্রমিকদের ডাকা বন্‌ধে দৃশ্যত তেমন প্রভাব পড়েনি কালিম্পং জেলায়। বস্তুত, কালিম্পং জেলায় চা-বাগানের সংখ্যা খুব বেশি নেই। পাহাড়ে চা-বাগানের সিংহভাগই দার্জিলিং জেলায়। কালিম্পঙে বন্‌ধের বিশেষ প্রভাব না পড়ার নেপথ্যে এটি অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন একাংশ। তবে দার্জিলিং জেলার পাহাড়ি এলাকায় এই বন্‌ধ শেষ পর্যন্ত কতটা প্রভাব ফেলবে, সে দিকে নজর থাকছে শ্রমিক সংগঠনগুলির। যদিও শ্রমিক সংগঠনগুলির তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা চালকদের অনুরোধ করবেন গাড়ি না চালানোর জন্য।

প্রসঙ্গত, চা শ্রমিকদের দাবিদাওয়া সংক্রান্ত বিষয়ে অতীতে বিভিন্ন সময়ে সরকার পক্ষকে হস্তক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে। সোমবার যখন চা শ্রমিকদের সংগঠনগুলির ডাকে পাহাড়ে বন্‌ধ চলছে, তখন ঘটনাচক্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়িতেই রয়েছেন। প্লাবন পরিস্থিতির প্রস্তুতি নিয়ে রবিবার উত্তরের জেলাগুলিকে নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন। সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ শিলিগুড়ি থেকে বাগডোগরা হয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা তাঁর। সোমবার সকালে উত্তরবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আর কোনও ঘোষিত কর্মসূচি নেই।

Darjeeling Tea Garden Workers Kalimpong
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy