ধানী ওরাওঁয়ের ‘ঘর’। —নিজস্ব চিত্র।
শুধু ধানী ওরাওঁ বা তার স্ত্রী নন। আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের মধু চা বাগানে ‘অপুষ্টিতে ভুগছেন’ আরও ৩০ জন চা শ্রমিক। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনই অভিযোগ করলেন পশ্চিমবঙ্গ চা মজদুর কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিনয় কেরকাট্টা।
সম্প্রতি অনাহারে, অপুষ্টিতে ভুগে বিনা-চিকিৎসায় মধু চা বাগানের শ্রমিক ধানী ওঁরাওয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। বিনয় জানিয়েছেন, ধানী ও তাঁর স্ত্রী ছাড়াও মধু বাগানে আরও ৩০ জন স্থায়ী, অস্থায়ী ও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক অপুষ্টিতে ভুগছেন। তাঁদের কেউ-কেউ রেশন পেলেও, পুষ্টিকর খাদ্য পাচ্ছেন না। ঠিক সময়ে বেতন না মেলায় বাজার থেকে কিনে খাবারের সংস্থান করতে পারছেন না পরিবারের জন্য। বাধ্য হয়ে চা গাছের ফুল-পাতা তুলে রান্না করে খাচ্ছেন শ্রমিকেরা। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিনয় অভিযোগ করেন, ‘‘ভোটের মুখে জনপ্রতিনিধিরা আসেন। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। ভোট মিটে গেলে, তাঁরা আবার শ্রমিকদের কথা ভুলে যান। ফিরেও তাকান না শ্রমিকদের দিকে।’’
শুধু মধু বাগান নয়, উত্তরের অন্য বাগানেও শ্রমিকদের অনাহারে মৃত্যু হচ্ছে বলে দাবি ইউটিইউসির (ইউনাইটেড ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস) রাজ্য সভাপতি নির্মল দাসের। চিকিৎসা পরিষেবা না মেলার ফলেও অনেকে মারা যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ। নির্মল দাস বলেন, ‘‘অনেক বাগানেই তো শ্রমিকদের করুণ অবস্থা। সেটা কারও নজরে আসছে না? আসলে বর্তমান তৃণমূল সরকার চা শ্রমিকদের কথা ভাবে না। আমরা চা শ্রমিকদের এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি পথে নামতে চলেছি।’’
অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা সাতালি গ্রাম পঞ্চায়েত উপপ্রধান ইসদর খারিয়া পাল্টা বলেছেন, ‘‘দীর্ঘ আট বছর বাগান বন্ধ ছিল। মাঝে করোনার বাড়াবাড়ির জন্য লকডাউন ছিল। সে সময়ে তো কোনও শ্রমিকের অনাহারে মৃত্যু হয়নি। তা হলে এখনও এই রকম কোনও ঘটনা ঘটার প্রশ্ন ওঠে না। অনেকে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থের জন্য এই রকম অভিযোগ করছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা সব সময় শ্রমিকদের পাশে ছিলাম, থাকব। ধানী ওঁরাও যখন জীবিত ছিলেন, তখন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে তাঁকে অল্প কাজ দেওয়া হত। এ ছাড়া, যখন তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সমস্যা ছিল, তখন আমাদের সংগঠনের সদস্যরা উদ্যোগী হয়ে তাঁকে টাকা দিয়ে আসতেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy