—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পাতা তোলার নির্দেশিকা রয়েছে। কিন্তু চা গাছে পাতার দেখা নেই। ভারতীয় চা পর্ষদের নির্দেশ থাকলেও, সোমবার থেকে ডুয়ার্স এবং তরাইয়ের প্রায় কোনও বাগানেই চা পাতা তোলা হল না। চা বাগানের শ্রমিকদের ‘ছুটি’ই বহাল থাকল। চা কারখানার দরজা খুললেও চলল না যন্ত্র। মরসুমের শুরুতে প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর চা পাতা তোলায় এমন পরিস্থিতি কার্যত ‘নজিরবিহীন’ বলে দাবি ওয়াকিবহালদের।
চা পরিচালকদের দাবি, শুখা মরসুমের পরে, চা পাতা তোলার নির্দেশিকা পর্ষদ থেকে জারি করলেও দেখা গিয়েছে, কিছু বাগান পাতা তুলতে দেরি করে। বাগানের চা গাছের পাতাগুলি পরিপূর্ণ হওয়ার সময় পায়। কিন্তু পর্ষদ পাতা তুলতে বলেছে, অথচ, চা গাছে পাতা নেই, এমন পরিস্থিতি সচরাচর হয়নি বলেই দাবি। চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেকেরই আশঙ্কা, এই পরিস্থিতির প্রভাব চায়ের বাজারে পড়বে। প্রথম ‘ফ্লাশ’-এর স্বাদ এবং গন্ধ কতটা বজায় থাকবে তা নিয়ে সংশয় থাকছে। খারাপ মানের চা তৈরির প্রবণতাও বাড়বে।
চা বিশেষজ্ঞদের দাবি, শীতকালে চা গাছের মাথার দিকের ডালপালা কেটে ফেলার পরে, নতুন করে পাতা আসতে অন্তত দু’মাস সময় লাগে। এ বছর ২৩ ডিসেম্বর চা পাতা তোলা বন্ধ হয়েছে পর্ষদের নির্দেশে। দু’মাসের সময় ধরলে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে পাতা তোলার নির্দেশিকা দেওয়া উচিত ছিল বলে পর্ষদের দাবি। যদিও পর্ষদ নির্দেশ দিয়েছিল ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে পাতা তোলা যাবে। পর্ষদের পরিচালনা বিভাগের এক কর্তার কথায়, “চা পাতা তোলার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে। পাতা তুলতেই হবে এমন নয়। যে বাগানে পাতা নেই, তারা পরে তুলতেই পারে।”
নির্দেশিকা নিয়ে আপত্তি তোলার একাধিক কারণও রয়েছে। প্রতি বছর কবে থেকে পাতা তোলা শুরু হতে পারে তা নিয়ে চা পর্ষদ আবহাওয়া এবং চা বাগিচায় সমীক্ষা করে। এ বার তা করা হয়েছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ছোট চা বাগানের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা’-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “চা পাতা তোলার ছাড়পত্র রয়েছে। পাতা নেই। এই পরিস্থিতির সুযোগে কম খরচে বেশি লাভের আশায় অনেকেই খারাপ অপরিণত পাতা দিয়ে চা বানানোর চেষ্টা করবেন। এ সব রুখতেই তো পাতা তোলা বন্ধ রাখা হয়। সেটাই তো হচ্ছে না।”
চা পরিচালকদের দাবি, এ বছর জাঁকিয়ে শীত পড়েছিল। বৃষ্টিও হয়নি। গাছে গাছে পাতা আসতে সময় লাগবে। বটলিফ কারখানা মালিকদের উত্তরবঙ্গের সংগঠনের সম্পাদক সঞ্জয় ধানুটি বলেন, “কারখানা খোলার অনুমতি মিলেছে। পাতা আসেনি। সময় হলে, তখনই পাতা আসবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy