E-Paper

উত্তরপত্র মূল্যায়নে আরও যত্নশীল হতে হবে

মাধ্যমিকের ফলাফলে দেখা যায়, মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৬৬ জন পরীক্ষার্থী।

শঙ্খনাদ আচার্য

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫ ০৮:৩২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘ছাত্রদলের গান’ কবিতার শুরুতেই বলছেন, ‘‘আমরা শক্তি আমরা বল / আমরা ছাত্রদল।’’

এ বিষয়ে কোন দ্বিমত নেই, পৃথিবীর যে কোনও জাতির সার্বিক ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা ঠিক করে দেয় সে দেশের তারুণ্যের প্রতীক এই ছাত্রদল। ছাত্রদের ভবিষ্যৎ আবার অনেকটাই নির্ভর করে সে দেশের পরীক্ষা ব্যবস্থার উপরে। দেশ-কাল ভেদে এই পরীক্ষা ব্যবস্থার ‘মেরুদণ্ড’ হলেন পরীক্ষকেরা, অর্থাৎ সম্মানীয় শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ। কিন্তু পরীক্ষকদের সামান্যতম উদাসীনতায় ছাত্রছাত্রীদের ফলাফল আশানুরূপ না হওয়ায় তাদের মনোবল ভেঙে গেলে, ভবিষ্যতে রাষ্ট্র বা সমাজকে শক্তি জোগাবে কারা?

এ বছর আমাদের রাজ্যে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল পরবর্তী পুনর্মূল্যায়নে মেধা তালিকায় বিরাট পরিবর্তন এবং অবিশ্বাস্য ভাবে নম্বর বেড়ে যাওয়ার ফলে এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক নয় কি? তবে এই প্রশ্নের যথার্থ উত্তর দিতে গেলে প্রয়োজন আমাদের অর্থাৎ শিক্ষককুলের আত্মসমালোচনার।

এ বছর মাধ্যমিকের ফলাফলে দেখা যায়, মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৬৬ জন পরীক্ষার্থী। অথচ উত্তরপত্রের পুনর্মূল্যায়নের ফলাফল প্রকাশিত হতে দেখা যায়, সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫-এ । এই যে ‘প্রথম দশে’ নতুন করে নয় জন জায়গা করে নিল, তারা কিন্তু মূল ফলাফল প্রকাশের পরে প্রচারের আলো থেকে অনেক দূরেই রয়ে গেল। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় সাফল্যের উদযাপনে তারা ব্রাত্য রয়ে গেল।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় ছয় বার জায়গা করে নেওয়া উত্তরের এক স্বনামধন্য বিদ্যালয়ের ১১৩ জন স্ক্রুটিনির জন্য আবেদন করে। যার মধ্যে ৭০ জনের নম্বর বৃদ্ধি পেয়েছে। পর্ষদ প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, স্ক্রুটিনিতে ১০ হাজার ৬০ জনের নম্বর বদলেছে। রিভিউয়ে ১ হাজার ১৮২ জনের নম্বর বদলেছে।

উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রেও ফলাফল পরবর্তী পুনর্মূল্যায়নে প্রায় একই রকম চিত্র ধরা পড়েছে। এ ক্ষেত্রেও পুনর্মূল্যায়নের পরে মেধা তালিকায় নতুন করে এক জন জায়গা করে নিয়েছেন। একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক পরীক্ষার্থীর নম্বর ১৭ থেকে ৭১-এ বদলে গিয়েছে। প্রথম শ্রেণির এক সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উচ্চ মাধ্যমিকে পুনর্মূল্যায়নের পরে ৭ হাজার ৭০১ জনের নম্বর বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে নয় জন পরীক্ষার্থীর নম্বর ৩১-এর উপরে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ফলাফল থেকে অন্তত একটা জিনিস পরিষ্কার, হয় পরীক্ষকদের তরফে বা নম্বর মার্কশিটে তোলার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও গাফিলতি ছিল। এ ক্ষেত্রে সিংহভাগ দায় বর্তায় পরীক্ষকদের উপরেই। আমাদের অর্থাৎ শিক্ষককুলকে উত্তরপত্র যথাযথ মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আরও বেশি যত্নশীল ও আন্তরিক হতে হবে। তবেই শিক্ষার্থীদের দেখা স্বপ্ন সফল হবে।

শিক্ষক, গোপালনগর

এম এস এস হাই স্কুল (উঃ মাঃ) দিনহাটা, কোচবিহার

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Siliguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy