E-Paper

শাবকের দেহ ফেলে রেখে দিয়ে মা হাতি ফিরে গেল জঙ্গলে

শনিবার ভোরে বানারহাটের কারবালা চা বাগানের ১২৪ নম্বর সেকশনের নিকাশি নালায় একটি হস্তিশাবকের দেহের হদিস মেলে। প্রাথমিক ভাবে বনকর্মীদের সন্দেহ, নিকাশি নালায় পড়েই শাবকটির মৃত্যু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:১৪
চোখে জল। তখনও নিথর শাবককে ঠেলেই চলেছে মা হাতি। বানারহাটের কারবালা চা বাগানে। শনিবার বিকেলে।

চোখে জল। তখনও নিথর শাবককে ঠেলেই চলেছে মা হাতি। বানারহাটের কারবালা চা বাগানে। শনিবার বিকেলে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।

সব চেষ্টাই বিফল হল মায়ের। শাবক যে আর বেঁচে নেই তা বুঝে জঙ্গলে নিজের দলের কাছে ফিরে গেল মা হাতি। প্রায় ২৪ ঘণ্টা মৃত শাবকের দেহ আগলে রেখেছিল সে। রবিবার ভোরে নিরাশ হয়েই জঙ্গলে ফিরল সন্তানহারা মা। ফেরার সময়েও প্রায় শ’খানেক মিটার টেনেহিঁচড়ে মৃত শাবকের দেহ নিয়ে যায় হাতিটি। বনকর্মীদের একাংশের ধারণা, সন্তানের দিক থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে চা বাগানের মাঝখানে দেহ ফেলে চলে যায় হাতিটি। দূর থেকে তার গতিবিধির উপরে নজর রেখেছিলেন বনকর্মীরা। পরে এ দিন দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ হস্তিশাবকের মৃতদেহ উদ্ধার করেন তাঁরা।

শনিবার ভোরে বানারহাটের কারবালা চা বাগানের ১২৪ নম্বর সেকশনের নিকাশি নালায় একটি হস্তিশাবকের দেহের হদিস মেলে। প্রাথমিক ভাবে বনকর্মীদের সন্দেহ, নিকাশি নালায় পড়েই শাবকটির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ওই হস্তিশাবকের দেহ উদ্ধার করতে পারছিলেন না বনকর্মীরা। দেহ আগলে রেখেছিল মা হাতিটি। বনকর্মীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল সে। মায়ের রাগ গিয়ে পড়ে বনকর্মীদের গাড়ির উপরেও। কী ভাবে মৃতদেহ উদ্ধার করা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন বন দফতরের কর্তারা। তবে তাঁরা এ ব্যাপারে কোনও তাড়াহুড়ো করতে চাননি।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ২টো নাগাদ শাবকের দেহ ফেলে লাগোয়া রেতির জঙ্গলে ঢুকে যায় মা হাতি। সেখানে অপেক্ষায় ছিল তার দলের অন্যরা। তবে তখনই দেহ সরানোর চেষ্টা করেননি বনকর্মীরা। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, তড়িঘড়ি দেহ উদ্ধার করার পরে মা হাতি যদি ওই এলাকায় আবার ফিরে আসে, শাবকের দেহ দেখতে না পেলে সে আশপাশের এলাকায় তাণ্ডব চালাতে পারে। আক্রমণাত্মক হয়ে ক্ষতি করতে পারে অনেক কিছুরই। সেই আশঙ্কা মাথায় রেখেই রবিবার দুপুর পর্যন্ত মা হাতিটির ফেরার অপেক্ষা করেন বনকর্মীরা। তার দলের অবস্থান বুঝতে চালানো হয় তল্লাশি। জঙ্গলে ওড়ানো হয় ড্রোন ক্যামেরাও। দুপুরে যখন বনকর্মীরা পুরোপুরি নিশ্চিত হন যে মা হাতির ফেরার কোনও সম্ভাবনা আর নেই, তখনই শাবকের দেহ তুলে ময়না তদন্তে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “যে ভাবে মা তার সন্তানের দেহ আগলে রেখেছিল, তা দেখে চোখ জল ভরে গিয়েছিল। তবে আমরা আশঙ্কা করছি, মায়ের রাগ এখনও হয়তো কমেনি। তাই কিছুটা হলেও আতঙ্কে রয়েছি।” জলপাইগুড়ি বন বিভাগের আধিকারিক বিজয় বিকাশ বলেন, “ওই এলাকায় বনকর্মীদের টহল বাড়ানো হয়েছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Elephant Elephant Calf Death banarhat Jalpaiguri Tea Garden

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy