Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

পাপালির শহরে মাঠের আকাল

যে শহরের ছেলে ঋদ্ধিমান সাহা, কামাল হাসান, দেবব্রত দাস, সে শহরে কেন তারপরে আর কোনও ক্রিকেটার নেই?এ মাসের গোড়ায় শিলিগুড়িতে এসে এই প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্ল। উন্নত কোচিংয়ের, পরিকাঠামোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫২
Share: Save:

যে শহরের ছেলে ঋদ্ধিমান সাহা, কামাল হাসান, দেবব্রত দাস, সে শহরে কেন তারপরে আর কোনও ক্রিকেটার নেই?

এ মাসের গোড়ায় শিলিগুড়িতে এসে এই প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্ল। উন্নত কোচিংয়ের, পরিকাঠামোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন তিনি। ইরানি ট্রফিতে ঋদ্ধিমানের কাঁধে ভর দিয়ে অবশিষ্ট ভারত দলের জয়ের পর এ প্রশ্ন তুলেছেন শিলিগুড়ির ক্রিকেটপ্রেমীদের অনেকেই। যে শহর থেকে ঋদ্ধিমানের মতো ক্রিকেটার উঠে এসেছে, সেখানে এমনিতেই ক্রিকেট নিয়ে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে উৎসাহ রয়েছে। তা কাজে লাগাতে সঠিক পরিকাঠামো, ক্রিকেট মাঠ কেন করা হচ্ছে না, উদ্যোগের অভাব কেন, প্রশ্ন তা নিয়েই।

বস্তুত, শিলিগুড়িতে ক্রিকেট খেলার মাঠের অভাব এবং পরিকাঠামোর ঘাটতির কথা স্বীকার করেন ঋদ্ধিমানের কোচ তথা শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের ক্রিকেট সচিব জয়ন্ত ভৌমিকও। মাঠের অভাব এতটাই যে, গত সোমবার থেকে তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয়ের মাঠে সুব্রত কাপের খেলা শুরু করতে হয়েছে বলে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের প্রথম ডিভিশন ক্রিকেট লিগ মাঝপথে বন্ধ রাখতে হয়েছে। শহরের উপকন্ঠে উত্তরায়ণ উপনগরীর মাঠে চলছে সুপার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ। সেই মাঠও নিজেদের হাতে নেই বলে সঠিক পরিচর্যা করতে পারেন না মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তারা। ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষ বলেন, ‘‘মাঠ, উন্নত কোচিংয়ের সমস্যার বিষয়গুলি নিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে শীঘ্রই কথা বলব।’’

শহরে অগ্রগামী ক্লাব, বাঘা যতীন অ্যাথলেটিক ক্লাব, জাগরণী সঙ্ঘ, শিবমন্দিরের সরোজিনী সঙ্ঘের মতো ক্লাবগুলিতে ক্রিকেট কোচিং হয়। মাঠ, সরঞ্জাম, ভাল কোচের সমস্যা নিয়ে তাদেরও দুর্ভোগে পড়তে হয়। জয়ন্তবাবুদের ক্লাব অগ্রগামী সঙ্ঘের অনুশীলনও হয় ছোট মাঠে। তিনি বলেন, ‘‘বড় মাঠ পেলে অনুশীলন করাতে অনেক সুবিধা হত। যে পরিকাঠামো রয়েছে, তার মধ্যেই কষ্ট করে ক্রিকেটার তৈরির চেষ্টা করতে হচ্ছে।’’

কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে পিচ করে ক্রিকেটের অনুশীলন হলে আই লিগের মতো বড় ফুটবল ম্যাচের ক্ষেত্রে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। গত কয়েক বছর ধরে এই মাঠে ক্রিকেট কার্যত বন্ধ রাখা হয়েছে। মাঠের এক ধারে উইকেট করে এ সময় সিএবি-র কোচিং চলে। জয়ন্তবাবুর কথায়, শিলিগুড়ি থেকে বর্তমানে অনূর্ধ্ব ২৩ বাংলা দলে খেলছে শাহাবাজ আনওয়ার, অনূর্ধ্ব ১৪ বংলা দলে রয়েছে অংশুমান চক্রবর্তী, অনূর্ধ্ব ১৮ দলে খেলছে মোজাম্মেল রাজা রহমানদের মতো উঠতি প্রতিভা। পরিকাঠামো ভাল হলে, উন্নত কোচিংয়ের ব্যবস্থা করা গেলে আরও বেশি ক্রিকেটার তুলে আনা সম্ভব হবে।

শিবমন্দিরের আঠেরোখাইতে সরোজিনী সঙ্ঘের ক্রিকেট কোচিং রয়েছে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঠে তাঁরা খেলেন। তবে ওই মাঠেও মেলা, অনুষ্ঠান, গাড়ি পার্কিংয়ের সমস্যার জেরে খেলা বন্ধ রাখতে হয়।

ক্লাবের সম্পাদক দীপ্তেন্দু ঘোষ জানান, ২০১১ সাল থেকে চার বছর অনূর্ধ্ব ১৫, ১৭ এবং ১৯ জেলার ক্রিকেটারদের নিয়ে সিএবি-র কোচিং ওই মাঠে হত। সমস্যার জেরে গত কয়েক বছর ধরে সেখানে করানো যাচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Wriddhiman Saha Field
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE