Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বিক্ষোভের মুখে

“নেতারা কেউই ঘর ছেড়ে বেরোন না। প্রতিনিধিদল এত পুলিশ নিয়েও সিতাই গেলেন না। কী করে ভরসা করি!”

খুলল দরজা: মাথাভাঙায় দলের দফতর খুলে দিলেন সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে অন্য নেতা-নেত্রীরা। নিজস্ব চিত্র

খুলল দরজা: মাথাভাঙায় দলের দফতর খুলে দিলেন সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে অন্য নেতা-নেত্রীরা। নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৯ ০৫:১৭
Share: Save:

কোথাও বিজেপি কর্মীরা ঘিরে ধরে স্লোগান দিলেন। তেড়েও গেলেন। কোথাও তৃণমূলের কর্মীরাই বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন। বৃহস্পতিবার দলকে চাঙ্গা করতে কোচবিহার সফরে এসে বারবার বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের পাঠানো প্রতিনিধিদল। শেষ অবধি পুলিশের ঘেরাটোপে কোনও রকমে তাঁদের সার্কিট হাউসে পৌঁছে দেওয়া হয়। ক্ষোভের এমন আঁচ দেখে হাজারের উপর পুলিশ নিয়েও সব থেকে উপদ্রুত এলাকা সিতাইয়ে যাওয়ার সাহস করলেন না ওই প্রতিনিধিরা। ওই সিতাইতেই তৃণমূলের একাধিক পার্টি অফিস গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০ জনের বেশি তৃণমূলের নেতা-নেত্রীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। ওই এলাকার বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া নিজে বাড়ি ছাড়া হয়ে রয়েছেন।

তৃণমূলের ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, মালা রায় এবং প্রতিমা মণ্ডল। শেষ বিকেলে মাথাভাঙায় দলে যোগ দেন মৌসম নুর। প্রসূন বলেন, “যে কেউ বিক্ষোভ দেখাতেই পারেন। কিন্তু বিজেপি বিক্ষোভের নামে যা করছে, তা ঠিক নয়। দলের কর্মীদের উপর আক্রমণ হলে তার ফল ভাল হবে না।” তাঁর দাবি, অল্প সময়ের মধ্যেই অবস্থার পরিবর্তন হবে। বলেন, “দলের নেতাদের ব্যবহার ঠিক নেই। তাই এমন অবস্থা হয়েছে। নেত্রীকে রিপোর্ট দেব।” তৃণমূল কর্মীদের একটি অংশ অবশ্য এই কথায় ভরসা পাচ্ছেন না। তাঁদের কয়েক জন বলেন, “নেতারা কেউই ঘর ছেড়ে বেরোন না। প্রতিনিধিদল এত পুলিশ নিয়েও সিতাই গেলেন না। কী করে ভরসা করি!”

এদিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ কোচবিহার থেকে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল রওনা হয় তুফানগঞ্জের দিকে। ওই দলে ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ও। পথে একাধিক জায়গায় কালো পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। তুফানগঞ্জে পুলিশের ঘেরাটোপে পার্টি অফিস খুলে ভিতরে বসেন প্রতিনিধিরা। তার মধ্যেই ওই পার্টি অফিস ঘিরে ধরে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুরু হয়। পার্টি অফিসের দিকে তেড়েও যান বিজেপি কর্মীরা। পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। ওই অবস্থার মধ্যেই ক’জন তৃণমূল কর্মী সেখানে উপস্থিত হয়ে তাঁদের অসুবিধের কথা জানান। পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আফতার আলি অভিযোগ করেন, তাঁকে সামাজিক ভাবে বয়কট করা হয়েছে। তাঁদের থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেন নেতারা। পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে তৃণমূল নেতারা পাল্টা স্লোগান দেন।

সেখান থেকে বেরিয়ে বক্সিরহাট যান তাঁরা। সেখানেও পার্টি অফিস ঘিরে ফেলেন বিজেপি কর্মীরা। মারমুখী হয়ে ওঠেন তাঁরা। তৃণমূলের ওই ব্লকের নেতা স্বপন সাহা সহ আরও ২ কর্মী উপস্থিত হন। পার্টি অফিস খুলে দেন নেতারা। ওই প্রতিনিধি দলের সঙ্গেই স্বপন এলাকা ছাড়েন। এই অবস্থায় সিতাইয়ের পথে রওনা হয়েও পেটলা থেকে ফিরে যায় প্রতিনিধিদল। খবর ছিল, ওই এলাকায় গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। মাথাভাঙার পঞ্চানন মোড়ে যে অফিসে বিজেপি ভাঙচুর করেছে, সেখানে যান নেতারা। পুরনো কর্মীদের গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগে সেখানে তৃণমূলের একটি অংশ রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। প্রসূন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে চলার পরামর্শ দেন।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prasun Banerjee TMC Cooch Behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE