গ্রাম ধ্বংসের হুমকি দিচ্ছেন তৃণমূল নেতা। —নিজস্ব চিত্র।
ওসি না শোধরালে ফাঁড়িতে বেঁধে তালা বন্ধ করে রাখা হবে। বুধবার প্রকাশ্য জনসভায় পুলিশ আধিকারিককে এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান। বৃহস্পতিবার বিতর্কে জড়ালেন চোপড়া ব্লকেরই হাপতিয়াগছ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শাকির আহমেদ। তাঁর একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। যেখানে বোমা-বন্দুক নিয়ে গ্রাম উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে শোনা গিয়েছে শাকিরকে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, অনেককে নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক করছেন উপপ্রধান। আর সেখানে স্থানীয় ভাষায় এক জনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আজকের দিনে বোমা-বন্দুক সাধারণ ব্যাপার। এত বোমা-বন্দুক আছে যে মহল্লা ভাঙতে ১০ মিনিট লাগবে। বোমা-বন্দুকের টেনশন আমি করি না।’’ স্থানীয়দের দাবি, যিনি এই হুঙ্কার দিচ্ছেন তিনি শাকির।
চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি হাপতিয়াগছ গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়বিল্লা এলাকায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে শরিকি বিবাদ বাধে শাকির এবং তাঁর খুড়তুতো ভাইদের মধ্যে। সেই সময় গুলি চালানো এবং বোমা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছিল। ওই ঘটনায় কয়েক জন গুলিবিদ্ধ হন। অনেকেরই অভিযোগ, ওই সময় যারা হামলা চালিয়েছিল তাদের সঙ্গেই বসে কথা বলতে দেখা গিয়েছে হাপতিয়াগছ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে।
চোপড়ার তৃণমূল শিবিরের একটি অংশের সূত্রে জানা গিয়েছে, শাকির এবং চোপড়া তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তাহের আহমেদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে কোন্দল চলছে। ফতেয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা তাহের স্থানীয় বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই বগটুই-কাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য ‘‘গোপন মিটিংয়ের যে ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, উপপ্রধান যে ভাবে একটা গ্রাম শেষ করে দেওয়ার কথা বলছেন তা মেনে নেওয়া যায় না। ভিডিয়ো দেখার পর আমরা পুলিশ প্রশাসন কে অভিযোগ করেছি।’’
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বিজেপি নেতা সুরজিৎ সেনের আশঙ্কা, ‘‘চোপড়ায় এত পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র আছে তা উদ্ধার করতে না পারলে এখানে হয়তো দ্বিতীয় রামপুরহাট হবে। শাসকদলের ইন্ধনে তাদের দলেরই লোককে মারতে আর এক পক্ষ তৈরি হয়ে আছে। অথচ প্রশাসনের হাত বাঁধা।’’
গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের চোপড়া ব্লকের সভাপতি প্রীতিরঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘উপপ্রধান যা বলেছেন, তা মনে হয় সঠিক বলেননি। উনি হয়তো উত্তেজিত হয়ে বলে ফেলেছেন। এই গোলমালটা ওদের ব্যক্তিগত। তাহের আহমেদ সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযোগ করেও ঠিক করেননি। আসলে ওঁদের দু’জনের মধ্যে ব্যক্তিগত সমস্যা আছে। আগামী রবিবার বৈঠক ডেকেছি। আশা করি সমস্যা মিটে যাবে। পুলিশ প্রশাসনকে আমরা বলেছি, বোমা-বারুদ উদ্ধার করতে। তবে উপপ্রধান মনে হয় ওই ভাবে বলতে চাননি।’’ এ নিয়ে অবশ্য অভিযুক্ত উপ প্রধানের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy