Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Land Dispute

পুরপ্রধানেরই জমি ‘চুরি’! তৃণমূলের কৃষ্ণেন্দুর আঙুল ব্যবসায়ীর দিকে, বিবাদ চড়ছে মালদহ শহরে

রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণের দাবি, ওই জমিটি বংশানুক্রমে তাঁর পরিবারের। অন্য দিকে, ব্যবসায়ীর দাবি, কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ প্রোমোটিং করার উদ্দেশ্যে জমি দখলের চেষ্টা করছেন।

জমি কার?

জমি কার? গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:০০
Share: Save:

পুরপ্রধান বলছেন, বংশানুক্রমে জমিটি তাঁদের। অন্য দিকে, ব্যবসায়ীর দাবি, জমির যাবতীয় কাগজপত্র, সবই রয়েছে তাঁর হাতে। এখন প্রশ্ন হল, জমি কার! মালদহের রাজমহল রোডের এক টুকরো জমি ঘিরে এই শীতেও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে আম-নগরীর আবহাওয়া।

মালদহ শহরের প্রাণকেন্দ্র রাজমহল রোডের উপর এক টুকরো জমির মালিকানা নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা দাপুটে তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর দাবি, ওই জমিটি তাঁর পরিবারের। এত দিন জমিটির দেখভাল করতেন তাঁর কাকা এবং দাদারা। কিন্তু তাঁদের প্রয়াণের পর জমি দেখভালের দায় গিয়ে পড়ে কৃষ্ণেন্দুর উপর। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, সেই জমিটি নিজের বলে দাবি করে তাতে দোকান করে বসে রয়েছেন এলাকারই এক ব্যবসায়ী দেবাশিস সাহা। দেবাশিসেরও দাবি, ওই জমিটি তাঁর নিজের। কৃষ্ণেন্দু প্রভাব খাটিয়ে জমিটি দখল করার চেষ্টা করছেন। যদিও কৃষ্ণেন্দুর দাবি, এই জমিটি যে দেবাশিসের তা প্রমাণে এখনও পর্যন্ত কোনও নথিই তিনি নাকি দেখাতে পারেননি। অথচ, ব্যবসায়ী দাবি করছেন, যাবতীয় জমি সংক্রান্ত নথিপত্র তাঁর কাছে রয়েছে।

রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু বলছেন, ‘‘ওই জায়গাটি আমাদের পরিবারের। এক সময় আমার কাকা, দাদারা এই সব জমিজমা দেখাশোনা করতেন। আমি পারিবারিক সম্পত্তির ব্যাপারে নাক গলাতাম না। বর্তমানে দাদা ও কাকারা প্রয়াত। এখন আমাদের পারিবারিক সম্পত্তি দেখাশোনা করতে হচ্ছে। ওই ব্যবসায়ী যে জায়গায় ব্যবসা চালাচ্ছেন, সেই জায়গাটি আসলে আমাদের পরিবারের। তার আশেপাশের জায়গাও আমাদেরই। এটা সবাই জানে। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে জমিটি দখল করার চেষ্টা করছেন ওই ব্যবসায়ী।’’

পাল্টা ব্যবসায়ী দেবাশিসের দাবি, কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ ওই জমির দখল নিয়ে প্রোমোটিং করতে চাইছেন। কিন্তু ব্যবসায়ী জমি ছাড়তে চান না। তিনি বলছেন, ‘‘লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। চেয়ারম্যান পদের প্রভাব খাটিয়ে কৃষ্ণেন্দু আমাকে নানা ভাবে হেনস্থা করছেন। আমি আতঙ্কিত। থানায় অভিযোগ জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। তাই এ বার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। আশা করব, মুখ্যমন্ত্রী কঠোর পদক্ষেপ করবেন।’’

এ বিষয়ে সাবধানী প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিরোধী বিজেপি। দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা ইংরেজবাজার পুরসভার বিরোধী দলনেতা অম্লান ভাদুড়ির দাবি, গোটা ঘটনাটিই আদালতের বিচারাধীন। তাই আগ বাড়িয়ে এ নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের পুলিশ, তৃণমূলের ভূমি দফতর এবং তৃণমূলের জেলাশাসক যেন বিষয়টি ভাল করে খতিয়ে দেখেন। তদন্ত হোক। যদি সত্যিই বেআইনি কোনও ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা অবশ্যই তার প্রতিবাদ করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Krishnendu Narayan Choudhury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE