২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের কাছে ৫৭ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন দিনহাটার তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ। পরে, অবশ্য উপনির্বাচন জয়ী হন তিনি। দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু দু’বছর পরেও সে হারের কথা ভুলতে পারেননি উদয়ন। মঙ্গলবার সে কথা উল্লেখ করে সমাজ মাধ্যমে ‘তৃণমূলপ্রেমী মুখোশধারী বন্ধুদের’ কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি। গুঞ্জন উঠেছে, দলের মধ্যে ‘বিরোধী’ শিবিরকে বার্তা দিতেই কি উদয়ন ওই ‘পোস্ট’ করেছেন? উদয়ন অবশ্য বলেন, ‘‘সবার কথা আমি বলিনি। সবাই ভোট না দিলে তো আর ওই জায়গায় পৌঁছতে পারতাম না। কিছু লোকের কথা বলেছি। যারা মিছিল-মিটিংয়ে থেকেও ভোট দেননি।’’ তবে তাঁরা কারা, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি উদয়ন।
তিনি ওই পোস্টে বামেদেরও নিশানা করেছেন। তাঁর দাবি, বামেরা নিজেদের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করেছেন। বামেরা অবশ্য উদয়নের বক্তব্যেকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। বাম নেতা তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অক্ষয় ঠাকুর বলেন, ‘‘দিনহাটা শুধু নয়, গোটা রাজ্যের যে অবস্থা, তাতে তৃণমূল ছেড়ে দলে দলে মানুষ বামেদের পক্ষে আসছে। তাতে তৃণমূল নেতারা প্রলাপ বকছেন। দিনহাটায় আমাদের নিজেদের প্রার্থী ছিল। সেখানে অন্য প্রসঙ্গ আসবে কেন?’’
দিনহাটা বাম আমলে সেই সময়ের মন্ত্রী কমল গুহর ‘খাসতালুক’ বলে পরিচিত ছিল। পরে, কমল-তনয় উদয়ন সেখানে প্রভাব বিস্তার করেন। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনহাটায় উদয়ন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সময় থেকে দলের অন্দরে ‘আদি-নব্য দ্বন্দ্ব’ চাগাড় দেয়। উদয়ন তাঁর ‘পোস্ট’-এ সেই বিরোধী শিবিরকেই নিশানা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। এটুকু বলতে পারি, এখন তৃণমূলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)