Advertisement
E-Paper

বিজেপি নেতাদের জিভ টেনে ছিঁড়ে ফেলার নিদান তৃণমূল বিধায়কের, পাল্টা সন্ত্রাসের অভিযোগ পদ্মের

সম্প্রতি বামনগোলার বেহাল রাস্তাঘাট নিয়ে জনতার রোষে পড়েন বিজেপি সাংসদ। তারই দায় ঠেলেছিলেন রাজ্যের দিকে। খগেন বলেছিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতার রাজ্যে সবাই কাটমানির বিনিময়ে কাজ করেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৫৮

—প্রতীকী চিত্র।

এলাকার সাংসদ এবং বিধায়ক বিজেপির। অথচ তার পরও রাস্তাঘাটের হাল খারাপ। পরিস্থিতির জন্য জনতার ক্ষোভের মুখে পড়ে পাল্টা রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেছিলেন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মূ। তার জবাব এল ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই। এলাকার বিজেপি সাংসদ এবং বিধায়কদের জিভ টেনে ছিঁড়ে নেওয়ার নিদান দিলেন মালদা জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা মালতিপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী।

সম্প্রতি মালদহের বামনগোলার বেহাল রাস্তাঘাট নিয়ে জনতার রোষে পড়েছিলেন খগেন। তারই দায় ঠেলেছিলেন রাজ্য সরকারের দিকে। খগেন বলেছিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে সবাই কাটমানির বিনিময়ে কাজ করেন। শাসকদলের নেতাদের সেই কাটমানি দিলে, তবে উন্নয়ন হয় এলাকার। আর তাই দীর্ঘ দিন ধরে বিজেপির সাংসদ হিসাবে রাস্তা নির্মানের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব দিলেও তাতে কাজ হয়নি। বিজেপির সাংসদ এবং বিধায়কদের প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হয় তৃণমূল নেতৃত্বের নির্দেশে।’’ এই মর্মেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নের মিথ্যা ফিরিস্তি দেন এবং মিথ্যাচার করেন বলে মন্তব্য করেছিলেন খগেন। মঙ্গলবার তার পাল্টা আব্দুর রহিম বললেন, ‘‘খগেন বাবু বহু কথা বলেছেন। বড় বড় আওয়াজ তুলছেন। অথচ মানুষ কিন্তু এ বার ছেড়ে কথা বলবে না। যে মুখ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। যে মুখ দিয়ে মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন, সেই মুখ থেকে জিভটা টেনে বের করে মানুষ প্রমাণ করবে যে, মানুষ আপনাদের সঙ্গে নেই।’’ শুধু তা-ই নয়, বিজেপির ওই নেতাদের সমাজছাড়া করার হুঁশিয়ারিও দেন আব্দুর।

মালদার বামনগোলায় মঙ্গলবার তৃণমূলের একটি পথসভায় হাজির ছিলেন আব্দুর। সেই সভা থেকেই বিরোধী বিজেপির সাংসদ খগেন এবং বিধায়ক জুয়েল মুর্মূকে ওই ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। পাল্টা জবাবে এলাকার বিজেপি বিধায়ক জুয়েল বলেন, “তৃণমূল এ ভাবেই এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে।”

তৃণমূল স্থানীয় বাসিন্দাদের উন্নয়নের জন্য কী কী করেছে এবং করবে তার ব্যাখ্যা দিয়ে মঙ্গলবার আব্দুর বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যত বঞ্চনা করুক, খগেন মুর্মু যত বঞ্চনা করুক জুয়েল মুর্মু যত বিরোধিতা করুক আর বিজেপি যত বিরোধিতা করুক সমস্ত রাস্তা তৃণমূল কংগ্রেস করবে করবে। যাঁরা বার্ধক্য ভাতা পাননি তাঁদের কাজ তৃণমূল কংগ্রেস করবে। যাঁরা বাড়ি পাননি তাঁদের ব্যবস্থা তৃণমূল কংগ্রেস করবে।’’

পাশাপাশি, খগেনের আনা অভিযোগের পাল্টা অভিযোগ এনে বলেন, “বিজেপি সাংসদ এলাকার উন্নয়নের টাকা খরচের বিনিময়ে কমিশন নিচ্ছে বলেই কাজে এত দেরি।” মালদার জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, ‘‘খগেন বাবু পাঁচ বছরে সাংসদ কোটায় ২৫ কোটি পান। কিন্তু আমি বলছি তিনি ৩৫ কোটি পান। সাংসদ কোটায় পাঁচ বছর ২৫ কোটি টাকা। আর ১০-১৫ বছর ধরে উনি যে এলাকার বিধায়ক ছিলেন, বাকি টাকা আসে তার দৌলতে। উনি বলতে পারেন রহিম বক্সী গালাগালি করছেন। কিন্তু এই ৩৫ কোটি টাকা কোথায় তার হিসাব দিতে হবে ওঁকে।’’

আব্দুরের কথায়, ‘‘ বামনগোলার মানুষ প্রমাণ করেছেন তাঁরা জাতপাতের রাজনীতি করেন না। তার ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের জন্য যাঁরা কাজ করে তাদেরই সমর্থন করেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুটো জেলা পরিষদ জিতিয়ে, ৫টা গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি জিতিয়ে তা প্রমাণ করে দিয়েছেন মানুষ। বুঝিয়ে দিয়েছেন খগেনবাবুদের বিজেপির স্থান বামনগোলার মাটিতে আর নেই। তাই ওঁরা যতই চেষ্টা করুন বামনগোলার মাটিতে আর বিজেপির ঠাঁই হবে না।’’ তবে একই সঙ্গে আব্দুর জানিয়েছেন, বামনগোলার বিজেপি সমর্থকদের সঙ্গে তাঁদের কোনও লড়াই নেই। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের অধিকারের জন্যও লড়াই করছেন। তাই মমতার হাত শক্তিশালী করতে এই লোকসভা নির্বাচনে যারা সাংসদ এবং বিধায়ক কোটার টাকা খরচের বিনিময়ে কমিশনে খায়, তাদেরকে ছুঁড়ে ফেলতে হবে সমাজ থেকে। উত্তর মালদায় ২০২৬ সালে আমরা নতুন বিধায়ক এবং সাংসদ তৈরি করব।’’

BJP TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy