টোটো চালাতে চালাতে রাস্তায় একটি ব্যাগ কুড়িয়ে পেয়েছিলেন চালক৷ ব্যাগে ছিল ছ’হাজার টাকার একটি সেল্ফ চেক। আর ছিল পাশ বই ও দরকারি কাগজপত্র৷ সেই পাশ বইয়ের সূত্র ধরে ব্যাগের মালিককে খুঁজে তা ফেরত দিলেন সেই গরিব টোটোচালক৷
জলপাইগুড়ি শহরের নানা প্রান্তে যখন একের পর এক কেপমারির ঘটনা ঘটে চলেছে, তখন এ ভাবেই নিজের সততা তুলে ধরলেন মণ্ডলঘাটের কাঁদোপাড়া এলাকার বাসিন্দা, টোটোচালক টুটন দত্ত৷
পান্ডাপাড়া এলাকার বাসিন্দা জয়ন্ত সাহা ও তার স্ত্রী নূপুর এ দিন মোটর সাইকেলে চেপে ডিভিসি রোডে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় যাচ্ছিলেন৷ ব্যাগটি নূপুরদেবীর হাতে ছিল৷ কোনও ভাবে সেটি হাত থেকে রাস্তায় পড়ে যায়৷ কদমতলার কাছে বিষয়টি বুঝতে পারেন তিনি৷ এর পরই মোটর সাইকেল ঘুরিয়ে তাঁরা আবার আগের জায়গায় ফিরে আসেন। কিন্তু ব্যাগটি তখন আর খুঁজে পাননি। জয়ন্তবাবুর কথায়, “রাস্তায় যখন ব্যাগ খুঁজছিলাম, এক ট্যাক্সিচালক তখন জানালেন, এক টোটোচালক একটি ব্যাগ রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছেন৷ কিন্তু তাঁকেও খুজে না পেয়ে দ্রুত ব্যাঙ্কে চলে যাই৷’’ তিনি সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কে চলে যান। সেখানে ঢোকার আগেই দেখেন, ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে টুটন। তাঁর কথায়, ‘‘তাঁকে জিগ্গেস করে জানতে পারি, তিনি আমাদের খোঁজেই ব্যাঙ্কে এসেছেন।’’
বাকিটা বললেন টুটন— “পান্ডাপাড়া লেনে ব্যাগটি কুড়িয়ে পাই৷ অনেককে জিজ্ঞাসা করি৷ কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছিল না।’’ তখন ব্যাগ খুলে পাশ বই থেকে ব্যাঙ্কের তথ্য পান তিনি। তার পরে সেখানে চলে যান জয়ন্তবাবুকে খুঁজতে।
জয়ন্তবাবু বলেন, ‘‘ব্যাগটি আমাদের কাছে পৌঁছতে ওই টোটোচালক যে ভাবে ছুটে ব্যাঙ্কে গিয়েছেন, সেটা ভাবাই যায়না৷ আজকের দিনে কেউ এমনটা করে না৷’’ টুটনের কথায়, ‘‘ব্যাগটি হাতে পেয়ে মনে হয়েছিল, হয়তো গুরুত্বপূর্ণ কিছু রয়েছে৷ তাই দেরি করিনি।’’