Advertisement
১১ ডিসেম্বর ২০২৪
Landslide and Rain in North Bengal

৫০০ কোটি টাকা লোকসান, বিপর্যস্ত পাহাড়ের অর্থনীতি, মুখ্যমন্ত্রীকে পরিদর্শনের আকুতি পর্যটন সংস্থাগুলির

বৃহস্পতিবার ভোরে কালিম্পং জেলার মেল্লি বাজারের কাছে ধস নামে। শুক্রবার সকালে ফের ধস নামে দার্জিলিঙের মিরিক, ঘুম, সুখিয়া পোখরি রোডে। একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। ধস নেমেছে লোয়ার সিটংয়ের ডায়েরি গাঁওয়েও।

ধসে বিপর্যস্ত দার্জিলিং।

ধসে বিপর্যস্ত দার্জিলিং। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কালিম্পং শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:২৪
Share: Save:

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ধস নেমে বিপর্যস্ত পাহাড়। ধীরে ধীরে তিস্তার গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে ১০ নং জাতীয় সড়ক। এখনও পর্যন্ত ৫০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। বড় বিপদের মুখে পাহাড়ের অর্থনীতি। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রীকে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি পরিদর্শনের অনুরধ জানিয়ে বার্তা দিল পর্যটন সংস্থাগুলি।

সিকিম ও কালিম্পঙের ‘লাইফ লাইন’ ১০ নং জাতীয় সড়কের উপর নির্ভর করে রয়েছে এই অঞ্চলের অর্থনীতি। পর্যটন সংস্থাগুলির দাবি, গত ২৯ জুন থেকেই জাতীয় সড়ক বন্ধ। যার দরুন ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে পর্যটন ব্যবসায়। দীর্ঘ দিন ধরে ‘‘সেভ এনএইচ টেন’’ নামক প্রচারও চালাচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, ১০ নং জাতীয় সড়ককে বাঁচাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বা এনএইচপিসি জাতীয় সড়কের ধার বরাবর গার্ড ওয়াল বসানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই কাজ এখনও হয়নি। ফলে ধীরে ধীরে তিস্তাগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে জাতীয় সড়ক।

এমন পরিস্থিতিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। উল্লেখ্য, জুন মাস থেকেই মন্দার মুখ দেখছে পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসা। মাঝে জাতীয় সড়ক পূর্বের অবস্থায় ফেরায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু, টানা চার দিনের বৃষ্টিতে ফের বিপদের মুখে পাহাড় এবং সমতলের একাংশ। কালিম্পং ও দার্জিলিঙের একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। সেলফিদারা, ২৮ মাইল, শ্বেতিঝোরায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ধসের জন্য সতর্কতা জারি হয়েছে। প্রায়শই বন্ধ থাকছে জাতীয় সড়ক। ধস নেমেছে দার্জিলিঙের সিংমারি-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায়। ফলে শীতের মরসুমের বুকিং শুরু হলেও তা আদৌ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, ডুয়ার্সের গরুবাথান হয়ে লাভার রাস্তা বেশ ব্যয়সাপেক্ষ। কাজেই বহু সংখ্যক পর্যটক সেই পথে যেতে রাজি হন না। এই অবস্থায় মাথায় হাত পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের।

এ বিষয়ে হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট স্যানাল বলছেন, ‘‘এটা অশনি সঙ্কেত। জুন মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। জাতীয় সড়ক ১০-এর বিকল্প কিছু নেই। কিন্তু সেটাকে বাঁচাতে শুধু রাজ্য বা পুর্ত দফতরকে এগিয়ে আসলে হবে না৷ কারণ, ১০ নং জাতীয় সড়কের বরাদ্দ এবং তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের। কাজেই তিস্তা থেকে জাতীয় সড়ককে বাঁচাতে গেলে বড় পরিকল্পনার দরকার। তা না হলে আগামী দিনে এই অঞ্চলের অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে পড়বে। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি, তিনি এসে এক বার এই সড়কের পরিস্থিতি দেখে স্থানীয় মানুষের পাশে দাঁড়ান।’’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ভোরে কালিম্পং জেলার মেল্লি বাজারের কাছে ধস নামে। শুক্রবার সকালে ফের ধস নামে দার্জিলিঙের মিরিক, ঘুম, সুখিয়া পোখরি রোডে। একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। ধস নেমেছে লোয়ার সিটংয়ের ডায়েরি গাঁওয়েও। এ ছাড়াও ধসের কবলে দুধিয়া, পানিঘাটা রোড। অন্য দিকে, কালিম্পং জেলার সিংথাম-রংপো রোডের ২০ মাইলে পাহাড় থেকে বোল্ডার নেমে আসায় সেই রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। একই পরিস্থিতি বিরিক ধারায়। পাহাড় থেকে বড় আকৃতির বোল্ডার নেমে আসার ফলে সেই রাস্তাও বন্ধ রেখেছে জেলা প্রশাসন।

অন্য বিষয়গুলি:

Darjeeling Mamata Bandyopadhyay landslide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy