প্রতীকী ছবি।
আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় থেকে সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ—এমনই মামলার বিচার করলেন ‘এক দিনের’ বিচারক দুই রূপান্তরকামী। শনিবার মালদহে অনুষ্ঠিত জাতীয় লোক আদালতে অন্য বিচারকদের সঙ্গে বসেই কাজ করলেন দেবী আচার্য ও প্রিয়া হালদার। আদালতের তরফে বিশেষ সম্মান দেওয়ায় খুশি দু’জনই। একই সঙ্গে ঝুলে থাকা মামলা থেকে নিষ্পত্তি পেয়ে স্বস্তিতে বিচারপ্রার্থীরাও।
জেলা লিগাল সার্ভিস কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে মালদহে প্রায়ই বসে লোক আদালত। তবে করোনা-আবহে লোক বিচার প্রক্রিয়া থমকে যায়। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮ ফেব্রুয়ারি শেষ জাতীয় লোক আদালত অনুষ্ঠিত হয়েছিল মালদহে। এ দিন মালদহ এবং চাঁচলে জাতীয় লোক আদালতের মোট আটটি বেঞ্চ বসে। কর্তৃপক্ষের দাবি, আদালতে পৌঁছায়নি এমন ১৬২৪টি মামলা এবং আদালতে দীর্ঘ দিন ধরে ঝুলে থাকা ৪০০টি মামলা নিয়ে এ দিন আলোচনা হয়। অধিকাংশ মামলারই নিষ্পত্তি হয়ে যায় বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
মালদহ জেলা লিগাল সার্ভিসের সচিব অর্পিতা ঘোষ বলেন, “করোনা-আবহে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় লোক আদালত বসানো হয়েছে। আদালতে প্রবেশের সময় সকলেরই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একই সঙ্গে থার্মাল চেকিং এবং স্যানিটাইজ়ারেও ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
কর্তৃপক্ষের দাবি, সাধারণ মানুষ যাতে লোক আদালত সম্পর্কে জানতে পারেন তার জন্য জেলা জুড়েই মাইকিং করে প্রচার করা হয়েছে। লিফলেটও বিলি করা হয়েছে। ফলে আদালতে ভিড় উপচে পড়েছিল বলে দাবি করেন কর্তৃপক্ষ।
এ দিন লোক আদালতে বিচারকের আসনে জেলার অন্য কোর্টের বিচারক, আইনজীবীদের সঙ্গে হাজির ছিলেন দুই রূপান্তরকামী দেবী আচার্য এবং প্রিয়া হালদার। তাঁরা দু’জনই মালদহের বাসিন্দা। দেবীর আগে নাম ছিল দেবাশিস এবং প্রিয়ার নাম ছিল প্রসেনজিৎ। এক দিনের জন্য বিচারকের মর্যদা পেয়ে খুশি দু’জনেই। তাঁরা বলেন, “সমাজের একাংশ এখনও আমাদের অন্য চোখে দেখেন। সেখানে লোক আদালতে আমরা এক দিনের জন্য হলেও বিচারকের মর্যদা পেয়েছি। আমাদের দাবি আদায় নিয়ে যে লড়াই চলছে, তাতে আদালতের সম্মান অনেক শক্তি জোগাবে।”
দীর্ঘ দিন মামলা ঝুলে থাকায় আদালতে ঘুরপাক খেতে হচ্ছিল বলে জানান বিচারপ্রার্থীদের একাংশ। এ দিন মামলার নিষ্পত্তি হওয়ায় স্বস্তিতে তাঁরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy