Advertisement
E-Paper

ভাগাড়ের ধাক্কা খাবারে

শহরের হরেন মুখোপাধ্যায় রোড, কলেজপাড়া, বাঘা যতীন পার্ক, বর্ধমান রোড, প্রধাননগর এলাকার বিভিন্ন রেস্তরাঁর মালিক, কর্মচারীরা তাই চিন্তায় পড়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৮ ১৯:১৫
ফাঁকা: সারাদিন ভিড় নেই ক্রেতাদের। ফাঁকা শিলিগুড়ির বিরিয়ানির দোকান। নিজস্ব চিত্র

ফাঁকা: সারাদিন ভিড় নেই ক্রেতাদের। ফাঁকা শিলিগুড়ির বিরিয়ানির দোকান। নিজস্ব চিত্র

কলকাতায় ভাগাড় কাণ্ডের প্রভাব পড়েছে উত্তরেও। ঘটনার অভিঘাতে হোটেল, রেস্তরাঁয় মাংস বিক্রিতে প্রভাব পড়েছে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি দুই শহরেই। উপরন্তু, মরা মুরগি বিক্রির অভিযোগ নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে ক্রেতাদের মধ্যে। তাতেই শহরের ফুটপাতের বিরিয়ানি স্টল থেকে নামী রেস্তরাঁ, সব জায়গায় মাংস বিক্রি কমেছে বলে জানাচ্ছেন মালিকদের একাংশ। হোটেল-রেস্তরাঁগুলোতে বিরিয়ানি বা মাংসের রকমারি খাবার খেতে লোকও কম আসছে। মাসখানেক বা মাস দেড়েক আগে যারা এ ধরনের খাবারের দোকান চালু করেছেন, তাঁদের দুশ্চিন্তা সবচেয়ে বেশি। ব্যবসা দাঁড় করানো নিয়ে তাঁরা সবচেয়ে বেশি চিন্তায়। তুলনায়, জলপাইগুড়ির নামী হোটেলেগুলোর সমস্যা কম। ফুটপাতের বিক্রেতাদেরই বেশি প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।

শহরের হরেন মুখোপাধ্যায় রোড, কলেজপাড়া, বাঘা যতীন পার্ক, বর্ধমান রোড, প্রধাননগর এলাকার বিভিন্ন রেস্তরাঁর মালিক, কর্মচারীরা তাই চিন্তায় পড়েছেন। অনেক দোকানে বিক্রি ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছে। হরেন মুখোপাধ্যায় রোডের এক নামী বিরিয়ানি দোকানের মালিক জয়দীপ সেনগুপ্তের কথায় ‘‘কলকাতায় যা ঘটে গেল তার প্রভাব আমাদের এখানেও পড়েছে। যেখানে দিনে গড়ে ২৫০ প্লেট বিরিয়ানি বিক্রি হত, তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ প্লেট। মাংসের চাপ, অন্য আমিষ মেনুও কম বিক্রি হচ্ছে।’’

তিনি জানান যে, যারা নিয়মিত তাঁদের দোকান থেকে কেনেন তাঁরা আসছেন। কিন্তু অন্য খদ্দেরদের আসাটা কমেছে। সন্ধের পর কিছু লোকজন আসছে। রাজা রামমোহন রায় রোডের এক রেঁস্তরার ম্যানেজার মহম্মদ হামজা জানান, ‘‘কলকাতায় যা ঘটেছে তা উদ্বেগজনক। মানুষ তাই দ্বিধায় রয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মতো রেঁস্তরাগুলোয় তার-ই প্রভাব পড়ছে। আগের থেকে লোক আসা কমেছে।’’

রেস্তরাঁয় খেতে গিয়ে চিন্তিত মনা রায়, জয়ন্ত বিশ্বাসরাও। তাঁরা বলেন, ‘‘যা ঘটছে, সেটা ভাবতে পারছি না। এমন হলে তো বাইরে কোথাও নিশ্চিন্তে খাওয়া যাবে না। কোথায় কী হচ্ছে তা বোঝাই মুশকিল। প্রতিটি শহরেই পুলিশ, প্রশাসন, পুরসভার তরফে কড়া নজরদারি দরকার।’’

শিলিগুড়ির ঋষি অরবিন্দ রোডের এক রেস্তরাঁর মালিক রামগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাস দু’য়েক হতে চলল নতুন দোকান খুলেছি। নববর্ষে কিছুটা ভাল বিক্রি হয়েছে। তবে মরা মুরগি আর কলকাতার ভাগাড় কাণ্ডের পর দোকানে খদ্দের কমেছে। একেই নতুন ব্যবসা। তার উপর এ সবের কারণে বাজার মন্দা হওয়ায় খুবই চিন্তায় রয়েছি।’’

জলপাইগুড়ি শহরের কয়েকজন ফাস্ট ফুড বিক্রেতা জানান, ‘‘দিনে চিকেন মোমো, মটন কষা, চিকেন-মটন বিরিয়ানির বিক্রি আগের চেয়ে ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছে।’’ শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্ক এলাকায় নতুন বিরিয়ানি, মাংসের নানা খাবার তৈরির রেঁস্তরা খুলেছেন মহম্মদ সাবির। তাঁর কথায়, ‘‘একশো প্যাকেটের বেশি বিরিয়ানি বিক্রি হচ্ছে না। কলকাতার ঘটনার প্রভাব বলেই মনে হচ্ছে। প্রতিদিন দু’শোর বেশি প্যাকেট বিক্রি না হলে দোকান চালানো মুশকিল হবে।’’

রেস্তরাঁর মালিকপক্ষ অবশ্য খদ্দেরদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন শিলিগুড়িতে এ ধরনের কোনও ঘটনা নেই। তা ছাড়া তাঁরা সামনে দাঁড়িয়ে থেকে হোটেলের জন্য মাংস কিনে আনছেন বলে দাবি করেন।

Biriyani Carcass Meat Dumping yard Meat Restaurant
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy