Advertisement
২১ মে ২০২৪
লাম্বাবালা

ম্যানেজার খুনের অস্ত্র উদ্ধার

ভান্ডিবাড়ি লাম্বাবালা চা বাগানের ম্যানেজার গণেশ ঠাকুরকে যে অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে, সেটি উদ্ধার করল পুলিশ৷

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০২
Share: Save:

ভান্ডিবাড়ি লাম্বাবালা চা বাগানের ম্যানেজার গণেশ ঠাকুরকে যে অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে, সেটি উদ্ধার করল পুলিশ৷

রবিবার নিজের কোয়ার্টারের সামনে নৃশংস ভাবে খুন হন গণেশবাবু৷ ওই রাতেই গ্রেফতার করা হয় বাগানের চৌকিদার টলকেশ্বর রায় ও সুবে টোপ্পো নামে এক শ্রমিককে৷ পুলিশের দাবি, জেরায় দু’জনেই খুনের কথা স্বীকার করেছে৷ সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন৷ তারপরই সুবের বাড়ি থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ সূত্রের খবর৷ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “ম্যানেজারকে যে অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়, সেটি উদ্ধার হয়েছে৷” হাঁসুয়া ছাড়া, অন্য অস্ত্র ব্যবহার হয়েছিল কি না, তা নিয়েও জেরা চলছে৷

বাগান সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে গণেশবাবুর সঙ্গে সুবের তুমুল ঝামেলা হয়৷ পোকা মারতে চা গাছে স্প্রে করা হবে কি না, তা নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত৷ প্রতি দশ-পনেরো দিন অন্তরই বাগানে ওই স্প্রে করা হয়৷ বাগানে শ্রমিকদের প্রতি দিন আট ঘণ্টা ডিউটি থাকলেও, যে দিন যাঁরা স্প্রের কাজে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের কাজ সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়৷ তার ওপর ওই কাজে আবার রয়েছে অতিরিক্ত পাঁচ টাকা মজুরি ৷

বাগান সূত্রের খবর, সুবে মাঝে মধ্যেই এক টানা কয়েকদিন ধরে কাজে ডুব দিত৷ যখন কাজে যেত, তখন স্প্রে করাই তার পছন্দের ছিল৷ বাগানের অপর ম্যানেজার স্বপন বসাক বলেন, ‘‘রবিবার সকালে ডিউটিতে এসেও সুবে স্প্রে করার কাজ করতে চায়৷ কিন্তু গণেশবাবু তাকে সাফ জানিয়ে দেন, ওই দিন স্প্রে হবে না৷ তারপরই রেগে গিয়ে একটি স্প্রে মেশিন মাটিতে আছড়ে ফেলে সুবে৷ তবে এ জন্য যে গণেশবাবুকে সুবে এ ভাবে খুন করবে তা কিন্তু ভাবতে পারছেন না কেউই৷’’

বছর চারেক ধরে বাগানের একটি কোয়ার্টারে থাকেন সুবে৷ অশান্তির জেরে তার স্ত্রী কয়েক মাস আগেই ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন৷ সুবেকে দীর্ঘ দিন কাছ থেকে দেখা বাগানের শ্রমিক অনুজ ওঁরাও, জ্যোতি কুজুররা বলছেন, ওই ঘটনার জেরে সুবে ম্যানেজারকে ওভাবে খুন করবে তাঁরাও ভাবতে পারছেন না৷ তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে তাঁদেরও সন্দেহ, স্প্রে করা নিয়ে গোলমালের জেরেই ওই খুন৷ তবে আরও কোন কারণ রয়েছে কি না সেগুলিও দেখা হচ্ছে৷

এ দিকে গোটা ঘটনায় তার স্বামীও যে জড়িত তা এখনও বিশ্বাসই করতে পারছেন না চৌকিদার টলকেশ্বরের স্ত্রী উলফে রায়৷ টলকেশ্বর এক সময় বাগানের স্থায়ী শ্রমিক ছিলেন৷ বছর তিনেক আগে অবসর নেওয়ার পর থেকে চৌকিদারের কাজ করছেন৷ উলফে রায়ের কথায়, ঘটনার দিন মাঝ রাতে আচমকাই বাড়ি ফিরে এসেছিলেন টলকেশ্বর৷ ঘরের দরজা খুলে দিলেও ঘুমের চোখে ওই সময় বাড়ি ফেরার কারণ আর স্বামীর কাছে জানতে চাননি উলফে৷ তাঁর কথায়, “কিছু ক্ষণ পর জানতে পারি ম্যানেজার খুন হয়েছে ও আমার স্বামীকে পুলিশ ধরেছে৷” উলফে রায়ের কথায়, “থানায় আমার বড় ছেলেকে স্বামী শুধু এটুকুই বলেছেন, তিনি কোনও দোষ করেননি৷ অথচ, ফেঁসে গেলেন৷” পুলিশ অবশ্য তা বিশ্বাস করছে না৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE