Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
elephant attack

খাদ্যসঙ্কটে হাতি? সমীক্ষায় বন দফতর

সম্প্রতি রাজ্য জুড়ে হাতি-মানুষ সংঘাতের বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে। এমন সংঘাতের সংখ্যা দক্ষিণবঙ্গে বেশি বলে বন দফতরের পরিসংখ্যানে জানা যাচ্ছে।

জঙ্গলে হাতির খাবারের জোগান কম থাকলে তার সংস্থান বাড়ানো হবে।

জঙ্গলে হাতির খাবারের জোগান কম থাকলে তার সংস্থান বাড়ানো হবে।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ ০৬:৪১
Share: Save:

হাতির খাবার কি ‘বাড়ন্ত’? রাজ্যের জঙ্গল জুড়ে তার খোঁজ শুরু করেছে বন দফতর। পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন কিছু বেসরকারি সংস্থা এবং সংগঠনকেও এই কাজে লাগিয়েছে বন দফতর। জঙ্গলের ভিতরে হাতির খাদ্য কী পরিমাণে মজুত রয়েছে এবং জঙ্গল-ঘেঁষা এলাকাগুলিতে হাতির খাবারের সংস্থান কেমন, সে সব এই সমীক্ষা থেকে জানবে বন দফতর। এমন সার্বিক সমীক্ষা এই প্রথম বলে দাবি বন দফতরের। দক্ষিণবঙ্গ থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গের সব এলাকাতেই সমীক্ষা হবে। উত্তরবঙ্গের সমীক্ষা শুরু হবে আলিপুরদুয়ার থেকে। পরে পর্যায়ক্রমে জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি এবং বাগডোগরার জঙ্গল এলাকায় সমীক্ষা হবে।

সম্প্রতি রাজ্য জুড়ে হাতি-মানুষ সংঘাতের বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে। এমন সংঘাতের সংখ্যা দক্ষিণবঙ্গে বেশি বলে বন দফতরের পরিসংখ্যানে জানা যাচ্ছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, জঙ্গলের ভিতরে খাবারের ভান্ডারে টান পড়াতেই বুনো হাতিরা জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে আসে। লোকালয়ে খাবারের সন্ধানেই হাতির আনাগোনা বেড়েছে বলে বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে ধানের প্রতি হাতির আকর্ষণ বেড়েছে বলে বনকর্তাদের পর্যবেক্ষণ। অনুমান, এর পিছনে রয়েছে জঙ্গলে চালতা বা কলার মতো ফল এবং হাতির পছন্দের বিশেষ কিছু ঘাস এবং গাছের সঙ্কট। বিষয়টি সত্যিই তেমনই কি না, তা জানতে এই সমীক্ষায় জোর দেওয়া হচ্ছে।

বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শুক্রবার বলেন, ‘‘দিন তিনেক হল এই সমীক্ষা শুরু হয়েছে। রাজ্যের সব জঙ্গলেই সমীক্ষা হবে। আমরা দেখতে চাইছি, জঙ্গল এবং একেবারে জঙ্গল-লাগোয়া এলাকায় হাতির খাবারের ভান্ডার কতটা রয়েছে। হাতির সংখ্যা বেড়েছে। তাই খাদ্যও জরুরি। সেটারই পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’’

বন দফতরের আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। যেমন, জঙ্গলে খাদ্যসঙ্কটের তথ্য মিললে লাগোয়া জমিতে হাতির পছন্দের কিছু শস্য চাষ করা। বনমন্ত্রীর কথায়, ‘‘সে ক্ষেত্রে আমরা সংশ্লিষ্ট জমিতে চাষের ব্যবস্থা করব।’’ এর ফলে, হাতি জঙ্গল-লাগোয়া এলাকা ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকবে না বলেই মনে করছে বন দফতর।

গত মাসে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিন এক পরীক্ষার্থীকে বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গলপথে শুঁড় দিয়ে তুলে আছড়ে-পিষে মেরেছিল হাতি। সেই বৈকুন্ঠপুরে অন্য একটি সমীক্ষার কাজ চলছে। সেই সমীক্ষায় প্রথমে জানার চেষ্টা হচ্ছে, জঙ্গল-লাগোয়া এলাকার কতটা জমির মালিক বন দফতর এবং সে এলাকার জমি কী কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। জানার চেষ্টা করা হচ্ছে, কোন এলাকায় চাষ হচ্ছে, চাষ হলে কী-কী ফসলের চাষ হচ্ছে এবং কোন সময়ে হচ্ছে। বৈকুন্ঠপুরের সহকারী বনাধিকারিক মঞ্জুলা তিরকে বলেন, ‘‘জঙ্গল-লাগোয়া জমির কতটা বন দফতরের এবং কতটা কী কাজে ব্যবহার করা হয়, তা দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

elephant attack Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE