পুর প্রতিনিধির বাড়ির গ্যারাজেই পিঠে-পুলি তৈরি করছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল।
পুরসভায় আবেদন করেও জায়গা মেলেনি, তাই পুর প্রতিনিধির বাড়ির গ্যারাজেই পিঠে-পুলি ভাজছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠির মহিলারা। সমাজমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে বাড়ি বাড়ি বিক্রি হচ্ছে গোকুল পিঠে, দুধ পুলি। দোকানে দোকানে যাচ্ছে মালপোয়া। ঝর্ণা সেনের স্বামীর স্থায়ী কোনও কাজ নেই। যখন যেমন পান। শীতের মরসুমে সেই সংসার চলছে পিঠে-পুলি বিক্রির রোজগারে। সাতটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা একসঙ্গে হয়ে তৈরি করেছেন পিঠে-পুলির রান্নাঘর। অনেকটা যেন পেশাদারি রেস্তোরাঁ অথবা বেকারির ‘সেন্ট্রাল কিচেন।’ প্রতিটি দল বিভিন্ন উপকরণ সামগ্রী কিনে এনে জড়ো করে দুপুর থেকে শুরু করেছেন পিঠে ভাজা। মকর সংক্রান্তির আগে প্রতিদিনই সরগরম পুর প্রতিনিধির বাড়ির গ্যারেজ।
জলপাইগুড়ি ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের পুর প্রতিনিধি লোপামূদ্রা অধিকারী বলেন, “বেশ কয়েক বছর ধরেই নিজেদের মতো করে একেবারেই ছোট করে পিঠে পুলি তৈরি করছিল গোষ্ঠীর মেয়েরা। ওদের জন্য একটি ঘর পুরসভার কাছে চেয়েছিলাম। কিন্তু পাওয়া যায়নি। তাই নিজের বাড়ির গ্যারাজই খুলে দিয়েছি। এ বার নতুন নতুন বরাত পাচ্ছে মেয়েরা।”
প্রতিদিন অন্তত ৫০টি করে বরাত আসছে। তৈরি হচ্ছে গোকুল পিঠে, মুগের পুলি, দুধ পুলি, নারকেল এবং খির দু’ধরণের পাটিসাপ্টা এবং মালপোয়া। গোষ্ঠীর সদস্যদের দাবি, বাড়ির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি চাহিদা দুধপুলি এবং মুগের পুলি। দোকানের ক্ষেত্রে মালপোয়ার দিকেই ঝোঁক বেশি। ঝর্ণা সেন বললেন, “পিঠে-পুলি আমাদের রোজগার দিচ্ছে। সাতটি গোষ্ঠীর মেয়েরা রয়েছেন। অন্তত পঞ্চাশটি পরিবারের আয় হচ্ছে।” এক একটি পিঠের অন্তত শ’খানেক করে তৈরি হচ্ছে প্রতিদিন গোষ্ঠীর হেঁসেলে।
একটি গোষ্ঠীর নেত্রী শিল্পী গুহ বলেন, “অনেকেই এখন বাড়িতে পিঠে-পুলি তৈরি করতে চান না। নানারকম ঝকমারি। আমরা সমাজমাধ্যমে জানিয়েছিলাম, কেউ চাইলে পিঠে-পুলি পৌঁছে দেব। তাতেই খুবই সাড়া মিলেছে।” সম্প্রতি শহরের খাদ্যমেলায় পিঠে-পুলি সহ নানা রকমের স্টল দিয়েছিল গোষ্ঠীগুলি। সেখানেই পিঠে-পুলির চাহিদা দেখে মকর সংক্রান্তির আগে থেকেই রান্নাঘর খুলে পিঠে-পুলি ভাজছেন গোষ্ঠীর মেয়েরা। সারা বছর পিঠে-পুলির চাহিদা থাকে না, সে সময়ে অন্য খাবারের সরবাহও করার পরিকল্পনা রয়েছে মেয়েদের গোষ্ঠীর। ঝর্ণা সেনের কথায়, “যদি একটা স্থায়ী জায়গা পেতাম।” জলপাইগুড়ি পুরসভার পুর প্রধান পাপিয়া পাল জানিয়েছেন, “বিষয়টি দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy