প্রতিবাদে: দার্জিলিং জেলাaশাসকের অফিসের সামনে চলছে চা শ্রমিকদের রিলে-অনশন। নিজস্ব চিত্র।
দার্জিলিং পাহাড়ের একটি চা শিল্প গোষ্ঠীর ১০টি বাগানের বকেয়া মজুরি ও বেতন নিয়ে অচলাবস্থা চলছে৷ সেই বকেয়া মেটানোর দাবিতে সোমবার দার্জিলিঙের জেলাশাসকের দফতরের সামনে রিলে-অনশন শুরু করেছেন চা শ্রমিকেরা। সংস্থার তরফে ধাপে ধাপে বকেয়া মোটানোর আশ্বাস দেওয়া হলেও, শ্রমিক সংগঠনগুলি একেবারে সব পুজোর আগে বকেয়া হাতে পেতে চাইছে। অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার চা শ্রমিক সংগঠনের তরফে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে।
শ্রমিক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, আগামী পাঁচ দিন রিলে-অনশন চলবে। দশটি বাগানের দু’টি বাগান করে প্রতিদিন দশ জন অনশনে বসছেন। এই অবস্থায় বাগানে কাজ বন্ধ থাকলে, পুজোর মুখে একাধিক বাগান বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা। বাগান যাতে বন্ধ না হয়, সে ব্যাপারে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে। দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেছেন, ‘‘ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠক হয়েছে। বুধবারের মধ্যে বকেয়া মজুরি মেটানোর কথা রয়েছে। আগামী সপ্তাহে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ২৯ অগস্ট বকেয়া মজুরি বেতনের দাবিতে এই ১০টি চা বাগানের শ্রমিকেরা থালা-বাটি বাজিয়ে মিছিল করেন দার্জিলিং শহরে। পরে, তাঁরা জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে ধর্না দেন। অভিযোগ, গত দু’মাস ধরে বাগানগুলিতে শ্রমিক ও কর্মীদের বেতন, মজুরি হচ্ছে না। অনীত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বাগানগুলির লিজ় বাতিলের আবেদন করেন। তার পরে, জেলাশাসক নোটিস পাঠিয়ে বাগান গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের শুনানিতে ডাকেন। ২ সেপ্টেম্বর ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠক হয়। তার আগে, দার্জিলিং শহরে চা শ্রমিকেরা মিছিল করেন। চা শিল্পগোষ্ঠীর একটি অংশের অংশীদার বিদেশে থাকেন। এ দেশের আর একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁরা যৌথ ভাবে দার্জিলিঙের নামকরা ১০টি বাগান চালান।
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার চা সংগঠনের সভাপতি জেবি তামাং বলেন, ‘‘পুজোর আগে, চা শ্রমিকেরা রাস্তায়। এর থেকে খারাপ কী হতে পারে? শ্রমিকেরা বকেয়া মজুরি, বোনাস-সহ পাওনা বুঝে নিতে চাইছেন। এর মধ্যে কোনও অন্যায় নেই। গণতান্ত্রিক ভাবে আন্দোলন চলবে।’’
সরকারি সূত্রে খবর, দু’মাস ধরে ১০টি বাগানের প্রায় সাত হাজার শ্রমিকের মজুরি বকেয়া রয়েছে। এর মধ্যে যোগ হয়েছে বাগানের ‘স্টাফ’ ও ‘সাব-স্টাফ’দের বকেয়া। তাঁরাও এক মাস ধরে টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে অঙ্কটা প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার মতো। এর বাইরে, অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা, পিএফ, গ্র্যাচুইটি বা পুরনো বকেয়া রয়েছে। সব ক’টি বাগানের সব টাকা মিটিয়ে চালাতে গেলে প্রায় ৮০-১০০ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানা গিয়েছে। যা নিয়ে মালিকপক্ষের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আলোচনা চলছে। বিদেশবাসী সদস্যেরা নতুন করে বাগানে টাকা দেওয়া নিয়ে নানা মতামত দিয়েছেন। উল্টো বক্তব্য এ দেশের গোষ্ঠীর।
বাগান গোষ্ঠীর দার্জিলিঙের এক প্রতিনিধি বলেন, ‘‘এ সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে মালিক পক্ষের লোকজন দার্জিলিং আসতে পারেন। নইলে, বাগানগুলি বন্ধের মুখে এসে দাঁড়াবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy