প্রিজ়ন ভ্যানে উঠছে খুদে খেলোয়াড়েরা। ছবি: নারায়ণ দে
অপরাধী হওয়া তো দূরের কথা, তাদের বিরুদ্ধে সামান্য অভিযোগও পুলিশের খাতায় নেই। বরং বয়সে ছোট হলেও এলাকায় তারা প্রত্যেকেই পরিচিত উঠতি ফুটবল খেলোয়াড় হিসাবে। অথচ, জেলা পুলিশ আয়োজিত একটি ফুটবল প্রতিযোগিতায় তাদেরই কিনা মাঠে নিয়ে যেতে ব্যবহার করা হল প্রিজ়ন ভ্যান। তা নিয়েই বিতর্ক দানা বাঁধল আলিপুরদুয়ারে। পুলিশের অবশ্য দাবি, নামে প্রিজ়ন ভ্যান হলেও ওই গাড়িটি থানার সব কাজেই ব্যবহার হয়। তাতেও অবশ্য বিতর্ক থামছে না।
আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশের উদ্যোগে চলছে ডুয়ার্স কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা। পুলিশ সূত্রে খবর, সিনিয়র ও অনূর্ধ্ব ১৫— দু’টি বিভাগে হচ্ছে খেলা। বিভিন্ন থানা এলাকার পঞ্চায়েতগুলি থেকে এ জন্য দল গঠন করা হয়েছে। আলিপুরদুয়ার থানা এলাকার খেলাগুলি হচ্ছে শহরের সূর্যনগর ময়দানে। শুক্রবার অনূর্ধ্ব ১৫বিভাগে বঞ্চুকামারির বিরুদ্ধে মাঝেরডাবরি পঞ্চায়েত এলাকার খেলা ছিল। শামুকতলা থানার অধীনে হলেও মাঝেরডাবরির ফুটবল দলটি আলিপুরদুয়ার থানা এলাকার গ্রুপেই রয়েছে। অভিযোগ, এ দিনের খেলায় বঞ্চুকামারির খুদে ফুটবলারদের একটি বাসে করে মাঠে আনা হয়। কিন্তু, মাঝেরডাবরির খুদে ফুটবলারদের আনা হয় শামুকতলা থানায় ব্যবহৃত একটি প্রিজ়ন ভ্যানে। খেলা শেষে সেই প্রিজ়ন ভ্যানেই ফেরার ব্যবস্থা হয়।
আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণউদয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “খুদে ফুটবলারদের প্রিজ়ন ভ্যানে করে মাঠে না নিয়ে এলেই ভাল হতো। এতে ওদের মনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তা ছাড়া পুলিশের পক্ষে একটি গাড়ি জোগাড় করা তো অসম্ভব নয়।” আলিপুরদুয়ারের মানবাধিকার কর্মী সুমন গোস্বামী বলেন, “ছোট ছেলেদের সামাজিক সম্মানের বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত ছিল। তাদের অভিভাবকদের কেউ প্রশ্ন করলে পুলিশকে জবাবদিহি করতে হবে।”
মাঝেরডাবরি ফুটবল দলকে নিয়ে মাঠে আসা সুমন্ত রায় বলেন, “থানা থেকে বলা হয়েছিল গাড়ি পাঠানো হবে। প্রিজ়ন ভ্যানটি আসে। এতেই খেলোয়াড়দের নিয়ে যাই।” দলের এক খুদে ফুটবলারের কথায়, “সবাই বলল, এই গাড়িতে যাওয়া হবে। তাই উঠি।’’
এ নিয়ে মন্তব্য এড়িয়েছেন শামুকতলা থানার পুলিশ আধিকারিকরা। মন্তব্য করতে চাননি আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশীও। তবে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “প্রিজ়ন ভ্যান সংশোধনাগারে থাকে। এই গাড়িটি থানার। এটি অপরাধী ধরে আনা, কোথাও পুলিশ বাহিনী পাঠানো, পুলিশের নানা সরঞ্জাম এক জায়গা থেকে অন্যত্র নেওয়ার কাজে ব্যবহার হয়। তা ছাড়া পুলিশের কাছে অন্য গাড়ি প্রচুর সংখ্যায় নেই।” জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচীবসঞ্চয় ঘোষ বলেন, “প্রিজ়ন ভ্যানে খেলোয়াড়দের মাঠে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানা নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy