মহিলাকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকা ফাঁড়ি থেকে সরানো হল ওসি সনত্ দাসকে। তাঁকে কালিয়াচক থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কালিয়াচক থানার এসআই সুবীর সরকারকে ভালুকা ফাঁড়ির ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্য দিকে, ওসিকে চটি-পেটা করার পরে মহিলা-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করে মামলা করা হয়েছে। যদিও কেউ গ্রেফতার হয়নি। চাঁচলের এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য বলেন, “পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সব খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শনিবার নিজের ঘরে ডেকে এক মহিলাকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ভালুকা ফাঁড়ির ওসির বিরুদ্ধে। পড়শির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগের পাঁচ দিন পরেও পুলিশ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তা জানতেই তিনি ফাঁড়িতে গিয়েছিলেন বলে মহিলার দাবি। ওসি মহিলাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন জানতে পেরে ফাঁড়িতে বিক্ষোভ শুরু করেন শতাধিক গ্রামবাসী। ওসি অভিযোগ অস্বীকার করলে মহিলা ওসির গালে সপাটে চড় মারেন বলে অভিযোগ। পরে পায়ের হাওয়াই চটি খুলে কয়েক ঘা মারেন।
অভিযুক্ত ওসির নানা আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশও। মহিলা অবশ্য ওসির বিরুদ্ধে লিখিত কোনও অভিযোগ জানাননি বলে অভিযোগ। মহিলাকে সাহায্য করার ব্যাপারে নাম জড়িয়েছে ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বাপি ওরফে সুদীপ্ত চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তিনি অবশ্য পাল্টা দাবি করেন, “ওখানে সব দলের একাধিক নেতা-কর্মী ছিলেন। পঞ্চায়েত সদস্য হিসাবে এলাকার কেউ বিপদে পড়লে, তাঁর পাশে দাঁড়ানোই আমার কাজ। আমরা শুধু ওসি-র কৈফিয়ত চেয়েছিলাম। উল্টে তিনি আমাদের বের করে দিয়ে দুর্বব্যবহার করেন। মহিলা আচমকাই মারধর শুরু করেন। আমরা প্ররোচনা দিইনি।” ওই পঞ্চায়েত সদস্য জানান, আগেও ভালুকা ফাঁড়িতে ওসি আড়াই বছর ছিলেন। ছ’মাস বাদেই ফিরে আসেন। তাঁর কথায়, “ভালুকায় নিশ্চয়ই ওসির কোনও বাড়তি আগ্রহ রয়েছে।”
সনত্বাবুর অবশ্য দাবি, তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বলেন, “এলাকায় আমি মদ, জুয়া বন্ধ করেছিলাম। একটি সরকারি জমি থেকে অনেককে উচ্ছেদ করতে চাইছিলেন কয়েকজন। তাতে বাধা দেওয়ায় চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার চরিত্র কেমন তা এলাকার মানুষ জানেন।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফাঁড়ির উল্টো দিকে কালু চৌধুরীর বাড়িতে একাই ভাড়া থাকতেন সনত্বাবু। কালুবাবু এ দিন বলেছেন, “এক জন মানুষ সবার কাছে ভাল হতে পারেন না। আমি কখনও ওঁকে খারাপ ব্যবহার করতে দেখিনি।”
এ দিকে ওই মহিলার দাবি, “আমাকে কেউ প্ররোচনা দেননি। স্বামীকে বাইরে বের করে দিয়ে কুপ্রস্তাব দেওয়ার পরেও তা অস্বীকার করায় রাগে-অপমানে ওসির গায়ে হাত তুলি। এই নিয়ে মানবাধিকার কমিশন বা আদালতের দ্বারস্থ হব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy