Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কুলিকের চর দখল করে চাষ

নদী চর দখল করে রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষিনিবাস সংলগ্ন বাসিন্দাদের একাংশ ধান চাষ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গরমে শুকিয়ে যাওয়া নদীর সামান্য জল দিয়েই ওই চাষ শুরু হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন ও বন দফতরের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছে জেলার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। অভিযোগ, প্রতি দিন ধানের জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ হচ্ছে। আগামীতে বৃষ্টি হলে নদী দূষণের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

দখল কুলিক নদীর চর। —নিজস্ব চিত্র।

দখল কুলিক নদীর চর। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০২
Share: Save:

নদী চর দখল করে রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষিনিবাস সংলগ্ন বাসিন্দাদের একাংশ ধান চাষ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গরমে শুকিয়ে যাওয়া নদীর সামান্য জল দিয়েই ওই চাষ শুরু হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন ও বন দফতরের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছে জেলার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। অভিযোগ, প্রতি দিন ধানের জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ হচ্ছে। আগামীতে বৃষ্টি হলে নদী দূষণের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। নদীর জল দূষিত হলে এক দিকে যেমন নদীর মাছ ও বিভিন্ন জলজ প্রাণীর মৃত্যু হতে পারে, তেমনি পক্ষিনিবাসের বিভিন্ন পরিযায়ী পাখি সহ সাধারণ পাখিদের মধ্যে নানা রোগের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।

চর দখলের বিষয়টি স্বীকার করে জেলার বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বিপর্ণ দত্ত বলেন, “নদী চরে ধানচাষ শুরু হওয়ার বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। নদীটি আমাদের অধীনে নেই। পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে জেলা প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। নদীর নাব্যতা বাড়াতে দফতরের পক্ষ থেকে পৃথক ভাবে জেলা প্রশাসনকে প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে।” জেলাশাসক স্মিতা পাণ্ডে বলেন, “কুলিক নদীর চরে ধানচাষ বন্ধ করতে সেচ দফতর উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে। নদীর নাব্যতা বাড়ানোর বিষয়টিও দেখা হচ্ছে।”

বন দফতর সূত্রে খবর, অক্টোবর মাসের পর জেলায় জোর বৃষ্টি হয়নি। সেই কারণে, পক্ষিনিবাস সংলগ্ন প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কুলিক নদীর জল শুকিয়ে গিয়েছে। পক্ষি নিবাস সংলগ্ন নদীতে কোথাও গোড়ালি ডোবা, কোথাও হাঁটুজল। নদীর দুপাশের বিভিন্ন অংশে আবর্জনা ও কচুরিপানায় ভরেছে। ৩০-৫০ ফুট চওড়া নদীর জল শুকিয়ে ২৫-৪০ ফুট পর্যন্ত চরের সৃষ্টি হয়েছে। চরের তিন বিঘা জমিতে বাসিন্দাদের একাংশ দ’ুমাস ধরে ধানচাষ শুরু করেছেন। কুলিক নদীর চর দখল করে এলাকার ৩০ জনেরও বেশি বাসিন্দা ধান চাষ করছেন। তাঁদের মধ্যে রাম রজক ও সানু চৌহান বলেন, “গরমে নদীতে জল থাকে না। তিন বছর চরে ধান চাষ করছি। কেউ আপত্তি করেনি।”

হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ার্স অ্যান্ড ট্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পীযূষ দাসের অভিযোগ, “বন দফতর ও প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই ওই কাজ হচ্ছে। ধান চাষে ব্যবহার করা কীটনাশকও সবচেয়ে বড় ভয়ের কারণ।” পিপল ফর অ্যানিম্যালের জেলা সম্পাদক গৌতম তান্তিয়া এবং সংগঠনের ইউনিট-২ জেলা সম্পাদক অজয় সাহা জানিয়েছেন, পক্ষিনিবাসের পরিযায়ী পাখি ও সাধারণ পাখিরা কুলিক নদীর জল খেয়ে বেঁচে থাকে। এ ছাড়া পক্ষিনিবাসের শেয়াল, কুকুর, বনবিড়াল, কচ্ছপ, খরগোশ সহ বিভিন্ন প্রাণী ওই নদীর জল খায়। সেখানে জল কীটনাশকে দূষিত হলে কী হবে ভাবাই যাচ্ছে না। প্রশাসনের দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rayganj kulick farming
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE