প্রতিবেশীকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়ার পরেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এক অভিযুক্ত। অভিযোগ মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ মারধর করায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বুধবার রতুয়ার বালুপুর এলাকায় মেয়ের বাড়ি থেকে ওবাইদুল রহমান নামে অভিযুক্তকে পুলিশ ধরে।
৬ জানুয়ারি হরিশ্চন্দ্রপুরের সোনাকুল এলাকায় জমি বিবাদে প্রতিবেশী ইব্রাহিম শেখকে (৪৯) হাঁসুয়া দিয়ে কোপানোর অভিযোগ ওঠে ওবাইদুল-সহ পাঁচ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। বুধবার কলকাতার হাসপাতালে তাঁর মৃত্যুর পরেই ওবাইদুলকে ধরা হয়। অভিযোগ, তাকে মারধর করে পুলিশ।
ওই ঘটনায় ওবাইদুলের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা কমিটি-সহ মানবাধিকার সংগঠন দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাদের তরফে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিতভাবে ঘটনার তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
পুলিশ অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধায় বলেন, “গ্রেফতারের পর খুনের ঘটনায় ধৃত ওই প্রৌঢ় অসুস্থ হয়ে পড়ার পর পুলিশ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করায়। মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবুও অভিযোগ যখন উঠেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ ও ধৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জমিতে আল দেওয়াকে ঘিরে বিবাদের সময় হাঁসুয়ার কোপে গুরুতর জখম শেখ ইব্রাহিম কলকাতায় একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে বুধবার বাড়ি ফেরার সময় রাস্তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। তার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ জানাচ্ছে, অভিযুক্তকে ধরতে বুধবার রাতে রতুয়ার বালুপুরে হানা দেয় পুলিশ। সেখানে পুলিশ দেখে বেড়া ভেঙে দৌড়তে শুরু করেন ওবাইদুল। তাড়া করে পুলিশ তাকে ধরে। তারপর পুলিশের জিপেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হরিশ্চন্দ্রপুরের বিএমওএইচ ছোটন মণ্ডল বলেন, “লক্ষণ দেখেই বোঝা যায়, ধৃতের সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছে। রক্তচাপও প্রচুর বেড়ে গিয়েছিল। তাই তাঁকে মালদহে রেফার করা হয়। তাঁর শরীরে মারধরের কোনও চিহ্ন ছিল না।”
ধৃতকে ধরতে হানা দিয়েছিলেন ঘটনার তদন্তকারী অফিসার বিকাশ হালদার। তিনি মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ঘটনার পর থেকেই ওবাইদুলকে খোঁজা হচ্ছিল। রতুয়ায় মেয়ের বাড়িতে উনি রয়েছেন জানতে পেরে আমরা যাই। রাস্তায় অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমিই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। এখন কেন মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে, জানি না।” ধৃতের স্ত্রী মঞ্জুরা বেগমের দাবি, ধরার পরে পুলিশ মারধর করে বলেই স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির জেলা সম্পাদক জিষ্ণু রায়চৌধুরী বলেন, “যে দৌড়ে পালাচ্ছিল, সে কীভাবে ওইরকম অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে? ওকে যে মারধর করা হয়েছে, তা অনেকেই দেখেছে।”
গৌড়বঙ্গ হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ারনেস সেন্টারের আহ্বায়ক মৃত্যুঞ্জয় দাস বলেন, “এক্ষেত্রে পুলিশ অধিকার লঙ্ঘন করেছে বলেই মনে হচ্ছে। আমরা এর তদন্ত চাই।” এ দিন বিকেলেই মালদহ থেকে ধৃতকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ওই প্রৌঢ়ের সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছে বলে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy