কখনও সরু ধারায় জল পড়ছে। কখনও জলই পড়ছে না। এক মাসেরও বেশি মাথাভাঙা ও সংলগ্ন এলাকায় পানীয় জলের এ অবস্থায় ক্ষোভ চরমে উঠেছে বাসিন্দাদের। শহরের বাসিন্দারা জলের খোঁজে সাইকেলে-বাইকে জলের পাত্র ঝুলিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে একই অবস্থা দেখে বাড়ি ফিরছেন। পরিস্থিতি সামলাতে সোমবার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মাথাভাঙা মহকুমা আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেন মাথাভাঙা পুরসভা কর্তৃপক্ষ। দু’তরফে জানানো হয়েছে, শহর জুড়ে জলের সঙ্কট তৈরি হয়েছে লো ভোল্টেজের কারণে । বিদ্যুতের জন্যই জল সরবরাহ ঠিকঠাক হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ চৌধুরী বলেন, “বিদ্যুৎ পরিষেবার ঘাটতির জন্য পানীয় জল সরবরাহ ঠিকঠাক হচ্ছে না। সাধারণ মানুষকে পানীয় জলের সঙ্কটে ভুগতে হচ্ছে। অনেককে জল কিনে খেতে হচ্ছে।” বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি কর্তারা জানান, বোরো ধান চাষের জন্য বহু পাম্পসেট চালু হওয়ায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে। বোরো চাষের জন্য জল দিয়ে পানীয় জলের অবস্থা কী ভাবে স্বাভাবিক রাখা যায় তা দেখা হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে মাথাভাঙা মহকুমা আধিকারিক নিখিল নিয়োগী বলেন, “লো ভোল্টেজ থাকায় জল ঠিকমত সরবরাহ করা যাচ্ছে না। সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।”
বিদ্যুৎ বণ্টন কোপানি সূত্রের খবর, মাথাভাঙার ট্রান্সফরমারগুলির ক্ষমতা সীমিত, তাই বোরো ধান চাষের জন্য গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় শহরে পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়ছে। বিষয়টি স্বীকার করে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির বিভাগীয় বাস্তুকার বিষ্ণু দত্ত বলেন, “স্বাভাবিক বিদ্যুৎ চাহিদার পাশাপাশি প্রচুর স্যালো চলছে। ওভারলোডিংয়ের সমস্যা থেকে লো-ভোল্টেজ হচ্ছে। চেষ্টা করছি পরিস্থিতি ঠিক করার।”
মাথাভাঙা পুরসভা এলাকায় ১টি জলাধার, সাতটি পাম্প আছে। এ ছাড়া পচাগড়, শিকারপুর, নয়ারহাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও ২টি করে পাম্প রয়েছে। শহরে বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার পরিষেবা রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই পরিষেবা এখন পুরোপুরি বেহাল। দিনে তিনবার জল সরবরাহ করা হয়। ওই তিন সময় মিলে এক লিটার জল ভরতে নাজেহাল হতে হচ্ছে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা গণেশচন্দ্র শীল বলেন, “পানীয় জলের অবস্থা খারাপ। জলের জন্য আমাদের হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়। বাড়িতে জল তো পাইই না, স্ট্যান্ড পোস্টগুলির একই অবস্থা।” একই অভিযোগ করেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গৃহবধূ নিভা সরকার। তিনি বলেন, “পানীয় জলের কষ্ট আর সহ্য করা যাচ্ছে না।” ডিওয়াইএফআই মাথাভাঙা মহকুমার নেতা কাজল রায় বলেন, “যা অবস্থা তাতে আন্দোলন করা ছাড়া কোনও পথ নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy