Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ঘরে জল পড়ে, বাইরে ঘুরছে সাপ, বেহাল পুলিশ আবাসন

দিনরাত অপরাধ রুখতে ছুটে বেড়ানোর পর আবাসনে ফিরেও শান্তি নেই পুলিশ কর্মীদের। কারও বিছানার নীচে সাপ ঢুকছে। কারও আবার ভাঙা জানলা দিয়ে বর্ষার জল ঢুকে ভিজছে আসবাব। বার বার বিষয়টি পুলিশ কর্তাদের জানিয়েও লাভ হয়নি কোনও। এমনই অভিযোগ আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ আবাসনের বাসিন্দাদের। প্রতিটি ঘরের প্রায় একই দশা। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে হচ্ছে পুলিশকর্মীদের।

আলিপুরদুয়ারের পুলিশ আবাসনের দেওয়ালে বেরিয়েছে গাছ। খসে পড়ছে পলেস্তারা। (ইনসেটে) ভেঙে পড়ছে জানলা। নিজস্ব চিত্র।

আলিপুরদুয়ারের পুলিশ আবাসনের দেওয়ালে বেরিয়েছে গাছ। খসে পড়ছে পলেস্তারা। (ইনসেটে) ভেঙে পড়ছে জানলা। নিজস্ব চিত্র।

নারায়ণ দে
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৩৯
Share: Save:

দিনরাত অপরাধ রুখতে ছুটে বেড়ানোর পর আবাসনে ফিরেও শান্তি নেই পুলিশ কর্মীদের। কারও বিছানার নীচে সাপ ঢুকছে। কারও আবার ভাঙা জানলা দিয়ে বর্ষার জল ঢুকে ভিজছে আসবাব। বার বার বিষয়টি পুলিশ কর্তাদের জানিয়েও লাভ হয়নি কোনও। এমনই অভিযোগ আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ আবাসনের বাসিন্দাদের। প্রতিটি ঘরের প্রায় একই দশা। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে হচ্ছে পুলিশকর্মীদের।

আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ আবাসন শেষ কবে মেরামতি হয়েছিল তা মনে করতে পারছেন না আবাসিকরা। গত ২৫ জুন আলিপুরদুয়ার জেলা ঘোষণার পর পুলিশ কর্মীদের একাংশ ভেবেছিলেন এ বার হয়ত আবাসন গুলি মেরামতি শুরু হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বরং জেলা ঘোষণা হওয়ায় বেড়েছে পুলিশ কর্মীর সংখ্যা। বাড়তি বাহিনীর একাংশকে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা একটি ভবনে।

আলিপুরদুয়ার জেলার পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “সমস্যা রয়েছে। আমরা কয়েকটি ভবন ভেঙে তা নতুন করে তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানাব।” তবে পুলিশ আবাসনগুলি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পূর্ত দফতরের বক্তব্য, অর্থ বরাদ্দ নেই। আলিপুরদুয়ারের পূর্ত দফতরের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার প্রদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ আবাসন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের। ওই আবাসনগুলি মেরামতির জন্য অর্থ বরাদ্দ করার কথা স্বরাস্ট্র দফতরের। দীর্ঘ দিন অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় আবাসন গুলির মেরামত সম্ভব হয়নি।”

আলিপুরদুয়ার থানার পেছনে আধিকারিকদের থাকার জন্য দু’ টি ব্লকে সাতটি আবাসন রয়েছে। কনস্টেবলদের থাকার জন্য ছ’টি ব্লকে রয়েছে ৩৮টি আবাসন। তা ছাড়া তিনটি একতলা আবাসন রয়েছে ওই চত্বরে। পুলিশ আধিকারিকদের আবাসন থেকেও কন্সটেবলদের আবাসনের দশা বেহাল। বাইরে দেওয়ালে বড় বড় গাছ দেওয়ালে ফাটল ধরিয়েছে। খসে পড়েছে প্লাস্টার। অধিকাংশ জানলায় পাল্লা নেই। জানলার ভাঙা পাল্লা গুলি কেউ আটকে রেখেছেন প্লাস্টিক দিয়ে। কেউ আবার পিচবোর্ড আটকে কাজ চালাচ্ছেন। এইভাবে চলছে রান্নার কাজ। আলিপুরদুয়ার থানার বাইরে থেকে রং করা হলেও দেওয়াল চুয়ে জল পড়ে থানার ভেতরে।

আলিপুরদুয়ার জেলা ঘোষণার পর বাড়তি বাহিনী আসায় একটি পরিত্যক্ত আবাসনের ঘরের আগাছা সাফ করে তাদের সেখানে রাখা হয়েছে। সেখানে অধিকাংশ ঘরের জানলা নেই। জলের কষ্ট। আশেপাশের নর্দমা থেকে পচা দুর্গন্ধে টেকা দায়। বৃষ্টি এলে জানলা ও ছাদের সিড়ি বেয়ে জল ঢুকছে ঘর গুলিতে। ওই সব স্যাঁতস্যাঁতে ঘরে অনেক আবার ভাঙা জানলায় ছাতা লাগিয়ে জল আটকানোর ব্যবস্থা করেছেন। এক পুলিশ কর্মী জানান,মাঝে মধ্যে দাঁড়াশ, জলঢোরা ঘরে ঢুকছে। বৃষ্টির জলে আলমারি, খাট ভিজে নষ্ট হচ্ছে। কাউকে বলেও লাভ হচ্ছে না কোনও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

narayan dey alipurduar police housing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE