ময়নাগুড়িতে চা পাতা ফেলে সার্ক রোড অবরোধ ক্ষুদ্র চা চাষিদের। দীপঙ্কর ঘটকের তোলা ছবি।
পাতার দাম না মেলায় সার্ক রোড অবরোধ করলেন ক্ষুদ্র চা চাষিরা। বটলিফ কারখানার ম্যানেজারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন। রাস্তায় ছড়িয়ে দিলেন কাঁচা চা পাতা। শুক্রবার ময়নাগুড়ির ভুস্কারডাঙা এলাকায় বিকেল তিনটে থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা ওই আন্দোলন চলে। চা চাষিদের পথ অবরোধের জেরে ময়নাগুড়ি-চ্যাংরাবান্ধা সার্ক রোডে যানজটের কবলে পড়ে নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রী ও পথচারীদের।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, স্থানীয় বটলিফ কারখানার কর্তারা কেজি প্রতি কাঁচা পাতার দাম ৫ টাকার বেশি দিতে রাজি হচ্ছে না। অথচ কেজি প্রতি চা পাতা উত্পাদনে খরচ ১৩ টাকা। আন্দোলনকারীদের পক্ষে উত্তরবঙ্গ প্রান্তিক ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সভাপতি রঞ্জিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “স্থানীয় বটলিফ কারখানার চক্রান্তের শিকার হয়ে এলাকার দশটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রায় এক হাজার চা চাষি পথে বসতে চলেছে। পাতার দামের কোনও ঠিক নেই। নিরুপায় হয়ে পথে নামতে হয়েছে।” জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির দাবি, শুধুমাত্র ময়নাগুড়ির চা চাষিদের সমস্যা নয়। গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে একই পরিস্থিতি চলছে বলে তাদের দাবি। ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির জেলা সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “গত ১৫ বছরে এভাবে পাতার নাম কমেনি। দিনের কোন সময় কি দাম মিলবে কেউ বুঝতে পারছে না। এটা চলতে পারে না।”
এ দিন বিকাল তিনটে নাগাদ দুই শতাধিক চা চাষি সার্ক রোডে কাঁচা পাতা ফেলে দিয়ে পথ অবরোধ শুরু করেন। বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ওই ব্যস্ততম রাস্তা অবরোধের জেরে যানজটে নাকাল হতে হয় নিত্যজাত্রীদের। রাস্তার দু’পাশে প্রচুর ট্রাক ও বাস দাঁড়িয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে অবরোধ তুলে দিলে চাষিরা বটলিফ কারখানার ম্যানেজারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে পাঁচটা পর্যন্ত ওই বিক্ষোভ আন্দোলন চলে। কারখানার ম্যানেজার সুমিত ভৌমিক চাষিদের দাবি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি না হননি। তবে বটলিফ কারখানার মালিক সংগঠন নর্থ বেঙ্গল টি প্রডিউসার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অমন বৈদ পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, “পাতার গুণগত মান ঠিক না থাকলে কী করে পর্ষদ নির্ধারিত দাম দেওয়া সম্ভব? কারখানার ম্যানেজার তো অসহায়।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, আন্দোলনকারীরা চা চাষি নয়, চা পাতার ফড়ে।
আন্দোলনকারীরা বটলিফ কারখানার মালিক সংগঠনের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, চাষিরা বাধ্য হয়ে পথে নামতে বাধ্য হয়েছে। পুজোয় ষষ্ঠীর দিন বাগান বন্ধ হয় ওই দিনও পাতার দাম ১৪ টাকা কেজি মিলেছে। গত সোমবার বাগান খোলার পর থেকে পাতার দাম নামতে শুরু করে। চা চাষিদের দাবি, কয়েকদিনের মধ্যে চা পাতার গুণগত মান খারাপ হয়ে যেতে পারে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy