চালককে খুন করে গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত পাচারচক্রের আরও দুই চাঁইকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে বালুরঘাটের খিদিরপুর পালপাড়া এলাকা থেকে রামপ্রসাদ মণ্ডল এবং রামকৃষ্ণপল্লি থেকে দীপঙ্কর দাস নামে স্থানীয় দুই অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এর আগে বংশীহারি থেকে গ্রেফতার করা হয় জীবন রায় নামে অপর এক অভিযুক্তকে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বাংলাদেশের আরও এক পাণ্ডাকে শনাক্ত করল দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় মূল অভিযুক্তের নাম ইব্রাহিম খলিল আবির। বাংলাদেশের বাসিন্দা ইব্রাহিমকে পুলিশ সম্প্রতি অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার করায় বর্তমানে সে জেলবন্দি। শনিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে।
গত ২০ মে সন্ধ্যায় তপন থানার বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি ছোটগাড়ি ভাড়া করে অভিযুক্ত ওই চার জন মাঝ রাস্তায় চালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধ করে খুন করে গাড়ি নিয়ে পালিয়েছিল। তার আগে বালুরঘাটের জেলে বসেই গাড়ি চুরির পুরো ছক করা হয়েছিল বলে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে। গঙ্গারামপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ধৃত ওই দুই অভিযুক্তের সঙ্গে মাস দুয়েক আগে বালুরঘাট জেলে বন্দি ইব্রাহিম খলিল আবিরের পরিচয় হয়। ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। জেলেই তারা গাড়ি চুরির পরিকল্পনা করে। গাড়ি পাচার চক্রের আরও এক পান্ডা জীবন রায়কে পুলিশ আগেই গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ি হাইজ্যাকের পুরনো একটি মামলায় অভিযুক্ত জীবনের বাড়ি বংশীহারি এলাকায়। তাকে ধরে অন্যতম পান্ডা ইব্রাহিম খলিল আবিরের হদিশ মেলে। জামিনে মুক্ত হয়ে ওই দলটি জেল থেকে বেরিয়েই তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। ভাড়ার নামে গাড়ির চালককে খুন করে বিহারের কিষাণগঞ্জ জেলার ঠাকুরগঞ্জে গা ঢাকা দেয় অভিযুক্তরা। কিন্তু গাড়িটি বিক্রি করতে না পেরে তারা ঠাকুরগঞ্জ এলাকায় রাস্তার ধারে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। কিছু দিন বাদে অনুপ্রবেশের অভিযোগে হিলি থেকে গ্রেফতার হয়ে জেলে যায় ইব্রাহিম খলিল আবির।
বংশীহারি থানার আইসি দেবদত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গত ২১ মে সকালে বংশীহারি থানার কুশকারি এলাকায় রাস্তার ধার থেকে খুন হওয়া ওই ছোটগাড়ির চালকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।” তপনের বাসিন্দা নিহত যুবক নাম মিঠু মণ্ডল (২০)। ভাড়ার গাড়ির চালক ছিলেন। খুন ও গাড়ি ছিনতায়ের মামলা দায়ের করে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এসডিপিও স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বংশীহারির আইসি মামলাটির তদন্তে নেমে পুরনো ঘটনায় অভিযুক্ত স্থানীয় জীবন রায়ের উপর নজরদারি শুরু করে। তাকে গ্রেফতার করা হয়। সেইসূত্র ধরে ওই ঘটনায় জড়িত আরও তিন অভিযুক্তকে শনাক্ত করা হয়। শুক্রবার বালুরঘাট থেকে দুই অভিযুক্তকে ধরা হয়। এসডিপিও জানান, ধৃতরা জেরায় অপরাধ কবুল করেছে। ঘটনার দিন দলটি দীপঙ্করের কথা মতো তার দিদির বাড়ি তপনে গিয়ে ওঠে। সেখান থেকে সন্ধ্যায় তারা ছোটগাড়িটি ভাড়া নিয়ে রওনা হয়। পথে চালকের গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ধরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ। এতে ইব্রাহিম খলিল আবির মুখ্য ভূমিকা নেয় বলে অভিযোগ। রাতের অন্ধকারে কুশকারি এলাকায় চালকের মৃতদেহ ফেলে গাড়ি নিয়ে তারা কিষাণগঞ্জের দিকে পালিয়ে যায়। ইব্রাহিম অনুপ্রবেশের অভিযোগে ধরা পড়লেও বাকি ৩ জন বাইরেই ছিল। জেল থেকে ইব্রাহিমকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy